নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের বাড়বাড়ন্তে সারা বিশ্বে চলা শঙ্কিত। এর মাঝে দেশে করোনার সংক্রমণ এখন ঊর্ধ্বমুখী। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে রোগী ৪৮ শতাংশ ও মৃত্যু ৪১ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে এ মাসের শেষ থেকে আগামী মধ্য ফেব্রুয়ারির মধ্যে করোনা সংক্রমণ ব্যাপক হারে বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনো পর্যন্ত দেশে ডেল্টা ধরনের সংক্রমণই বেশি। তবে তিন-ছয় সপ্তাহের মধ্যে ব্যাপক হারে ছড়াতে পারে ওমিক্রন।
এ বিষয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীর দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এখনো বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণের অধিকাংশই ডেল্টার কারণে হচ্ছে। রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সেটা অল্প কিছু ওমিক্রন, বেশির ভাগই ডেল্টা ধরন। ডেল্টার ধরনের কারণেই কোথাও কোথাও হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে। ওমিক্রন হলে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বাড়ত না। ’
ওমিক্রনের বিস্তার প্রসঙ্গে বলেন, ‘দেশে এখনো ওমিক্রন তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু আগামী তিন-ছয় সপ্তাহের মধ্যে ব্যাপক হারে ওমিক্রনের সংক্রমণ আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কারণ এ ধরন দ্রুত সংক্রমণশীল, একজন থেকে আরেকজনে দ্রুত ছড়ায়। সেহেতু রোগীর সংখ্যা বাড়বে। কিন্তু সিভিয়ারিটি কম বলে হাসপাতালে তেমন রোগী আসবে না। তবে সতর্ক থাকতে হবে বয়স্ক মানুষ, যাদের কো-মর্বিডিটি আছে, তাদের জন্য যেকোনো ভাইরাস মারাত্মক। তারা বিপদে পড়ে যেতে পারে। এ জন্য কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। আতঙ্কিত না হয়ে সাবধানে থাকতে হবে। ’
দেশে এখনো ওমিক্রনের গুচ্ছ সংক্রমণ হয়নি বলে মত দিয়েছেন ডা. আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘যে ১০টা কেস পাওয়া গেছে, তা দিয়ে ক্লাস্টার ট্রান্সমিশন বলা ঠিক না। এখনো আমরা শনাক্ত করতে পারছি। এখনো পরিবারভিত্তিক সংক্রমণ হচ্ছে। এখনো ক্লাস্টার হয়নি আসলে। ’
দেশে হঠাৎ করোনার সংক্রমণ বাড়ার কারণ হিসেবে ডা. এএসএম আলমগীর বলেন, ‘গত ১৪-১৫ দিন ধরে পর্যটন কেন্দ্রে ব্যাপক ভিড় হয়েছে, প্রচুর বিয়ে হচ্ছে, ইনডোরের অনুষ্ঠানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। অথচ এটা স্বীকৃত যে ইনডোর থেকে ব্যাপক সংক্রমণ ছড়ায়। এগুলো বন্ধ করতে হবে। এগুলো যত কম করা যায়, তত সংক্রমণ কমবে। ’
এ দিকে ওমিক্রন ধরন ও করোনা নিয়ন্ত্রণে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এর জন্য তারা স্বাস্থ্যবিধি মানা, করোনার টিকা নেওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন।