শাপলা আক্তারঃ নিকটবর্তী স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে যাব,সহপাঠী ও পরিচিতদের যেতে উৎসাহ করবো। কৈশোরকালীন কিশোর কিশোরীদের ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, দূরে রাখবে রোগবালাই আনবে জীবনে সুস্থ্যতাএই প্রত্যয় নিয়ে ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলার ১০ টি কৈশোর বান্ধব স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে ১৩ থেকে ১৭ নভেম্বর ৫ দিনব্যাপী চলছে কৈশোর বান্ধব স্বাস্থ্য সেবা ও প্রচার সপ্তাহ-২০২২।
USAID এবং পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনাল এর সহযোগিতায় সুখীজীবন প্রকল্পের অধীনে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরাধীন ময়মনসিংহ সদর, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র এর কৈশোর-বান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ১৭ নভেম্বর ২০২২ ইং তারিখে ‘কৈশোর-বান্ধব স্বাস্থ্য সেবা সপ্তাহ’ পালন করেছে সিরাক-বাংলাদেশ কর্তৃক নিযুক্ত ভলান্টিয়ার পিয়ার লিডাররা (ভিপিএল)।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ১০.০০ ঘটিকায় কৈশোর-বান্ধব সেবা কেন্দ্রটি ব্যানার এবং ফেস্টুন দিয়ে সাজানোর মাধ্যমে উক্ত সপ্তাহের সূচনা এবং এর পর আলোচনা সভা ও একটি র্যালির আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভা ও র্যালি আয়োজনে সহায়তা করেছেন ভিপিএলদের সহযোগী ভলান্টিয়ার পিয়ার টীম।
আলোচনা সভায় কৈশোর বান্ধব স্বাস্থ্য সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে বলেন,ডাঃ ফয়সাল সিদ্দিক ( এম ও এম সি এইচ.এফ পি),১০ থেকে ১৯ বছর এই সময়টা প্রতিটা কিশোর ও কিশোরীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টা কিশোর কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালীন সময়। বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ে প্রতিটা কিশোর ও কিশোরীর শারীরিক, মানসিক বিভিন্ন পরিবর্তন হয়।এই পরিবর্তন গুলো প্রতিটা কিশোর ও কিশোরীর জন্য স্বাভাবিক। কিশোরীদের ১০ বছর থেকেই তাদের শারীরিক একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হলো পিরিয়ড। ঠিক তেমনি কিশোরদের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হলো স্বপ্নদোষ।অনেক সময় অনেক কিশোর ও কিশোরীরা এই পরিবর্তন গুলো কে দেখে ভয় পেয়ে যায়, তাদের ভয় পাওয়ার পিছনে মুল কারণ হলো তারা বয়ঃসন্ধিকালীন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন গুলো সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানে না যার জন্য তাদের ভয়ভীতি হয়।তাই সকল কিশোর কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালীন সকল শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে হবে এবং বয়ঃসন্ধিতে তাদের নিজেদের শরীর ও মনে যত্ন নিতে হবে।ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছনতা,সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্য খেতে হবে।মানসিক ভাবে নিজেকে উৎফুল্ল রাখতে হবে। পরিবারের সাথে বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। যে কোনো সমস্যায় পরিবারের সাথে খোলামেলা আলোচনা করতে হবে। এবং নিকটবর্তী কৈশোর বান্ধব স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে গিয়ে সকল ধরনের সেবা নেওয়ার জন্য কিশোর কিশোরীদের আসতে হবে।এছাড়া কিশোর কিশোরীরা বাড়িতে বসেও তাদের প্রয়োজনীয় সেবা সমূহ পেতে পারে ১৬৭৬৭ নাম্বারে।
আলোচনা সভায় বিভিন্ন কিশোর ও কিশোরীরা তাদের পরিবর্তন গুলো নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন।
আলোচনা সভা শেষে র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।উক্ত র্যালিতে ও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সদর ময়মনসিংহ, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র মেডিকেল অফিসার এম.সি.এইচ.এফ পি ডাঃফয়সাল সিদ্দিকী, পাটগুদাম উচ্চ বিদ্যালয় এর শিক্ষক হাবিবুর রহমান, সোমা রানী বর্মন ( এফ.ডব্লিউ.ভি ),মোছাঃ ফেরদৌসী আক্তার(এফ. ডব্লিউ.ভি),
শামীমা আক্তার(এফ.ডব্লিউ.ভি),প্রোগ্রাম এসোসিয়েট সিরাক বাংলাদেশ-রিয়াদ হোসেন, ভলান্টিয়ার পিয়ার লিডার শাপলা আক্তার, রবিন মিয়া সহ র্যালিতে স্থানীয় পাটগুদাম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে আগত ছাত্র,ছাত্রী, কিশোর-কিশোরী ও তরুণরা অংশগ্রহণ করেন।
কৈশোর-বান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে
কিশোর-কিশোরীদের প্রদানকৃত শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা সংক্রান্ত সেবা সমূহ, পরিবার পরিকল্পনা, বাল্য বিয়ে রোধ এবং প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা সংক্রান্ত বার্তা প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে উক্ত সেবাকেন্দ্র ও চারপাশের এলাকায় মাইকিং এর মাধ্যমে কৈশোর-বান্ধব স্বাস্থ্য সেবা সপ্তাহ উদযাপনের প্রচারণা করা হয়।
কৈশোরকালীন যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে আর সংকোচ নয়।১০-১৯ বছর বয়সীদের সেবাগ্রহণে আগ্রহী করে তোলা এবং পরিবার, তরুণ ও সেবা প্রদানকারীদের মধ্যে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে কৈশোর-বান্ধব সেবার মান উন্নয়ন করার লক্ষ্যে পালিত হচ্ছে কৈশোর-বান্ধব স্বাস্থ্য সেবা সপ্তাহ ২০২২।