মোঃ সাকের খান, মদন (নেত্রকোনা) : নেত্রকোনার মদনে ধলাই নদী উজান থেকে নেমে আসা পলি-বালি জমে মরে যাওয়া ধলাই নদী এখন ফসলের মাঠে পরিণত হয়েছে। চৈত্র মাস আসার আগেই নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ ধরায় শুকিয়ে যায় এ নদী। নদীর বুক চিরে চলছে চাষাবাদ। দখল করে চাষাবাদ করছে পাশের জমির লোকজন। দীঘির্দনেও নদীটি খননের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এতে করে নদীতে পানি না থাকায় অর্ধশত শেষ পাম্প প্রায় অকেজো হাজার হাজার একর জমি অনাবাদি থাকার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
এক সময় এ নদী পথে লঞ্চ, কাগোর্, বড় ট্রলার যাতায়াত করলেও বতর্মান প্রজন্মের কাছে এ গুলো এখন শুধু অতীতের গল্প হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ধলাই নদীর একটি শাখা ফতেপুর ফেরিঘাটের মগড়া নদীর মোহনা থেকে শুরু করে রামগোপালপুর, ছত্রকোনা, বিন্নী হয়ে ৪ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে আবার দড়িবিন্নী গ্রামের পাশে মগড়া নদীতে মিশেছে। অপর শাখাটি দেওয়ান পাড়ার সামনে দিয়ে আলমশ্রী, রোদ্রশ্রী, মাখনা, শিবপাশা, বাড়ৈউড়া, তিয়শ্রী, বাস্তা, চন্দ্রতলা, রাজতলা, বাঁশরী হয়ে প্রায় ২০কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে কৈজানি নদীতে মিশেছে। ওই দুটি শাখা নদীতে পলি জমে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় নদীর পাশের জমির মালিকরা দখল করে ধান উৎপাদন করছে। ফলে এ দুটি শাখা নদীর উপকার থেকে জনগণ সম্পূণর্ভাবে বঞ্চিত হচ্ছে।
এগুলোর ওপর কতৃর্পক্ষের নজর না দেওয়ায় দিন দিন দখলদারদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। রবিবার সরজমিনে গেলে, নদীর কোন কোন স্থানে চর, আবার কোথাও কোথাও হাটুপানি রয়েছে। নদীতে ধান রোপণ করার দৃশ্য চোখে পড়ে। মনে হয় নদীর কোনো অস্থিত নেই।
নদী খনন করে প্রাকৃতিক সম্পদ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার দাবিতে বেসরকারি সংগঠন জনউদ্যোগ জেলা সদরে সম্প্রতি মানববন্ধন করেছে। এ ছাড়া প্রাকৃতিক বাঁচাও আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কমর্সূচি পালন করে প্রশাসনের কাছে দাবি জানালেও কোনো কাজ হচ্ছে না। এতে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণী। আর জনগণ এ নদীর সুফলতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
চন্দ্র তলা গ্রামের গোলাপ মিয়া , গাবরতলা গ্রামের আবুল মিয়া, বাঁশরী গ্রামের তুষার ,মাখনা গ্রামের আরজু, বাস্তা গ্রামের শাহজাহান ,তিয়শ্রীগামের আজিম উদ্দিন, শিবপাশা গ্রামের শামীম চৌধুরী , সহ অনেকে জানান ও নদীর পানি দিয়ে ১৫/২০ গ্রামের মানুষ কৃষি কাজে ব্যবহার করে থাকে ফাল্গুন মাস থেকে নদীতে পানি না থাকায় আমাদের বোরো ধান উৎপাদনে মারাত্মক সমস্যা হয় আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট নদী কনের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি
নায়েকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান রোমান জানান, নদীগুলো নাব্যতা হারিয়ে যাওয়ায় মানুষের ব্যয়বার বাড়ছে। নদীর উপকারিতা থেকে লোকজন বঞ্চিত হচ্ছে। তবে নদীগুলো জরুরি ভিত্তিতে খননের জোরদাবি জানান তিনি।
তিয়শ্রী ইউপি চেয়ারম্যান ফকরুদ্দিন আহমেদ জানান ধলাই নদী পুনঃ খননের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি
ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান এ নদী দিয়ে বড় বড় ইঞ্জিনচালিত নৌকায় যাতায়াত করতো , নদী মরে যাওয়ার এখন আর ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল করতে পারে না নদীতে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় নদীর দু’পাশে বোরো আবাদ হুমকির মুখে রয়েছে, নদী খননে অতি দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।