কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন : সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় ছায়ার হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় নতুন করে শঙ্কায় নেত্রকোনা খালিয়াজুরী উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চার এলাকার কৃষকেরা। ওই ইউনিয়নের একাংশ ছায়ার হাওরের সংলগ্ন এলাকাগুলো হলো শ্যামপুর, নাজিরপুর, যাদবপুর ও মুরাদপুর। তবে জেলা কৃষিসম্প্রসারণ কার্যলয় সূত্রে জানা গেছে ওই এলাকার ৯০ ভাগ ধান কর্তন করা হয়ে গেছে।
কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. শামীম মড়ল বলেন, সুনামগঞ্জের ছায়ার হাওরের বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বিকেলে আমার ইউনিয়নের ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এই দুই ওয়ার্ডের যাদবপুর, শ্যামপুর, নাজিরপুর ও মুরাদপুর গ্রামের ২০ ভাগের মতো ধান কর্তন বাকি আছে। রবিবার (২৪ এপ্রিল) দিন ও রাতে ১০ ভাগ ধান কাটা সম্ভব হবে। সোমবার সকালের মধ্যে ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ডুবে গেলে ওইসব এলাকার কৃষকের ১০ শতাংশ ধান ক্ষতিগ্রস্থ হবার সম্ভাবনার কথা জানান তিনি।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন কৃষ্ণপুর এলাকা থেকে জানান, ছায়ার হাওরে খালিয়াজুরী অংশে বোরো আবাদে জমির পরিমাণ দুই হাজার ৫১৩ হেক্টর। উপজেলার মধ্যে সবার আগেই এখানে ধান বপন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৯০ ভাগ ধান অর্থাৎ দুই হাজার ২৬৫ হেক্টরের কর্তন করতে পেরেছেন কৃষকেরা। এখানকার স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি ছায়ার হাওরের যে অংশে বাঁধ ভেঙেছে সেখান থেকে এই এলাকায় পানি আসতে দুদিনের মতো সময় লাগে। এখানকার কৃষকেরা গণহারে ধান কাটছে। তাদের (কৃষকদের) ভাষ্য মতে আজ (রবিবার) ও সোমবার দুদিনে মধ্যে বাকি অংশের ধান কর্তন করা সম্ভব হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এমএম মোবারক আলী বলেন, খালিয়াজুরীর কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে ৯০ ভাগ জমির ধান কর্তন হয়েছে। ওখানে পানি ঢুকতে দুদিন লাগবে ও এরইমধ্যে সম্পূর্ণ ধান কাটার সম্ভবনার কথা জানান।
তিনি আরো বলেন, খালিয়াজুুরিসহ জেলায় অন্যান্য হাওর এলকায় কর্তনের হার ৮৫ শতাংশ। সর্বোপরি জেলায় হাওর ও উঁচু এলাকা মিলিয়ে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ বোরো আবাদ কর্তন হয়েছে।
নেত্রকোনা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত জানান, কৃষ্ণপুর বাজারেই আছি। বাজারের লোকজন জানায় ছায়ার হাওরে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ থেকে এখানে পানি আসতে দুদিন লাগবে। তবে নেত্রকোনায় কোন বাঁধ এখনো ভাঙেনি। ছায়ার হাওরের ক্ষতিগ্রস্থ স্থান সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যে পড়েছে। খালিয়াজুরীর ধুন নদীর পানি কমতে কমতে রবিবার সন্ধ্যার দিকে বিপদসীমার ১৬ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানান তিনি।