বেড়ানোর কথা বলে ঢাকা থেকে কলমাকান্দায় এনে কিশোরীকে গণবদ্ধ ধর্ষণ

Date:

Share post:

কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন : বেড়ানোর কথা বলে ঢাকা থেকে নেত্রকোনার কলমাকান্দায় এনে এক কিশোরী (১৬) গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে কিশোরী ছয়জনের নামসহ অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ দিলে কলমাকান্দা থানা পুলিশ সহায়তাকারী নারীসহ দুজনকে আটক করে।

শুক্রবার (১ জানুয়ারী) দুপুরেআটককৃত দুজনকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে জানায় ওসি এটিএম মাহমুদুল হক। এরআগে ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে কিশোরীকে উদ্ধার করে গত বৃহস্পতিবার ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা করায় পুলিশ।

আটককৃত দুজন হলেন- সহায়তাকারী নারী ইয়ারপুর গ্রামের মৃত শামছুদ্দিনের মেয়ে মোছা. পারভীন আক্তার ওরফে মায়া শেখ (২৭) ও নয়াপাড়া গ্রামের মাখন দাসের ছেলে লক্ষন দাস (২৩)। এছাড়া অন্যান্য অভিযুক্তরা হলো- একই উপজেলার কান্তপুর গ্রামের মো. মামুন মিয়া (২৮), আতিকাপড়া গ্রামের মো. ফারুক (৩০), ভবানীপুর গ্রামের বিপুল (৩০) ও মুক্তিরচর (ধান মহল) এলাকার শীতল (২৫) এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২-৩ জন। আটকসহ সকল আসামি কলমাকান্দা উপজেলার বাসিন্দা।

অভিযোগ জানা যায়, গত ৩০ ডিসেম্বর বেড়ানোর কথা বলে ঢাকা থেকে ভিকটিমকে কলমাকান্দা নিয়ে আসে মোছা. পারভীন আক্তার ওরফে মায়া শেখ। কলমাকান্দায় যমুনা গেষ্ট হাউসে মায়া শেখ ও তার ৭ বছরের সন্তানসহ ভিকটিম রাত্রী যাপন করে। হোটেলে অবস্থানকালীন সময় মায়া শেখ আসামি শীতলের সাথে যোগাযোগ করে ও শীতল হোটেলে গিয়ে তাদেরকে খাবার খাওয়ায়। পরের দিন ৩১ ডিসেম্বর বিকেলে ‘চল বাহির থেকে বেড়াইয়া আসি’বলে মায়া শেখ তার সন্তানসহ ভিকটিমকে ভবানীপুর পাম্পের মোড়ে নিয়ে আসে। সেখানে শীতল ও মামুন মোড়ে চা-পান অবস্থায় মায়া শেখ এই দুজনের সাথে কথা শেষে ভিকটিমকে বলে তুই এখানে অপেক্ষা কর আমার ছেলের জন্য নাজিরপুর বাজার হতে জুতা কিনে আনি।

পরে সন্ধ্যার দিকে এসে ভাড়া করা মোটরসাইকেল করে ভিকটিমসহ তারা লেংগুরার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথের মধ্যে ভিকটিম প্রস্রাবের চাপের কথা মায়াকে জানালে রাত ৭টার দিকে আকাশ ভবানীপুর উত্তরপাড়া গ্রামের জনৈক আবু সাইদ চৌধুরীর বসত বাড়ির পুকুরের একটি কোনায় ভিকটিমকে নিয়ে যায়।

সেখানে মায়া শেখ, শীতল ও লক্ষনের সহায়তায় তাদের সাথে থাকা মাফলার দিয়ে পেছন দিকে থেকে ভিকটিমের মুখ বেঁধে ফেলে। পরে মামুন মিয়া, ফারুক, বিপুল সহ অজ্ঞাত আরও ২-৩ জন পালাক্রমে ভিমটিমকে ধর্ষণ করে এবং এসময় আসামিরা একে অপরের নাম ধরিয়া ডাকায় ভিকটিম আসামিদের নাম জানতে পারে।

ধর্ষণ শেষে আসামিরা চলিয়া যাওয়ার সময় ভিকটিম মুখের বাঁধন খুলে চিৎকার দিলে আশপাশে থাকা লোকজন ছুটে আসে এবং ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে পুলিশ ওইদিন মধ্যরাতে ভিকটিমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

কলমাকান্দার ওসি এটিএম মাহমুদুল হক বলেন, ভিকটিমের জবানবন্দী ও নারীসহ আটককৃত দুজনকে শুক্রবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ভিকটিমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

spot_img

Related articles

কলমাকান্দায় মসজিদের জায়গা দখলমুক্তের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনা কলমাকান্দায় সিধলী বাজার জামে মসজিদের রেকর্ড ভুক্ত জায়গা দখলমুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়েছে।...

যৌথ অভিযানে নেত্রকোনায় ২৪৩ পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার মদনে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে ২৪৩ পিস ইয়াবাসহ নূর আহম্মদ (৩০) নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে...

শেখ হাসিনার পদত্যাগে গরু জবাই করে ভূরিভোজ বিএনপি’র কর্মীর

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের আনন্দে গরু জবাই করে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মী ও এলাকাবাসীদের গরু...

ধীমান কবি অ্যাড. শাহ্ নেওয়াজ ফকির এঁর প্রয়াণে নাগরিক শোকসভা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ধীমান, কবি ও সরলপ্রাণ ধর্মচিন্তক অ্যাড. এ কে এম শাহ্ নেওয়াজ ফকির এঁর প্রয়াণে নেত্রকোনায় নাগরিক...