কে. এম .সাখাওয়াত হোসেন : বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় মোবাইলে গেইম খেলতে দিয়ে প্রলুব্ধ করে ও ছোট ছোট ছেলেদের নিয়ে সারাদিন এখানে সেখানে ঘুরে বেড়াতো ‘রনি’। সে পূর্ব থেকে বাচ্চাদের বাড়ির তথ্য ও মোবাইল নাম্বার আগে থেকে সংগ্রহে রাখতো। এভাবে সে বাচ্চাদের অপহরণ করে পরিবারের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবী করতো।
সেই সাথে থানা পুলিশ না করার ভয় দেখাতো শিশুদের পরিবারকে। তার কথা না মানলে শিশুকে মেরে ফেলবে বলেও হুমকী প্রদান করতো সে। দরকষাকষির পর বিকাশ বা রকেটে মাধ্যমে কিছু টাকা দিলে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বনে গাড়িতে উঠিয়ে বাচ্চাদের পাঠিয়েও দিতো। দীর্ঘদিন ধরে ‘রনি’ শিশু অপহরণের কাজ একাই করে আসতেছিল।
শনিবার (২৭ জুন) বিকেলে পূর্বময় ডটকমকে এমন অপহরণ ঘটনার বর্ণনা দিলেন নেত্রকোনা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি মো. শাহ্ নুর এ আলম।
এ সময় তিনি জানান, চলতি মাসে নেত্রকোনা মডেল থানায় ১৮ ও ২৪ তারিখ দু’টি পৃথক জিডি হয়। ২৪ তারিখের জিডির সূত্র ধরে গত শুক্রবার (২৬ জুন) রাতে তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে অপহরণকারী আব্দুল্লাহ খান রনিকে (২৫) ময়মনসিংহ জেলা শহরের গুদারাঘাট এলাকা থেকে আটক করে ডিবি। আটককৃত যুবক নেত্রকোনা শহরের কুড়পাড় এলাকার মৃত রিয়াজ উদ্দিন খানের ছেলে।
শিশুদের মাদরাসায় বাবুর্চির কাজ করার সুবাদে শিশুদেরকে সহজে বশে আনার মনস্তাত্তি¡ক বিষয়ে সার্বিক ধারণা রয়েছে এই অপহরণকারীর।
অপহরণকারীর যুবকের বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৮ ধারায় শিশুর নেত্রকোনা শহরের বনোয়াপাড়া এলাকায় অপহৃত শিশু ওমর ফারুকের ভাই আলমগীর বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে শনিবার বিকালে অপহরণকারীকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। সেখানে অপহারণকারী সিআরপিসি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় বলে জানান ডিবির ওসি।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ গত ২৪ জুনের জিডি করেন নেত্রকোনার সদর উপজেলার বনোয়াপাড়া এলাকার মজনু মিয়ার ছেলে আলমগীর। এতে উল্লেখ করেন সকাল আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে তাদের বাড়ির সামনে থেকে তার ১২ বছর বয়সী ছোট ভাই ওমর ফারুক নিখোঁজ হয়।
পরবর্তীতে বিকাশে বা রকেটে টাকা পাঠাতে তাদের বাড়ির মোবাইলে ফোন আসে। প্রথমে দুই লাখ টাকা দাবী করলেও পরবর্তীতে নয় হাজার টাকা পাঠাতেই শিশুটিকে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকা-নেত্রকোনা সড়কের বাসে উঠিয়ে দেয়া হয়। পরে শিশুর বিবরন অনুযায়ী অপহরণকারীকে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ময়মনসিংহ থেকে আটক করে ডিবি।