নেত্রকোনা পূর্বধলা প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোনা পূর্বধলা উপজেলার মেঘশিমুল গ্রামের মোঃ রাজিবুল ইসলাম রাজীবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড করার অভিযোগ উঠেছে। একাধিকবার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন পূর্বধলা উপজেলার সচেতন মহলের রহমত আলী,নূরে আলমসহ অনেকেই।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রাজিবুল ইসলাম রাজীব কোন উপার্জনের কাজ না করেও বিভিন্ন সমাজসেবার নাম করে জনপ্রতিনিধি ,রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং সরকারী বেসরকারি কর্মকর্তাকে ব্ল্যাকমেলই করে টাকা আদায় করে।
এছাড়াও পূর্বধলা উপজেলার সচেতন মহল মনে করেন, সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বর্তমান সরকারকে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে ফেলাই তার মূল উদ্দেশ্য। সে বিএনপি জামাতের বা কোন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। বর্তমানে উপজেলা বিএনপির সভাপতি বাবুল আলম তালুকদার এর সাথে আত্মীয়তা রয়েছে।
এলাকাবাসী আরো বলেন, তার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় সে বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে ত্রাণ দিবে বলে টাকা পয়সা চেয়ে থাকে। এছাড়া সমাজে গরিব ও অসহায় মানুষদের ত্রাণ বা বিভিন্ন সহযোগিতা করার নাম করে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকে।
এদিকে রাজীবের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল ইসলাম জানান, রাজিব আমার চতুর্থ সন্তান সে গতবছর ৫০০০০ টাকা বৃত্তি পেয়েছিল। সেই টাকা দিয়ে গরিব অসহায়দের মাঝে বিভিন্ন সময় সে ত্রাণ দিয়েছে এবং আর্থিক সহযোগিতা করেছে । তবে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ হয়েছে বিষয়টি গতকালকে শুনেছি। তার সাথে এ বিষয়টি নিয়ে এখনো কথা বলা হয়নি তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।
অভিযোগের ব্যাপারে অভিযুক্ত রাজিবুল ইসলাম রাজীবের সাথে কথা বললে তিনি অস্বীকার করে বলেন, এলাকার গরিব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াই এবং সাধ্য অনুযায়ী তাদের সহযোগিতা করি। বিভিন্ন সময় অনিয়মের প্রতিবাদ করি বলে আমার উপর এমন মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ উঠেছে ।
দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব এতে যদি আমার কোন কিছু হয় তাতে আমার দুঃখ নেই।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, সে বিভিন্ন সহায়তার কথা বলে টাকা চাইলে হাজার পাঁচশো করে দিতাম। পরে দিনদিন তার চাহিদা বেড়ে যায় । দুই মাস আগে সে মসজিদের ব্যাটারির কথা বলে ব্যাটারি নেয় কিন্তু সেই ব্যাটারি সে নিজে ব্যবহার করে মসজিদে দেয়নি। এটা জানার পর থেকে আমি তাকে আর টাকা বা কোন সহযোগিতা করিনি। আর সহযোগিতা না করায় সে আমাকে বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি দিয়েছে। এখন পর্যন্ত রাজিবুল আমাকে বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেইল করে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন,রাজিবুল নামে ঔ যুবক কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পূর্বধলা উপজেলার সকল কর্মকর্তা দূর্নীতিবাজ উল্লেখ করে ফেইসবুকে পোষ্ট করেছিল। পরে উপজেলার আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে তার বিরুদ্ধে রেজুলেশন করা হয়েছিল ব্যবস্হা নেয়ার জন্য। এদিন আমি নিজেও রাজিবুলের এহেন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম।
পুর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স জানান,রাজিবুল নামে যুবকের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ জেলা প্রশাসন থেকে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা পেলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিস বলেন, পূর্বধলার রাজিবুলের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।