কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন : নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলায় ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক রেজাউল করিম রাজিব হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সুষ্ঠু বিচার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
বুধবার বেলা ১২টার দিকে মোহনগঞ্জ সাধারণ পাঠাগারের সামনের সড়কে মোহনগঞ্জ শ্রমিক পরিবহন সমবায় সমিতি ও এলাকাবাসীর ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধনে রাজিবের মা জয়নাহার বেগম, স্ত্রী মুক্তা আক্তার, রাজনৈতিক ও পরিবহন শ্রমিক নেতৃবৃন্দসহ এলাকার হাজারের মতো মানুষ এতে অংশ নেন।
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে নিহতের স্ত্রী মুক্তা আক্তার তার ১৫ মাস বয়সী কন্যা শিশুকে কোলে নিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং তিনি এ ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেন।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শহীদ ইকবাল, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজ উদ্দিন তালুকদার, নিহত রাজিবের মা জয়নাহার বেগম, মোহনগঞ্জ নাগরিক আন্দোলনের আহব্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শামছুল হক মাহবুব, উপজেলা যুবলীগের আহব্বায়ক শফিকুল ইসলাম মামুন, স্থানীয় সূর্যমুখী থিয়েটারের সভাপতি হাবিবুর রহমান হানিফ, উপজেলা শ্রমিক পরিবহন সমবায় সমিতির সভাপতি খোকন মিয়া প্রমূখ।
মানববন্ধনে পরিকল্পিত এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করে বক্তারা বলেন, ঘটনার এতদিন পার হলেও এখনো পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। অবিলম্বে পলাতক আসামিদের প্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান। পাশাপাশি এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক শুভাশীষ গাঙ্গুলী মামলার মূল আসামিদেরকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনছেন না। তদন্তকারী এই কর্মকর্তার পরিবর্তনসহ হত্যাকান্ডে জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানান বক্তারা।
মানববন্ধনে বক্তারা তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এ.কে.এম. মনিরুল ইসলাম জানান, মামলাভেদে সুষ্ঠু তদন্তে কিছুটা সময় লাগে এবং এ মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। তবে বাদিপক্ষের আপত্তি থাকলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৭ মে মোহনগঞ্জের ভাটিয়া গ্রামের কাছে কালচার হাওরে ভারী পাথর চাপা দিয়ে ডুবন্ত অবস্থায় থাকা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক রাজিবের হাত মুখ বাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে ৫ মে রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। এ ঘটনার রাজিরে বাবা পৌরশহরের দেওথান গ্রামে বাচ্চু মিয়া বাদি হয়ে উপজেলার সুয়াইর ইউনিয়নের ভাটিয়াসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২ জনকে আসামি মোহনগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তবে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই এলাকার তিনজনকে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠালেও এজহারভূক্ত অন্যান্য আসামিদেরকে পুলিশ এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ফলে এ নিয়ে এলাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।