মো. সাকের খান : নেত্রকোনার মদনে ২০১৯-২০ সালের অর্থবছরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির অধীনে টেস্ট রিলিফ (টিআর), কাবিখা ও কাবিটা কর্মসূচির প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায় কাজ বরাদ্দ হয়। সেই প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ে না করে টাকা আত্মসাৎের করেছেন নেত্রকোনার মদন উপজেলার ২ নং ইউনিয়নের আ’লীগের সেক্রেটারি মোঃ তোফায়েল আহমেদ ডালি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ওই ইউনিয়নের বীর মুক্তিযুদ্ধা মোঃ বাচ্চু মিয়া।
নেত্রকোনার মদন উপজেলায় কাজ না করেই টেস্ট রিলিফ (টিআর), গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার-কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ। অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ না করে টাকা লোপাট করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির অধীনে টেস্ট রিলিফ (টিআর), কাবিখা ও কাবিটা কর্মসূচির প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায় ১৬২টি প্রকল্পের মাধ্যমে ৬৯ লাখ ৫৭ হাজার ৩১৫.৭২টাকা এবং ২৪৭.২৪১৬ মেঃ টঃ গম বরাদ্দ দেয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়।
প্রকল্পগুলোর মধ্যে টিআর কাবিখা, কাবিটা ও বিশেষ বরাদ্দে সোলার স্থাপনের কাজও রয়েছে। এছাড়াও এসব প্রকল্পের মধ্যে ১০টি প্রকল্পে ৮০ মেট্টিকটন চালও বরাদ্দ দেয়া হয়। যার আনুমানিক মূল্য ধরা হয়েছে ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
প্রকল্পগুলোর মধ্যে চানগাঁও ইউনিয়নের মৈধাম গ্রামের গোলাম আকবরের পুকুরপাড় হইতে বাবুল মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার মাটিকাটা, তিয়শ্রী ইউনিয়নে ধুবাওয়ালা ও সাইতপুর গ্রামের মসজিদ হইতে আশক আলীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার মাটিকাটা কাজ না করে প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করেছে। উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নে ও সংস্কারের নামে পুরো টাকাই লুটপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চানগাঁও ইউনিয়নের মৈধাম গ্রামে গোলাম আকবরের পুকুরপাড় হইতে বাবুল মিয়ার বাড়ী পর্যন্ত রাস্তার মাটিকাটার জন্যে ৮ মেট্রিকটন গম যার আনুমানিক মূল্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ওই প্রকল্পে কাজ না করে সব অর্থ লোপাট করা হয়েছে।
অন্য দিকে তিয়শ্রী ইউনিয়নের ধুবাওলা গ্রামের দুটি প্রকল্পে গ্রামের ফান্ডের টাকা দিয়ে মাটি কাটা হয়েছে বলে গ্রামবাসীর অভিযোগ । ইফাদ রাস্তা হতে তিয়শ্রী গ্রাম পর্যন্ত মাটি ভরাট প্রকল্প কোন কাজ না করে টাকা আত্মসাৎ। ওই প্রকল্পের টাকাও আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। এছাড়াও একই জায়গায় নাম পরিবর্তন করে একাধিকবার প্রকল্প তৈরি করে টাকা আত্মসাৎ করেছে। মাঘান ইউনিয়ন এর প্রথম পর্যায়ে তিরিশ নং প্রকল্প চৌধুরী তালে হোসেন মিসিলজান একাডেমী উন্নয়ন ৫০ হাজার টাকা। উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সোহেল মিয়া জানান আমার বিদ্যালয় প্রকল্পের কোনো কাজ হয়নি আমি কোন কিছু জানিনা।
অভিযোগকারী বীর মুক্তিযুদ্ধা মোঃ বাচ্চু মিয়া বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি আমাকে দেখে বিভিন্নভাবে ঠাট্টা বিদ্রুপ করে বলে রাস্তার মাটিকাটা প্রকল্পের অভিযোগের কারণে আমার ৬ মাস থেকে এক বছরের জেল হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, অভিযোগ করার পরে ইউএনও সাহেবের কাছে গিয়েছি এখন পর্যন্ত তিনি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা তারপরও এই অভিযোগ করার প্রেক্ষিতে প্রকল্প পরিদর্শন বা তদন্ত না হওয়ায় হতাশ হয়েছি।
চানগাঁও ইউনিয়ন মৈদাম গ্রামের গোলাম আকবরের পুকুর পার হতে বাবুল মিয়ার বাড়ী পর্যন্ত রাস্তার মাটিকাটা প্রকল্প কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি মোঃ তোফায়েল আহমেদ ডালি জানান, এই প্রকল্পের কাজ করা হয়নি এবং টাকা উত্তোলন করা হয়নি ইউএনও অফিসে কথা হয়েছে পানি শুকালে কাজ করা হবে এই প্রকল্পের টাকা পিআইও সাহেবের কাছে জমা আছে তিনি আরো বলেন শুধু আমার প্রকল্পে না আরো ৭/৮ টি প্রকল্পের টাকা পিআইএ সাহেবের কাছে জমা আছে
প্রকল্প অভিযোগের ব্যাপারে মদন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শওকত জামিল এর কাছে জানতে চাইলেন তিনি বলেন এতদিন পরে অভিযোগ কেন? না উনার বাগে কোন কিছু পরে নি তাই অভিযোগ করেছে। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে কথা বলে জানাচ্ছি ।অন্যান্য ইউনিয়নেও একই অবস্থা এমন প্রশ্নের জবাবে কোন উত্তর না দিয়ে ফোন রেখে দেন
মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ বুলবুল আহমেদ বলেন, চানগাও ইউনিয়নে একজন মুক্তিযোদ্ধা কাবিখা প্রকল্পের আত্মসাথের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি সরজমিনে প্রকল্প পরিদর্শন করব প্রকল্পে অনিয়ম হলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।