মোঃ নজরুল ইসলামঃ নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দিবাগত ভোররাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বজ্রসহ ঝড়োহাওয়া ও শিলাবৃষ্টি হয়। ভোররাতে সেহরির সময় প্রায় ১০ মিনিট ধরে চলা শিলাবৃষ্টি ও প্রায় আধা ঘন্টা ধরে বজ্রপাতসহ ঝড়ো হাওয়ায় ঘর বাড়ি গাছপালা ভেঙ্গে পড়েছে। কোথাও কোথাও শিলার স্তূপ জমে সাদা হয়ে যায়।
ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপণে কৃষি বিভাগ মাঠে কাজ করছে। পূর্বধলা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার খলিশাউড় ও নারান্দিয়া এবং গোহালাকান্দা ইউনিয়ন সহ কিছু এলাকায় ব্যাপক ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া উপজেলার ৮ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় শুধু বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে।
পূর্বধলা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম সুজন ঘটনা স্থল পরিদর্শন করে জানান, খলিশাউড় ও নারান্দিয়া এবং গোহালাকান্দা ইউনিয়নের প্রতাপপুর, গরুয়াকান্দা, ডুপিরকান্দা, লক্ষ্মীপুর, হাপানিয়া, ফাজিলপুর, মাসকান্দা, ফাইলাটি, মৌলামসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে এবং প্রচুর শিলাবৃষ্টি হয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে ঘরের চালা ফুটো হয়ে গেছে। ধানসহ ঘরবাড়ি, গাছপালা, রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধান চাষীরা। কৃষকদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠাই মুসকিল হয়ে পড়বে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সকলকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি জানান, সঠিক ভাবে তদারকির মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয় করে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে ক্ষতিগ্রস্ত দিশেহারা কৃষক কিছুটা হলে স্বস্তি ফিরে পাবে। এসময় তিনি ঝড়ে ভেঙ্গে পড়া হাঁপানিয়া বায়তুল মামুর জামে মসজিদে নগদ ৫০০০ টাকা অনুদান ও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত একই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মফিজ উদ্দিন এর বাড়ি ঘর পরিদর্শন করেন। প্রতাপপুর গ্রামের কৃষক আশরাফ উদ্দিন খান বলেন, হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে ধান ও সবজি খেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে সদ্য ধানের শীষ, শীষের ফুল ঝরে পড়েছে। সদ্য গুটি আসা আম ও লিচুরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ঝড়বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ঘরবাড়ি, গাছপালা ভেঙে ও উপড়ে যায়।পূর্বধলা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলার খলিশাউড় ও নারান্দিয়া এবং গোহালাকান্দা ইউনিয়ন সহ কিছু এলাকায় ঝড় সহ ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়েছে। ‘শিলাবৃষ্টিতে আগাম জাতের সদ্য বের হওয়া ধানের শীষ ও সবজি খেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপণে মাঠে কাজ করছি। সর্ব মোট কয়ক্ষতি নিরূপণ করে রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে। প্রায় ৫ হাজার কৃষকের ৭ হাজার হেক্টর ধানের জমির আংশিক এবং কিছু আগাম জাতের সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়ে গেছে