বাবলী আকন্দঃ আমার এ সমাজের, দেশের এবং রাষ্ট্রের সুস্থ স্বাভাবিক পরিবেশে নিরাপত্তায় যেন থাকতে পারে সাধারণ মানুষ সেজন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি প্রয়োজন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’র স্বপ্নের সোনার বাংলার পুলিশ হবে দায়িত্বশীল। মুজিববর্ষের অঙ্গিকার, পুলিশ হবে জনতার এ কথার মর্মার্থ উপলব্ধি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিভিন্ন অপরাধ দমনে এমনকি করোনা মহামারীতেও সেই পুলিশ যে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। কমিউনিটি পুলিশিং ডে ২০২০ উপলক্ষে গত ৩১ অক্টোবর এড তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে কমিউনিটি পুলিশিং সমাবেশে ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডি আইজি ব্যারিষ্টার হারুন অর রশিদ বিপিএম এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি।
এসময় তিনি আরো বলেন, ভূমি দখলবাজ, চাঁদাবাজ, জঙ্গিবাদ, ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার থাকতে হবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এসব প্রতিহত করতে হবে। যারা মাদকসেবী তাদের পরিবারের যেমন সচেতনাবোধ থাকতে হবে ঠিক তেমনি পুলিশেরও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পুলিশের সর্বোচ্চ সহযোগিতায় ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্রে বাংলাদেশ অবতীর্ণ হবেই। এসময় করোনায় ক্লান্তিহীনভাবে কাজ করার জন্য ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটুর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন তিনি।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যকালে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু বলেন, সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু’র স্বপ্নের বাংলা গড়ে তোলার পাশাপাশি ময়মনসিংহকে একটি আধুনিক নগরে পরিনত করার কাজ অব্যাহত থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন বিভাগের জনবান্ধব কর্মকান্ডের ফলে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু একটি গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করতে বিভিন্ন ছোটখাটো বিষয় নিয়ে দেশের শান্তি শৃংখলা বিনষ্ট করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার অন্যায় করলে কাউকে ছাড় দিচ্ছে না সেখানে গোটা সংগঠন,সংস্থাকে দায়ী না করে ব্যক্তিবিশেষের দায় নিতে হবে।
এসময় ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডি আইজি ব্যারিষ্টার হারুন অর রশিদ বলেন, করোনা মহামারীতে ময়মনসিংহে সকল বিভাগের একত্রে কাজ করার ফলাফল হচ্ছে এ পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে সবচেয়ে কম সংখ্যক লোক করোনায় মারা গেছে ময়মনসিংহে। ১৮২৯ সালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার রবার্ট পিল যে উচ্চারণ করেছিলেন সেই কমিউনিটি পুলিশিং এর গুরুত্ব বঙ্গবন্ধু’র কন্ঠেও উচ্চারিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু বলেছেন, তোমরা উপনৈবেশিক পুলিশ নও,ব্রিটিশের পুলিশ নও, তোমারা স্বাধীন বাংলাদেশের পুলিশ। আজ পুলিশ সকলের সহযোগিতায় মানুষের কাছাকাছি যাচ্ছে,মানুষের সমস্যার সমাধান করছে।
রেঞ্জের অতিরিক্ত ডি আইজি ড. মোঃ আক্কাস উদ্দিন ভুঁইয়া বিট পুলিশিং এবং কমিউনিটি পুলিশিং এর গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডি আইজির চিন্তাভাবনায় জনতার সাথে পুলিশের একটি সম্পর্কের উন্নয়নের লক্ষে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়েছে এবং তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সারা বাংলাদেশের ময়মনসিংহে প্রথম রেঞ্জ কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল সেন্টার চালু করা হয়েছে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তারা ৯৯৯ এর গুরুত্ব প্রচার করছে, কাজ করে যাচ্ছে ইউনিয়ন পর্যায়েও। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ডিজিটাইলেশনের মাধ্যমে মনিটরিং এর অবাধ সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার কামরুল হাসান, জেলা প্রশাসক মোঃ মিজানুর রহমান, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আমিনুল হক শামীম, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর সহ সভাপতি এড বিকাশ চন্দ্র রায়, জেলা মোটরর্স মালিক সমিতির মোঃ মমতাজউদ্দিন, জাতীয়পার্টির ময়মনসিংহ মহানগরের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার আনোয়ার হোসেন, টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রফেসর একেএম নাসির উদ্দিন, সময় টিভির স্টাফ রিপোর্টার হারুন অর রশীদ, এড এমদাদুল হক সেলিম, নারী ফোরামের আহবায়ক সৈয়দা সেলিমা আজাদ।
অতিরিক্ত পুলিশসুপার জয়ীতা শিল্পী’ র সঞ্চালনায় সমাবেশে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ময়মনসিংহ জেলা পুলিশসুপার মোঃ আহমার উজ্জামান।
পরে প্রধান অতিথি কমিউনিটি পুলিশিং এর ঈশ্বরগঞ্জ এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান এবং ফুলপুর থানার সাব ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) আশরাফুল আলম এর হাতে সম্মাননা ও ক্রেষ্ট তুলে দেন। এর আগে ময়মনসিংহ জেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর সভাপতি মরহুম অধ্যক্ষ আমীর আহম্মদ চৌধুরী রতন এর স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দসহ নানা পেশাজীবী মানুষ।