কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন : ঈদের পরদিন বিয়ের দাবিতে কিটনাশক বিষ হাতে অনশনে বসেছেন এক প্রেমিকা (১৯)। এ খবর শুনে প্রেমিক বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। সোমবার বিকেল পর্যন্ত মেয়েটি উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদের হেফাজতে রয়েছে। রবিবার (২ অগষ্ট) সকাল ১১টার নেত্রকোনার উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের ধুবাওয়ালা গ্রামে প্রেমিক রুমেলের বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে এবং সে মেনু ভূঁইয়ার ছেলে।
জানা যায়, আট বছর আগে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে রুমেলের সাথে পরিচয় হয় একই ইউনিয়নের তিয়শ্রী উত্তর পাড়া গ্রামের আজিদ মিয়ার মেয়ের। পরিচয়ের পর থেকে তাদের মেধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন মন দেয়া নেয়ার পর সম্প্রতি প্রেমিক রুমেলকে বিয়ের জন্য বলে প্রেমিকা। প্রেমিকের পরিবার মেনে না নেওয়ায় প্রেমিকা রবিবার সকালে প্রেমিকের বাড়িতে এসে অনশন শুরু করে। বিয়ে না করলে কিটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করবে। পরে তা গ্রামাবসাীর মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ সময় প্রেমিক রুমেল ভূঁইয়ার বাড়িতে ভিড় জমান এলাকাবাসী।
প্রেমিকা (১৯) বলেন, গত ৮ বছর আগে থেকেই একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে তার সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পারিবারিকভাবে অবিয়ের প্রস্তাব দেয়া হলেও রুমেলের পরিবার আমাদের বিয়ে মেনে নিবে না এমন কথা বলে আসছে। সে একটি কোম্পানিতে চাকৃরি করে। শুনেছি ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসেছে। এ খবর শুনেই আমি তার বাড়িতে এসেছি। তার ঘরে প্রবেশ করতেই আমাকে তাদের পরিবারের লোকজন হেনস্তা করেছে। আমার আসার খবর পেয়েই তার পরিবারের লোকজন বাড়ি থেকে রুমেলকে পালিয়ে যেতে সহযোগীতা করেছে। রুমেলসহ তার পরিবারের লোকজন বিয়ের বিষয়টির সুরাহা না করা পর্যন্ত অনশন করবে বিলে সে জানায় এবং বিয়ে মেনে না নিলে আত্মহত্যা করবে বলে প্রেমিকা জানায়।
প্রেমিক রুমেলের বড় ভাই রাসেল জানায়, চক্রান্ত করে আমার পরিবারকে ফাঁসানো হয়েছে। বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে এড়িয়ে যান তিনি।
ইউপি চেয়ারম্যান ফখর উদ্দিন আহমেদ জানান, শুনেছি রবিবার সকালে ধুবাওয়ালা গ্রামে বিয়ের দাবিতে অনশন করেছে। বর্তমানে মেয়েটি উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যানের হেফাজতে রয়েছে বলে তিনি জানান।
মদন উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ জানান, ধুবাওয়ালা গ্রামে বিয়ের দাবিতে কীটনাশক জাতীয় বিষ হাতে নিয়ে মেয়ে অনশন করেছে। মেয়েটি আত্মহত্যা করার জন্য চেষ্টা করায় জনপ্রতিনিধি হিসাবে সেখান থেকে তাকে আমার হেফাজতে রেখেছি। বিষয়টি নিয়ে আমি নিজেও দুশ্চিন্তায় আছি এবং সে আমার হেফাজতে রয়েছে।
মদন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন জানান, অনশনের সংবাদের প্রেক্ষিতে রবিবার বিকালে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। প্রেমিকাকে অনশনে দেখলেও প্রেমিককে পাওয়া যায়নি। মেয়েটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।