আটপাড়ায় সেচ লাইনে বাধা, আবাদ শঙ্কায় ৬০ একর জমি

Date:

Share post:

সাইফুল আরিফ জুয়েল : নেত্রকোনার আটপাড়ায় কৃষি জমিতে চাষাবাদের জন্য বিদ্যুতের মোটর বসানোর সেচ লাইন টানানোতে বাধা দেওয়ায় ৬০ একর জমি অনাবাদি থাকার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

প্রতিবেশী কয়েকজন ব্যক্তি তাদের এ সেচ লাইনে অংশীদার করার দাবিতে এ সংযোগ লাইনে বাধা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের বাধায় সেচের মোটর বসাতে না পারায় ইরি মৌসুমে চাষাবাদ করতে পারছেন না কৃষক।

এ ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে ভুক্তভোগী উপজেলার সুখারী ইউনিয়নের কুবারদোপ গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছেন।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সুখারী ইউনিয়নের কুবারদোপ গ্রামের পাশে থাকা মগড়া নদীতে সেচ মোটর বসাতে কয়েকমাস আগে পল্লীবিদ্যুত সমিতি ও নির্বাহী অফিসে আবেদন করেন কৃষক আনোয়ার হোসেন। যথাযথ শর্ত পূরণ করায় কয়েক লাখ টাকা খরচে সেচ মোটর বসানোর অনুমতি পান তিনি। কিন্তু সম্প্রতি বিদ্যুতের খুঁটি বসাতে গেলে গ্রামের কয়েকজন বাধা দেয়। তাদেরও এই সেচ লাইনে অংশীদার করার জন্য দাবি জানায়। যদিও ওই মাঠে তাদের কোন জমি নাই।

ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেন জানায়, নদীতে ডিজেল মেশিন বাসিয়ে আগে আমি ওই মাঠে পানি দিয়েছি। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় এবার বিদ্যুতের মোটর বসানোর আবেদন করি। আমি বৈধভাবে কাগজপত্র করে সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ করে সেচ মোটর বসানোর অনুমতি নিয়েছি। এখন বিদ্যুতের খুঁটি বসাতে দিচ্ছে না স্থানীয় কয়েকজন। তাদের সাথে আব্দুল হাই নামে স্থানী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাও রয়েছেন। তিনিও এতে অংশীদার হওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেও কোন ফল পাইনি। তিনিও তাদের পক্ষ নিয়েছেন। তারা আমার সেচ লাইনে অংশ দাবি না করে নতুন করে আরকেটার অনুমতি নিয়ে অসুক এতে আমার কোন আপত্তি নাই।

কুবারদোপ গ্রামের আরজু মিয়া বলেন, আনোয়ার সেচ লাইনি টানাতে বাধা দিচ্ছে এলাকার কয়েকজন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইকে তারা সামনে ঢাল হিসেবে দাড় করিয়েছেন। এই মাঠে আব্দুল হাইয়ের এক শতাংশ জমিও নাই। ভাগ নেওয়ার জন্য অকারণে আনোয়ারের ভেধ সেচ লাইন বসাতে তারা বাধা দিচ্ছেন। প্রশাসনের উচিত আনোয়ারকে সহায়তা করা।

বাধা প্রদানকারী একই গ্রামের এরশাদ মিয়া বলেন, আমরা আগে সবাই মিলে এই মাঠে ডিজেল চালিত মেশিনে পানি সেচ দিয়ে চাষাবাদ করেছি। এলাকার সবাই আমাদের মেশিন থেকে পানি নিয়ে চাষাবাদ করেছে। এখন আমাদের না জানিয়ে আনোয়ার একা গিয়ে বিদ্যুতের সেচ লাইনের অনুমোদন নিয়ে এসেছে। আমাদের অংশীদার না করা হলে এই চালাতে দেওয়া হবে না।

বুধবার এ বিষয়ে আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাকিল শাকিল আহমেদ বলেন, দুই পক্ষের ঝামেলায় জমি যেন অনাবাদি না থাকে সেকারণে দুই পক্ষকে গতকাল বিকেলে ডেকে সমঝোতা করে দেওয়া হয়েছে। উভয় পক্ষের লোকজন সমন্বয়ে সেচ মোটর পরিচালনায় ২২ সদস্যর একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। এতে তারা রাজি হয়েছেন। আশা করছি আর কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

spot_img

Related articles

মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ যুবকের মৃতদেহ ভাসল ২ দিন পর

নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সোমেশ্বরী নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ আদিবাসী যুবক রুয়েল রিছিল (২৮) এর মৃতদেহ...

নেত্রকোনা সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ঢাকায় গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনা সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মারুফ হাসান খান অভ্রকে (৫৫) ঢাকা (রাজধানী) থেকে গ্রেফতার করা...

দুর্গাপুরে পানিতে ডুবে এক বৃদ্ধের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় পানিতে ডুবে রুসমত খান (৬০) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। গত সোমবার (০৭...

শহীদ আবরার ফাহাদ স্মরণে পূর্বধলায় মৌন মিছিল

মোঃ জুবায়েদ হোসেন বাচ্চুঃ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে নির্যাতনে নিহত শহীদ আবরার ফাহাদের ৫ম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে মিছিল ও স্মরণ...