মো. সাকের খান (মদন) : নেত্রকোনার মদনে ইউপি সদস্য তাজু মিয়ার (৩৬) বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। তাজু মিয়া ও তাদের লোকজন প্রভাবশালী হওয়ায় ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় অভিযোগ করতে সাহস পাচ্ছেন না। বুধবার (৩০ জুন) গভীর রাতে উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের জাওলা উত্তরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তাজু মিয়া কাইটাইল ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও জাওলা গ্রামের মৃত রাশিদ মিয়ার ছেলে।
জানাযায়, ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর ভাইয়ের বাড়িতে প্রায় সময়ে তাজু মেম্বার যাওয়া-আসা করতো। অন্য দিনের মতো বুধবার (৩০ জুন) রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে আসে আবার কিছুক্ষণ পড় চলে যায়। ওই রাতে ভুক্তভোগীর স্বামী কোপা-আমেরিকার ফুটবল খেলা দেখতে জাওলা বাজারে চায়ের দোকানে চলে যায়। এ সুযোগে রাত আনুমানিক ১ টার সময় তাজু মেম্বার ওই গৃহবধূর ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে তাকে জোড় পূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করেন। গৃহবধূ বাধা দিলে অস্ত্র (ঘরে থাকা দা) নিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করে। তখন ভুক্তভোগী গৃহবধূ চিৎকারে তার ছেলের (১৬) ঘুম ভেঙ্গে যায়। তখন তাজু মেম্বার ওই গৃহবধূর ঘর থেকে লক্ষাধিক টাকা ভর্তি (জমি কিনতে জমিয়ে রাখা) একটি ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ নিয়ে গৃহবধূর স্বামী বৃহস্পতিবার(১ জুলাই) বিকালে কাইটাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাফায়াত উল্লাহ রয়েল এর নিকট বিচার চেয়েছেন।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ জানান, গত রাতে (বুধবার) আমার স্বামী ফুুটবল খেলা দেখার জন্য জাওলা বাজারে চায়ের দোকানে চলে যায়। এ সুযোগে তাজু মেম্বার আনুমানিক রাত ১ টার সময় আমার বসত ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। জোড়পুর্বক আমার সাথে অনৈতিক কাজ করতে চাইলে আমি ডাক চিৎকার শুরু করি। তখন আমার ঘরে থাকা দা নিয়ে আমাকে আঘাত করার চেষ্টা করে। চিৎকারে আমার ছেলে ঘুম থেকে উঠে পড়লে বিছানার নিচে থাকা (জমি কিনতে রাখা) ২ লক্ষ টাকার ব্যাগ নিয়ে সে পালিয়ে যায়। আমি এর ন্যয় বিচার চাই।
ভুক্তভোগীর ছেলে (১৬)বলেন, চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে দেখি তাজু মেম্বার আম্মাকে দা দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করছে। তখন চিৎকার শুরু করলে বিছানার নিচে থাকা টাকার ব্যাগ নিয়ে তাজু মেম্বার পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগীর স্বামী বলেন, বুধবার রাতে আমি ফুটবল খেলা দেখতে জাওলা বাজারে চলে যাই। খবর শুনে বাড়ি এসে জানতে পারি তাজু মেম্বার আমার ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। আমার স্ত্রীর সাথে খাপার আচরণ করার সময় বাধা দিলে তাজু মেম্বার তাকে খুন করার হুমকি দেয়। আমি চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দিয়েছি। আজকেই থানায় মামলা করবো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তি জানান, তাজু মেম্বার চরিত্রহীন। গত বছর জাওলা গ্রামের আরেক গৃহবধূকে মুখে কাপড় চাপা দিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। পরে গ্রামের মাতব্বরা টাকার বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়। বুধবার রাতেও সে এমন কান্ড করেছে। আমরা এর বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাজু মেম্বার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি এমন কোনো কিছু করিনি। আমার ব্যাপারে তারা মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।
কাইটাইল ইউপি চেয়ারম্যান সাফায়াত উল্লাহ রয়েল বলেন, এ ঘটনা ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী আমাকে বৃহস্পতিবার দুপুরে জানিয়েছে। আমি এর ন্যয় বিচার দাবি করছি।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) উজ্জ্বল কান্তি সরকার জানান, এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।