সাইফুল আরিফ জুয়েল, (মোহনগঞ্জ) নেত্রকোনা : নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে অতিরিক্ত ফি নেয়ার অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। তাদের অভিযোগ, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর থেকে কলেজের দেয়া বিজ্ঞপ্তির বাইরে ফরম ফি নামে একটি ক্যাটাগরিতে আলাদা রশিদে একশত টাকা নিচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই টাকা আবার কোন ব্যাংকে নয় কলেজেই জমা দিতে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার দুপুরে সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোহনগঞ্জ সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে ৫৪০ জন। ওই কলেজে ছাত্রদের বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির জন্য নেয়া হচ্ছে ২ হাজার টাকা, মানবিক বিভাগে১৯০০ টাকা, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১৯০০ টাকা। আর ছাত্রীদের বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির জন্য ১৭০০ টাকা, মানবিকে ১৬৬০ টাকা, আর ব্যবসায় শিক্ষায় ১৬৬০ টাকা। এসবের মধ্যে ভর্তি ফি সেইসাথে আইসিটি, লাইব্রেরি, ম্যাগাজিন, অভ্যান্তরীন ক্রিয়া, বহিঃক্রীয়াসহ নানান ফি রয়েছে।
এর বাইরে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আরো ১০০ টাকা নেয়া হচ্ছে। আলাদা একটি স্লিপে এই টাকা ফরম ফি বাবদ কলেজেই জমা দিতে হচ্ছে। তবে টাকা জমা দেওয়ার পরেও এসব স্লিপে কোন স্বাক্ষর দেখতে পাওয়া যায়নি।
এত সব ফি উল্লেখ করে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে এই বিজ্ঞপ্তির নিচে অধ্যক্ষের নাম-স্বাক্ষরের জায়গা থাকলেও তাতে অধ্যক্ষের স্বাক্ষর নেই।
ভর্তিচ্ছুক সোমাইয়া জানায়, আগে একশত টাকা কলেজে জমা দিয়েছি। পরে দেব ভর্তিসহ অন্যান্য ফি। টাকা জমা দেয়া হলেও তার ওই স্লিপে আদায়কারীর কোন স্বাক্ষর বা সীল নেই। অন্য শিক্ষার্থীরা জানায়, আসনের বিপরীতে ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থী বেশি হওয়ায় ফি নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে না অনেকেই। তবে বিষয়টি কষ্টকর বলেছে তারা।
এ বিষয়ে জানতে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল হোসেন চৌধুরীর মোবাইলে বার বার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
অধ্যক্ষের অবর্তমানে কলেজের ভর্তি কার্যক্রমের সার্বিক দেখভাল করছেন হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মো. ইমাম হাসান। তিনি জানান, ‘অধ্যক্ষ স্যার দুর্ঘটনায় পায়ে ব্যাথা পেয়েছেন। তাই আমি সব দেখভাল করছি।’ শিক্ষক ইমাম হাসান বলেন, শিক্ষার্থীদের কোন অতিরিক্ত ফি নেয়া হচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করছি যত কম নেয়া যায়। এক বছরের বেতনসহ যাবতীয় ফি একত্রে নেয়ার কারণে টাকার পরিমাণ বেশি হয়েছে। আর আলাদা স্লিপে একশত টাকা নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় অডিট আসে উপর থেকে তখন তাদেরকে আপ্যায়ন করতে এই টাকা ব্যয় হয়। তাছাড়া বিভিন্ন মসজিদ ও ওয়াজ মাহফিলে বিভিন্ন অনুদানও দিতে হয়। কলেজের তো কোন বাজেট নেই, তাই এই টাকা দিয়েই খরচ করতে হয়।
এর আগেও এই কলেজের কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইসিটি খাতায় স্বাক্ষর দেয়ার নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ ওঠে। পরে শিক্ষার্থীরা বিষয়টি লিখিতভাবে অধ্যক্ষকে জানাতে গেলে তাদের ম্যানেজ করে টাকা ফেরত দেয়া হয়। এ ছাড়াও বছরের পর বছর ক্লাস না করিয়ে বেতন নেয়ার অভিযোগ রয়েছে একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে।