কে. এম.সাখাওয়াত হোসেন : নেত্রকোনায় পরকীয়া সম্পর্কে বলি হলেন প্রবাসীর স্ত্রী শরিফা আক্তার (৩২)। গলা কেটে হত্যাকান্ডে মামলার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে হত্যা রহস্য উদঘাটন করতে পেরেছে নেত্রকোনা মডেল থানা পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের প্রকৃত ঘটনার তথ্য জানান থানার ওসি খন্দকার শাকের আহমেদ।
হত্যাকারী মো. সুভাস মিয়া (৩৭) তিনি সদর উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের কাংশা গ্রামের মো. আ. বারেকের ছেলে এবং তার মনোহারী, বিকাশ ও মোবাইল রিচার্জের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক।
জানা যায়, শরিফা আক্তারে স্বামী রিপন মিয়া মালয়েশিয়া প্রবাসী। হত্যাকারী একই এলাকার বাসিন্দা ও ছোট বেলা থেকে পরিচিত ছিলেন ভিকটিম শরিফার সাথে। বিদেশ থেকে স্বামীর প্রেরিত টাকা বিকাশের মাধ্যমে লেনদেনের সময় কথাবার্তায় দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। সম্প্রতি পাঁচ-ছয় যাবত তাদের সখ্যতা আরো বাড়তে বাড়তে অবশেষে অবৈধ সম্পর্ক (পরকীয়) গড়ে ওঠে।
স্বামী বিদেশ থাকার সুবাধে প্রায় সময়ই হত্যাকারী ভিকটিমের ঘরে প্রবেশ করে শরিরীক সম্পর্কে লিপ্ত হতেন। এলাকার অন্যান্য মালয়েশিয়ান প্রবাসীরা সুভাসের দোকানে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতেন যার কারণে স্থানীয়রা দোকানে আসা যাওয়ায় সন্দেহ পোষন করতেন না দুজনের সম্পর্ককে। গত ১৪-১৫ দিন আগে সুভাসকে বিয়ের জন্য চাপ দেন ভিকটিম।
এতে স্ত্রী ও সন্তান থাকায় চিন্তায় পড়ে যান সুভাস। পরে হত্যাকারী গত ২১ আগস্ট (শনিবার) ভোর ৪টার দিকে ভিকটিমের বসতঘরের সিঁধ কেটে গৃহে প্রবেশ করে প্রথমে ঘরের দরজা খুলে দেন। গরু জবাই করার ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন শরিফাকে। বিছানায় পাশে শুয়ে থাকা ভিকটিমের মেয়ে সাদিয়া আক্তারের শরীর ভিজে গেলে ডাক চিকৎকার শুরু করেন। এসব জানা গেছে পুলিশের প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে।
নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি খন্দকার শাকের আহমেদ জানান, খবর পেয়ে গত ২১ আগস্ট (শনিবার) মদনপুর ইউনিয়নের কাংশা গুচ্ছ গ্রামে শরীফা আক্তারের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়। নিহতের বোন হীরামন ওরফে আঙ্গুরার আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২২ আগস্ট (রবিবার) মামলা দায়ের সম্পন্ন হয়।
২৩ আগস্ট (সোমবার) দুপুর আড়াইটার দিকে কাংশা বাজার এলাকা হতে হত্যাকারী সুভাসকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হুদা। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের একমাত্র আসামি আজ (মঙ্গলবার) আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে বলে জানান তিনি।