কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন : গত দুই দিনে অতিবৃষ্টি ও সীমান্তবর্তী মেঘালয় নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় সোমেশ্বরী নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিপদসীমার কিছু নিচে প্রবাহিত হলেও উজানের পাহাড়ি ঢলের গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের কালিকাবর বেরীবাঁধ ভাঙ্গার শঙ্কায় ভূগছেন তীরবর্তী পরিবারের লোকজন। এরই মধ্যে বাঁধটির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এ নিয়ে বাঁধের নিকটবর্তী প্রায় দুইশতাধিক ঘর-বাড়ি নদী গর্ভে বিলীনের শঙ্কায় ভুগছেন এখানকার বাসিন্দারা।
শনিবার (২৭ জুন) বিকেলে ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। জানা যায়, দুপুর ২টার দিকে ওই বেরিবাঁধের ফাটল ধরা জায়গাটি ও আশপাশের ঝুঁকিপূর্ণ বাড়ি-ঘর পরিদর্শন করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। ওই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
দেখা যায়, গাঁওকান্দিয়ার কালিকাবর বেধিবাঁধ এলাকার মকিম আলি সরকারের বাড়ি থেকে দক্ষিণ দিকে ইব্রাহীম মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত বেরিবাঁধের প্রায় ১১ শত ফুট সংলগ্ন গড়ে উঠা ঘর-বাড়ির বাসিন্দারা চরম ঝুঁকিতে দিনাতিপাত করছে। ওই বেরিবাঁধের মকিম সরকারের বাড়ির পাশে পাহাড়ি ঢলের প্রবাহিত স্রোত নদীর তীরের নিচ দিয়ে গর্ত সৃষ্টি করছে। পাড়ের উপর থেকে বড় বড় মাটির চাকা দপদপ করে নদীতে ঢলে পড়ছে। এতে করে আশপাশের বসতিদের শঙ্কা আর উৎকণ্ঠায় সময় পার করছেন বলে জানায় স্থানীয়রা।
ওই বেরিবাঁধটি ভেঙে গেলে এলাকার বেশ ক’টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দু’টি হাফিজিয়া মদরাসা, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, গাঁওকান্দিয়া বাজার, ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয় সহ অসংখ্য ঘর-বাড়ির ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। অনেক অসহায় পরিবার ভিটে হারানোর তাড়নায় রয়েছেন।
গাঁওকান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন জানান, সোমেশ্বরী নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেই আমার ইউনিয়নের প্রায় ৫-৭ কি.মি নদীর তীরে এ বেধিবাঁধের রাস্তাটি ভাঙনের কবলে পড়ে। প্রায় দুইশতাধিক ঘর-বাড়ির লোকজন চরম ঝুঁকিতে দিনানিপাত করছে যেকোন সময় নদীতে এসব ঘর-বাড়ি ধসে যেতে পারে। বেরিবাঁধ রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তার নিজ উদ্যোগে একশত বাঁশ কেটে বাঁধের পাশে জমাট করেছেন। এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে প্রাথমিক বাঁধ রক্ষায় কাজ করছেন বলে জানান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা রহিত মিয়া, জাহাঙ্গীর সহ অসংখ্য ভূক্তভোগী জানান, কালিকাবর বেরিবাঁধটি রক্ষায় অনেকবার স্থানীয় সাংসদ পরিদর্শন করেছেন। সবাই কথা দেয় কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। এ বাঁধটি ভেঙে গেলে এখানকার বাসিন্দাদের অনেকেই ঘরহারা হবে। তারা বেরিবাঁধটি রক্ষায় সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন এমনটাই আশা করছেন।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড নেত্রকোনার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রহিদুল হোসেন খান জানান, কালিকাবর বেরিবাঁধটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ নিয়ে ইতিমধ্যে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠিয়েছি। অচিরেই পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছেন তিনি।