কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন : প্রচন্ড শৈত্য প্রবাহ ও কনকনে শীত উপেক্ষা করে নেত্রকোনায় ইরি-বোরো আবাদের ধুম পড়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে কৃষক ধানের ন্যায্য মূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হলেও আমন মওসুমে ধানের দাম ভাল পাওয়ায় এ এলাকার কৃষকরা অধিক পরিমান জমিতে ধান আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
প্রয়োজনীয় বীজ তলা তৈরীর পর প্রচন্ড শীত ও হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে এ অঞ্চলের কৃষকরা কাক ডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমি চাষাবাদ ও ধান রোপন ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে। নেত্রকোনা সদর উপজেলার চল্লিশা ইউনিয়নের বামনমোহা গ্রামের কৃষক শামীম জানান, আমন মওসুমে ধানের দাম ভাল পেয়েছি, তাই বেশী পরিমান জমিতে এবার বোরো ধানের আবাদ করছি। আশা করি আগামীতেও ধানের দাম ভাল পাবো।
কেন্দুয়া উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের দুল্লী গ্রামের কৃষক আবুল মিয়া জানান, জমিতে সেচ দিতে অনেক টাকা লাগে। সরকার যদি কৃষকদের সেচ প্রণোদনা দিতো, তাহলে কৃষকরা উপকৃত হতো।
নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, নেত্রকোনা চলতি ইরি-বোরো মওসুমে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লক্ষ ৮৫ হাজার ২ শত ৫০ হেক্টর। এর মধ্যে ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে হাইব্রীড, ১ লক্ষ ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলন শীল এবং ২ শত ৫০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ লক্ষ ৬৪ হাজার ৪ শত ৯৩ মেট্রিক টন। শনিবার পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ১ লক্ষ ২১ হাজার ২ শত ৪২ হেক্টর জমি। ফেব্রুয়ারী মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত ইরি-বোরো ধানের আবাদ করা যাবে।
নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. হাবিবুর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রী আহবান জানিয়েছেন, এক ইঞ্চি জমিও যেন পতিত না থাকে। সেই লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদেরকে কৃষি আবাদ বাড়াতে প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ কৃষি প্রনোদনা দিয়ে আসছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে আরও বলেন, আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এ অঞ্চলের বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে। এতে কৃষকরা অধিক লাভবান হবে।