পূর্বময় ডেস্ক :
বিরোধপূর্ণ সীমান্ত নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে সম্মত হয়েছে নয়াদিল্লি ও বেইজিং।শনিবার পারমাণবিক সক্ষমতাসম্পন্ন দুই প্রতিবেশী দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শেষে এ তথ্য নিশ্চিত হয়। গত জুনের সংঘর্ষের পর থেকেই পশ্চিম হিমালয় বেষ্টিত ফ্রন্টিয়ারে সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে চীন ও ভারত।সম্প্রতি ভারতের অরুণাচল প্রদেশসংলগ্ন সীমান্তে উত্তেজনা দেখা দেয়। নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এশিয়ার শীর্ষ দুই অর্থনীতির মধ্যে সামরিক উত্তেজনা যে দুদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতির জন্য ভালো হবে না সে বিষয় মাথায় রেখে সমঝোতার কথা বলে আসছিলেন বিশ্লেষকরা। সে ধারাবাহিকতায় উভয় পক্ষ উত্তেজনা প্রশমনে সম্মত হয়েছেন।শনিবার ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।এর আগে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের সম্মেলনের মাঝে দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, উভয় পক্ষই একটি বিষয়ে একমত হয়েছে যে তারা কেউই সীমান্ত পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠতে পারে বা সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা ছড়াতে পারে এমন কোনো কিছু করবে না।ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল উই ফ্যাং
মস্কোতে শুক্রবার দিনের শেষভাগে নিজেদের সীমান্তের বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন। এক টুইটার বার্তায় রাজনাথ সিং জানান, ওই বৈঠক ২ ঘণ্টা ২০ মিনিট স্থায়ী হয়েছে।
শুক্রবার ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ফ্যাংয়ের সঙ্গে রাজনাথের বৈঠকে প্রতিরক্ষা সচিব অজয় কুমার এবং রাশিয়ায় ভারতের রাষ্ট্রদূত ডি বি ভেঙ্কটেশ বর্মাও উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল পৃথকভাবে টেলিফোনে কথা বলেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে। সেনাবাহিনী পর্যায়ের বৈঠক চলছে ধারাবাহিকভাবে।
মে মাসের পর শুক্রবারই প্রথম দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মুখোমুখি বৈঠক হলো। ওই বৈঠক নিয়ে বেইজিংভিত্তিক গ্লোবাল টাইমস পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈঠকে উই ফ্যাং ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথকে বলেছেন, সীমান্তে বর্তমানে যে উত্তেজনা চলছে তার পুরো দায় নয়াদিল্লির।
বেইজিং ও নয়াদিল্লির মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে মস্কো মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে বলে বলছে ভারতের স্থানীয় পত্রিকাগুলো। কূটনীতিক সূত্র বলছে, এশিয়ার দুই পরাশক্তি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ুক তা রাশিয়ার কাছে কোনোভাবেই কাম্য নয়।
প্রসঙ্গত, হিমালয়ের পশ্চিমাঞ্চলে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ১৫ জুন চীন ও ভারতের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়। চীন অবশ্য তাদের সেনা হতাহতের কোনো উপাত্ত প্রকাশ করেনি। ওই সংঘাতের পর উভয় দেশ লাইন অব কন্ট্রোল-এলওসি জুড়ে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে রেখেছে। লাদাখ সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বৃহস্পতিবার সেখানে যান ভারতের সেনাপ্রধান। এক মাসের ব্যবধানে এটি ছিল ভারতীয় সেনাপ্রধানের দ্বিতীয়বার লাদাখ সফর।
খবর রয়টার্স।