মো. সাকের খান, মদন (নেত্রকোণা) : নেত্রকোণার মদনে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি আসিফ(২২) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার(১৪ মে) ঈদুল ফিতরের দিবাগত রাতে উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ফতেপুর দেওয়ান পাড়া সামনের হাওর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসিফ দেওয়ান পাড়া গ্রামের সান্তু মিয়ার ছেলে ও একই গ্রামের রুপ্তন মিয়ার পালিত সন্তান।
আসিফকে গ্রেপ্তারের পর থেকে আসামী পক্ষের লোকজনের হুমকিতে বাদীর পরিবার আতংকে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভিকটিমের পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলা ফতেপুর ইউনিয়নের দেওয়ান পাড়ার গ্রামে ধর্ষণের স্বীকার ওই কিশোরীর (১৫) পরিবার জীবিকা নির্বাহের জন্য হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ পৌরসভায় শিবপাশা নামক স্থানে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে। মদন উপজেলার ফতেপুর গ্রামের রুপ্তন মিয়া তার ভাগ্নে (পালিত সন্তান) আসিফকে নিয়ে ওই কিশোরীর পরিবারের পাশাপাশি বাসায় বসবাস করছেন।
নবীগঞ্জ জে. কে মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেনিতে লেখাপড়া করেন ওই কিশোরী। ধর্ষক আসিফ প্রায় সময়েই ওই কিশোরীকে প্রেমের নিবেদন করে কু-প্রস্তাব দিতো। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারী রাতে ওই কিশোরী প্রকৃতির ডাকে ঘর থেকে বের হলে আসিফসহ কয়েকজন জোরপূর্বক তাকে অপহরণ করে ধর্ষণ করে।
এ ঘটনায় ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারী একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনার পর থেকে আসামী আসিফ পলাতক। এ দিকে আসামীর মামা (পালিত পিতা) রুপ্তন তার লোকজন দিয়ে নানা ভাবে হুমকি দিয়ে ওই কিশোরীর পরিবারে লোকজনের নামে হবিগঞ্জ আদালত ও নেত্রকোণা আদালতে চাঁদাবাজির দুইটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার (১৪ মে) ঈদুল ফিতরের দিবাগত রাতে আসিফকে মদন উপজেলার ফতেপুর নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আসিফ কে গ্রেপ্তারের পর থেকেই আসামী পক্ষের রুপ্তনসহ কয়েকজন ওই কিশোরীর পরিবারকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নানাভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
শনিবার (১৫ মে) সরজমিন ওই কিশোরীর বাড়িতে গেলে তার মা বলেন, আমরা গরীব মানুষ। জীবিকা নির্বাহের জন্য নবীগঞ্জ থাকি। সেখানে আমার স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে জোরপূর্বক অপহরণ করে ধর্ষণ করেছে আসিফ। ঈদের দিন রাতে পুলিশ আসিফকে গ্রেপ্তার করায় তার মামা রুপ্তনসহ কয়েকজন নানা ভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। যে কোনো সময় তারা আমাদের বাড়িতে হামলা করতে পারে। এমনবস্থায় আমরা আতংকে আছি।
আসিফের মামা (পালিত পিতা) রুপ্তন মিয়া বলেন, আসিফ আমার পালিত সন্তান। তারা আমার ছেলের নামে ধর্ষণ মামলা করেছে। নবীগঞ্জ থানার পুলিশের সাথে কথা বলেই ঈদে বাড়ি আসছিলাম। ঈদের দিন রাতে পুলিশ আসিফকে গ্রেপ্তার করেছে। বাদীর পরিবারকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী ও হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।
মদন থানার অফিসার ইনচার্য (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, আসিফের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানায় নারী শিশু মামলা রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে শুক্রবার রাতে তার নিজ বাড়ি ফতেপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে নবীগঞ্জ থানায় প্রেরণ করা হয়েছে।