মজিবুর রহমান (কেন্দুয়া) : নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের সাজিউড়া গ্রামে ৪ সন্তানের জননী বিধবা কুমকুম আক্তারের দুইটি বসতঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় ১৭ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ভ‚ক্তভোগী জানায়।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) ভোর রাত সোয়া ৪টার দিকে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়ে এই ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনার দিন রাতের খাবার খেয়ে বিধবা কুমকুম আক্তার সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ভোর সোয়া ৪টার দিকে ফজরের নামাজ পড়ার জন্যে ঘুম থেকে জেগে দেখেন ঘরে আগুনে লেলিহান শিখা জ্বলছে। পরে তিনি সন্তানদের নিয়ে কোনমতে ঘর থেকে বের হতে সক্ষম হন।
এসময় তাদের আত্মচিৎকারে আশেপাশের লোকজন ও খবর পেয়ে কেন্দুয়া ইউনিটের দমকল বাহিনী গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে যায় সবকিছুই। চোখের সামনে সব সম্বল পুড়ে ছাই হওয়ার দৃশ্য কুমকুম কিছুতেই ভূলতে পারছেন। স্বজনদের দেখে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। কুমকুমের স্বামী মরহুম আলী আবাদ আকন্দ ডাকবিভাগে চাকুরী করতেন। ২০১৭ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান। শিশু চার সন্তানকে নিয়ে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করে আসছিলেন কুমকুম। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।
স্থাণীয়রা জানায়, ডাক-চিৎকারে ঘুম থেকে ওঠে হঠাৎ আগুন দেখে ঘটনাস্থলে গিয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা করেও আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে পারিনি। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আসতে আসতেই সব পুড়ে শেষ হয়ে যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত কুমকুম আক্তার জানান,আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে দুইটি বসতঘরসহ নগদ এক লাখ সত্তর হাজার টাকা, ফ্রিজ, ধান-চাল, টিভি, ৪টি খাট, আমমীরা, সুকেস, আসবাবপত্র ও মূল্যবান কাগজপত্রসহ প্রায় ১৭ লাখ টাকার সম্পদ।
কুমকুমের দেবর আলী আহাদ জানান,ভাই মারা যাওয়ার পর ছেলে-মেয়েগুলো নিয়ে তিনি খুব কষ্ট করে সংসারটা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। আগুনে পুড়ে তাদের সব সম্বলেই শেষ হয়ে গেছে। এই মুহুর্তে তাদের একটা ঘর বানাবে সেই অর্থ নেই। তাই সরকারি সহযোগীতা প্রয়োজন। খবর পেয়ে চিরাং ইউপির সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তাক আহম্মাদ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে কিছু আর্থিক সহায়তা করেছন বলে জানান আলী আহাদ।
কেন্দুয়া ফায়ার সার্ভিস ইউনিটের ইনচার্জ হাবিবুর রহমান বলেন, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়েছে বলে জানান তিনি।
এব্যাপার কেন্দুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান মৃধা বলেন,আমি ঘটনাস্থল গিয়েছিলাম। মহিলার সবকিছুই পুড়ে ছাই হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ইউএনও স্যার বরাবর আবেদন করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আবেদন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।