কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন : নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় বালুবাহী গাড়ী যাতায়াতে ডাইভারশনের স্থানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে দু’পক্ষের লোকজন আহত হয়েছেন। দু’পক্ষের মধ্যে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এ ঘটনা দায় উভয় পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করছেন এবং ঘটনার পর বুধবার সকালে একপক্ষ এবং অপর পক্ষ গত মঙ্গলাবার সন্ধ্যায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।
দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় উপজেলা সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহীনুর আলম সাজুর পক্ষের গুরুতর আহতেরা হলেন মো. আইয়ুব আলী (৪৫), আব্দুল জলিল (৪৬)। আর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজ্জাদুর রহমানে পক্ষের টুটন সরকার (৩৮), কাজল চন্দ্র দে (৩৫), ডেলি রাণী সরকার (৩৫)। তারা সকলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলার মধ্যমবাগান এলাকায় বালুর গাড়ী পরিবহনে ডাইভারশন সংস্কার কাজ করতে একপক্ষের শ্রমিকরা গেলে এতে সদর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পক্ষের লোকজন সংস্কারে বাঁধা দেয়। পরে দুপুর ২টার দিকে উপজেলার আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমানের লোকজন কাজল চন্দ্র দে, টুটুন সরকারের নেতৃত্বে সঙ্গীয় আরো অনেকে চেয়ারম্যানের ড্রাইভারশনের টুল আদায়ের ঘরে হামলা চালায়।
এ নিয়ে চেয়ারম্যানের পক্ষে থানায় অভিযোগ দায়েরকারী জাহিদুল ইসলাম জানান, সাংসদ তিনটি ড্রাইভারশন আমাদের সহ তিনজনকে ভাগ করে দেন। বিগত দুই বৎসরের অধিক সময় ধরে ড্রাইভারশনটি আমাদের দখলে ও পরিচালনা করে আসিতেছি। ওই পক্ষের লোকজন আমাদের ড্রাইভারশনে আসিয়া প্রায় সময় চাঁদা দাবী করতো। ঘটনার দিন তুচছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে টুটন ও কাজল তাদের সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ধারালো দা, লোহার রড, রামদা, কিরিচি সহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ড্রাইভারশন ঘরে অনধিকার প্রবেশে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সে সময়ে আমিসহ আমার সাথে থাকা লোকজনদের মারতে থাকে। এতে আব্দুল জলিলের হাতে থাকা রামদা দিয়ে মো. আইয়ুব আলীকে আঘাত করলে ডানহাতের বৃদ্ধাঙ্গুলিকাটা রক্তাক্ত জখম হয়। টুটনের হাতে থাকা কিরিচ দিয়া আব্দুল জলিলের পেটে ঘাই দিতে চাইলে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বাম হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুল কাটা-চিরা রক্তাক্ত জখম হয়। আমাদের চিৎকারে আশের পাশের লোকজন আসতে থাকলে যাবার সময় তারা ক্যাশ বাক্স হতে দেড় লক্ষ টাকা নিয়ে সটকে পড়ে।
এ বিষয়ে আরেক পক্ষের আ.লীগে সাধারণ সম্পাদক মো. সাজ্জাদুর রহমান জানান, বিডারের (ইজারাদার) লোকজন ড্রাইভারশন রক্ষনাবেক্ষনের জন্য লোক পাঠিয়েছিল। জায়গাটা কালি মন্দিরের কাছে নদীর ভিতরে ডাইভারশনের আশে পাশে চেয়ারম্যানের লোকের সাথে বিডারদের তর্কবিতর্কের ঘটনা ঘটে। কালিবাড়ির যে ডাইভারশন আছে সেখানের চেয়ারম্যানের লোকজন ব্যারিকেড দিয়ে গাড়ি আটকাতে ছিল। টুটন সরকার ও কাজল সরকার তাদের বাঁধা দেয়ায় টুটন ও কাজলসহ ডলি রাণী সরকার নামে এক মহিলা গুরুতর আহত হন। ওই মহিলাকে ময়মনসিংহে সিটিস্ক্যান করানোর পর মহিলাসহ আমার পক্ষের আহত সকলে দুর্গাপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে দুর্গাপুর থানার ওসি মো. শাহ নুর এ আলম বলেন, ড্রাইভারশনকে কেন্দ্র এ ঘটনায় দুই পক্ষই অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে তিনি জানান।