মদন থেকে মো. সাকের খান : নেত্রকোনা মদন উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দলিল লেখকদের ইমারত নির্মাণসহ নানান অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, নেত্রকোনার মদন উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সামনে ফাঁকা জায়গা রয়েছে। এ জায়গায় দলিল লেখক সমিতির গত ১১ জুন ২০ ইং স্বারক নং ৬৯২ আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা রেজিস্ট্রার স্মারক ৬৭, ২ জুন ২০ ইং দলিল লেখকদের জন্যে অস্থায়ী একটি টিনশেড ঘর নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু টিনশেড ঘরের পরিবর্তে এখানে একটি সেমিপাকা ইমারত নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও সাব রেজিস্ট্রার অফিসে নকল নবিশ পদে বিশ্বজিৎ দাস ও আজিজুল হক নামের দুজনকে জেলা রেজিস্ট্রার এর আদেশে ৩ ফেব্রুয়ারি ২০ ইং স্মারক নং ২১ এর প্রেক্ষিতে স্মারক নং ৩০১ (৪) ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০ ইং সাসপেন করেন।
মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জেলা রেজিস্ট্রার দলিল লেখকদের জন্যে একটি টিনশেড অস্থায়ী ঘরের অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু অস্থায়ী টিনশেড ঘরের পরিবর্তে সাব-রেজিস্ট্রার পলাশ তালুকদার নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে দলিল লেখক সমিতির কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা উৎকুচ নিয়ে সেমি পাকা ইমারত নির্মাণের সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও জেলা রেজিস্ট্রার উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নকল নবিশ বিশ্বজিৎ দাস ও আজিজুল হক নামেের দু’জনকে সাসপেনশনে দিলেও সাব-রেজিস্ট্রার তাদেরকে দিয়ে নিয়মিত অফিসে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সাব-রেজিস্ট্রার প্রবীণ দলিল লেখক সহ অনেকের সাথে কর্মক্ষেত্রে অসদাচরণ করে থাকেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দলিল লেখক বলেন, সাব-রেজিস্ট্রার স্যার ক্ষমতার অপব্যবহার করে এক লক্ষ টাকা উৎকুচ এর বিনিময়ে ইমারত নির্মাণের অবৈধ অনুমোদন দিয়েছেন। মাস্টার রোলে কর্মরত নকল নবিশদের দিয়ে অফিসের সকল কাজকর্ম করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন।
ইমারত নির্মাণকারী মেস্তরি আব্দুর রহমান বলেন, এই ঘরটি যেভাবে নির্মাণ করা হয়েছে তাতে ভবিষ্যতে ছাদও দিতে পারবে।
এ ব্যাপারে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি খলিলুর রহমান খান লিটন বলেন, আমরা জেলা রেজিস্টার স্যারের কাছ থেকে টিনশেড ঘর নির্মাণের অনুমোদন নিয়েছি। কিন্তু সাব-রেজিস্ট্রার স্যারকে বলে সেমি পাকা ঘর তৈরি করেছি। টাকার বিনিময় সাব-রেজিস্ট্রার এর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে ইমারত নির্মাণের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।
এ ব্যাপারে মদন উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার পলাশ তালুকদার বলেন, এই ঘরের অনুমোদন জেলা রেজিস্ট্রার স্যার দিয়েছেন। টিনশেডে পরিবর্তে সেমিপাকা ইমারত নির্মাণের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি উপরে টিনের ছাদ এবং নিয়ম অনুযায়ী করা হয়েছে। টাকার বিনিময়ে ইমারত নির্মাণের ব্যাপারে তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। সাসপেনশনে থাকা বিশ্বজিৎ দাস ও আজিজুল হককে অফিসের কার্যসম্পাদন এর ব্যাপারে জানতে চাই তিনি বলেন, আমার অফিসে ওমেদাদ ও নাইটগার্ড সহ তিনটি পদ খালি থাকায় তাকে আনঅফিসিয়ালি আমার ব্যক্তিগত কাজে তাকে অফিসে রেখেছি।
নেত্রকোনা জেলা রেজিস্ট্রার খন্দকার জামিলুর রহমান মুঠোফোনে জানান, আমি দলিল লেখকদের জন্য একটি অস্থায়ী টিনসেট ঘর নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছি। স্থায়ী ইমারত নির্মাণের ব্যাপারে আমি কিছু জানিনা। বিশ্বজিৎ ও আজিজুল হক এর সাসপেনশন এর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না তবে এটা খতিয়ে দেখা হবে।
অনেক দলিল লেখক এবং সচেতন মহলের দাবি এ অনিয়ম গুলোর ব্যাপারে দুদকসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিলে অনিয়ম কমে আসবে।