মো. সাকের খান, মদন (নেত্রকোনা) : নির্বাচনে হেরে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর লোকজন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার হেলাল উদ্দিন তালুকদারের ওপর হামলা করেছেন। হামলায় দু-পক্ষের ৯ জন আহত হয়েছে। এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হওয়ায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। শুক্রবার সকালে নেত্রকোনার মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের ধুবাওয়ালা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
হামলায় জড়িত থাকায় মশিউর (৩৫) নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ। মশিউর ধুবাওয়ালা গ্রামের মৃত আক্তার হোসেন বাবলুর ছেলে। হামলায় আহত আশিক (৪০) ও মনোয়ার (৩০) এর অবস্থা আশঙ্কা জনক থাকায় উন্নত চিকিসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আহত আলাল উদ্দিন (৬৫), আব্দুল মান্নান(৫৫), আনার মিয়া (৪০), রিপুল (৩০), শামীম (৩০) আসাব উদ্দিন (৫০), মাহবুব আলম (৩০) কে মদন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মদন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ পদত্যাগ করে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তিয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। ওই ইউনিয়নের নৌকার মনোনীত প্রার্থী হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান। তোফায়েল এর নিজ বাড়ি ধুবাওয়ালা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধো হেলাল উদ্দিন তালুকদার নৌকা প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা করায় দু-পক্ষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। গেলো ৫ জানুয়ারী তোফায়েল আহমেদ নৌকার প্রার্থীর কাছে পরাজিত হলে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
শুক্রবার সকালে মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিন তালুকদার বাড়ি থেকে বের হলে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী তোফায়েল তার লোকজন নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় তোফায়েল এর দুইজন ও হেলাল উদ্দিন তালুকদারে ৭ জন লোক আহত হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এ সময় মশিউর নামের একজন কে আটক করা হয়।
মদন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার হেলাল উদ্দিন তালুকদার বলেন, আমি শেখ হাসিনার মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছি। আমার গ্রামের তোফায়েল বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে পরাজিত হয়েছে। এই ক্ষোভে তার লোকজন নিয়ে আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলা থেকে আমাকে বাচাঁতে গিয়ে আমার ৭ জন লোক আহত হয়েছেন।
দুঃখ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, আমি তিয়শ্রী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযোদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করে ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণা অংশ নিয়ে হামলার স্বীকার হয়েছি। এটা খুবই দুঃখের বিষয়।
এ ব্যাপারে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী তোফায়েল আহমেদ জানান, আমার লোকজনের উপর হেলাল উদ্দিনের লোকজন হামলা করেছেন। পরে গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়ে তাদের লোকজনকে মারপিট করে।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, এ ঘটনায় দু-পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। মশিউর নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।