কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন : নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় অবৈধ পন্থায় ও বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন এক প্রধান শিক্ষক। এয়াকুব আলী নওয়াব উপজেলার ঝানজাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১৪ সাল থেকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
রবিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. কমর উদ্দিন খান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আজ থেকে বরখাস্ত কার্যকর হবে এ মর্মে নোটিশে উল্লেখ করে বিভিন্ন দফতরে এর অনুলিপি ডাক যোগে প্রেরণ করা হয়েছে।
জানা যায়, ২০০৫ সালের পর থেকে দারুল এহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচেলর অব এডুকেশন (বিএড) ডিগ্রির সনদ বাতিল ঘোষনা করে সরকার। প্রধান শিক্ষক এয়াকুব আলী নওয়াব ২০১০ সালে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএড ডিগ্রী অর্জনের সার্টিফিকেট দিয়ে ২০১৪ সালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন। অবৈধ পন্থায় সরকারি কোষাগার থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত বেতন ভাতা উত্তোলন করেছেন।
এছাড়াও এসএমসি কমিটি কর্তৃক গঠিত নয় সদস্য বিশিষ্ট নিরীক্ষা কমিটি ২০১৭-২০১৮ সালের এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যায়ের তদন্ত করেন। এ কমিটি বিদ্যালয়টির আয়-ব্যয়ের যাবতীয় ভাউচার ও ব্যাংক স্ট্যাটমেন্ট নিরীক্ষা করে দেখেন ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার ৭৩৬ টাকা আত্মসাৎ করেছেন এ প্রধান শিক্ষক। এমনকি এ তদন্ত প্রতিবেদনে ওই অর্থবছরে ব্যয় ভাউচারেও কমিটি কর্তৃক কোন অনুমোদন নেই বলেও নিরীক্ষা কমিটি তদন্তে উল্লেখ করেছে।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক এয়াকুব আলী নওয়াব বলেন, কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছতার সাথে করতে চেয়েছি বিধায় যড়ষন্ত্রমূলক ভাবে করা হয়েছে। আমি প্রতিষ্ঠানের কোন অর্থআত্মসাৎ করিনি। নানাভাবে হেয় করার জন্য পায়তারা করে আমার বিরুদ্ধে এ কাজটি করা হয়েছে।
নিরীক্ষা কমিটির সদস্য ও সহকারি শিক্ষক আব্দুল মতিন খান বলেন, ২০১৭ ও ২০১৮ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিরীক্ষন করে অর্থ লোপাটের ঘটনার কাগজ-পত্রসহ এসএমসি কমিটির কাছে জমা দিয়েছি। তাছাড়া ২০০৫ সালের পর থেকে সরকার দারুল এহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচেলর অব এডুকেশন (বিএড) ডিগ্রিকে বাতিল ঘোষনা করেছে বলে তিনি জানান।
ঝানজাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএমসি কমিটির সভাপতি কমর উদ্দিন খান বলেন, এসএমসি কমিটি কর্তৃক গঠিত নিরীক্ষা কমিটি প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎের সাথে প্রধান শিক্ষক জড়িত। আমার আগের কমিটি কর্তৃক দারুল এহসান বিশ্ববিদ্যায়ের বিএড ডিগ্রি সনদ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়াটি ছিল অবৈধ।
কেননা এ বিশ্ববিদ্যালয়টি সরকার কর্তৃক ২০০১ সালে বাতিল ঘোষনা ও ২০০৫ সালের পর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ নিয়ে চাকুরিতে আবেদন করার বিধান নেই। এ দুই কারনে প্রধান শিক্ষক এয়াকুব আলী নওয়াবকে এসএমসির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তের কপি বিভিন্ন দফতরে প্রেরণ করা হয়েছে।
‘সভাপতি হিসেবে আপনি প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করার এখতিয়ার রয়েছে কিনা’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন সভাপতি হিসেবে বরখাস্ত করার ক্ষমতা সভাপতি হিসেবে আমার রয়েছে।