স্টাফরিপোর্টারঃ
বিশ্বজুড়ে করোনার যুদ্ধে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন মানুষ। বাংলাদেশে এর প্রভাব শুরু হয়েছে গত ৮ মার্চ থেকে। করোনা প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকার স্কুলকলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচল বন্ধসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা করে। ফলে বেশিরভাগ মানুষ ঘরবন্দী হয়ে পড়ে। দীর্ঘ সময় ধরে প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ থাকার ফলে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ে মধ্যবিত্ত ও নিন্ম মধ্যবিত্তের মানুষজন। তারা কারো কাছে হাত পাততে পারে না। ফলে প্রাণ বাঁচানোর গোপন কষ্টে এই মানুষ গুলো ভীষণ মানবেতর দিন কাটায়! সেই মানুষগুলোর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এপেক্স ক্লাব অব ব্রহ্মপুত্র।
সে এক অন্যরকম অনুভুতি। আজ ডিউটি করলাম খাদ্য সহায়তা বাড়ী বাড়ী পৌছে দিতে। এপেক্স ক্লাব অব ব্রহ্মপুত্রের উদ্যোগে সংগ্রহ করা খাদ্য সহায়তা শুধু মাত্র দরিদ্র মানুষের জন্য তা কিন্তু নয়। যারা কোনদিন কারো কাছে সাহায্য প্রত্যাশা করেনি বা করেও না। মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার হঠাৎ করোনা বিপর্যয়ে একটু বিপদে পরে গেছেন।
এই সংকটময় মুহুর্তে কাউকে কিছু বলতেও পারছেন না আবার সইতেও পারছেন না এমন কিছু পরিবারের তালিকা আমরা সংগ্রহ করেছি তালিকায় থাকা ঠিকানায় আজ কিছু আমার দায়িত্বে পৌছে দিয়েছি। এ এক অন্যরকম ভালো লাগা। ধন্যবাদ সভাপতি এপেঃআলী ইউছুফ ও চাচার পুত্রগন মাহিন, তুহিন, রুহিন সহ চাচি। পুরা বাসা গোদাম ঘর চাচি স্যালুট।ধন্যবাদ যারা অনুদান দিয়েছেন, গাড়ির জন্য আসলাম ভাই ও ড্রাইভার। বিশেষ ধন্যবাদ প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এপেঃ এ,এফ,এম এনামুল হক মামুন ভাই।
(উল্লেখ্য যে আমরা যাদের সহায়তা করেছি তাঁদের কোন ছবি তুলিনি)
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে নিজের অনুভূতির কথা এভাবেই প্রকাশ করলেন এপেক্সিয়ান ফজলুল করিম রেজা।
করোনা প্রতিরোধে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবং প্রায় একরকম লকডাউন অবস্থা হয়ে যাওয়ায় এই লম্বা সময় ধরে কর্মহীন হয়ে অনেক পরিবারই অর্থ কষ্টে পড়ে গেছে। তাঁরা প্রকাশ্যে কাউকে কিছু বলতেও পারেনা।
এপেক্স ক্লাব অব ব্রহ্মপুত্র ঠিক এই মানুষ গুলোকে খুঁজে বের করে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে। খুব গোপনে তাঁদের কষ্টের সহভাগি হচ্ছে। তবে ব্যতিক্রমীভাবে সহযোগিতা প্রদান ও গ্রহণে কারো কোন ছবি তোলা হচ্ছে না কিংবা সামাজিক ভাবে প্রচারও করা হচ্ছে না। পরিস্থিতির কারণে হয়ত সংকটে পড়েছেন আবার পরিস্থিতি কেটে গেলে তাঁরা আবার স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে আসবেন বলে বিশ্বাস করেন এপেক্সিয়ানগণ।
সেসব মানুষের বাসায় বাসায় গিয়ে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে এপেক্সিয়ানগণ। এমনকি যারা সহায়তা পাচ্ছেন তাঁরাও জানেন না সহযোগিতা কারা করছে,কিভাবে করছে। যখনই সহায়তা পাচ্ছেন তখনই অবাক হওয়ার পাশাপাশি তাঁদের চোখের কোণে জল চিকচিক করে উঠে। ঠিক এমন একটি অনুভূতির কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে তুলে ধরেছেন এপেক্স ক্লাব অব ব্রহ্মপুত্র এর সভাপতি কবি আলী ইউসুফ। তিনি নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেন এভাবে—
কী এক অনুভুতি!
এপেক্স ক্লাব অব ব্রহ্মপুত্রের উদ্যোগে সংগ্রহ করা খাদ্য সহায়তা শুধু মাত্র যে দরিদ্র মানুষের পাশে দাড়িয়েছি তা কিন্তু নয়।
যারা কোনদিন কারো কাছে সাহায্য প্রত্যাশা করেনি বা করেও না। মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার হঠাৎ করোনা বিপর্জয়ে একটু বিপদে পরে গেছেন।
এই সংকটময় মুহুর্তে কাউকে কিছু বলতেও পারছেন না আবার সইতেও পারছেন না এমন কিছু পরিবারের তালিকা আমরা সংগ্রহ করেছি।
তালিকায় থাকা ঠিকানায় যখন আমাদের সহযোদ্ধারা ঐ বাড়ির কড়া নেড়ে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে হাজির তখন তারা জানতে চেয়েছেন কারা এসব পাঠালো?
আমাদের সহযোদ্ধা বন্ধু বলেছেন “আপনার কোন এক সুহৃদ পাঠিয়েছেন, প্লিজ এটা রাখুন –
পরিবারের মানুষ গুলো তখন অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
আমাদের ভলান্টিয়াররা তখন তাঁদের মুখে হাসির বদলে চোখের কোণে জমে উঠা বিন্দু বিন্দু জল দেখে এসেছে।
আমরা যাদের খাদ্য সহায়তা দিয়েছি তাঁদের অনেককেই আমার চিনি না। আমাদের উদ্যোগের কথা জেনে তাদের প্রতিবেশি বা সুহৃদরা গোপনে তাদের নামটি আমাদের কাছে পাঠিয়েছিলেন।
গোপনে এই সহযোগিতা সত্যিই অভাবনীয়। বর্তমানে যেখানে একজনকে সহযোগিতা করতে গেলে ১৫-২০ জনের মুখ সেলফিতে দেখা যায়। সেখানে ছবি ছাড়া গোপনে সহযোগিতা এটি শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে অন্যদের জন্য। অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে নতুন প্রজন্মের কাছে।
উল্লেখ্য, সেবা সৌহার্দ্য ও সুনাগরিকত্ব নিয়ে কাজ করে আন্তর্জাতিক এই সেবা সংগঠন।