একেএম ফখরুল আলম বাপ্পী চৌধুরীঃ আকাশে যত তারা আছে- সাগরে যত ঢেউ আছে- মরুভূমিতে যত বালিকণা আছে তার চাইতেও অধিক আবেগ মিশ্রিত হৃদয় নিংড়ানো ভালোলাগা থেকে যে শব্দ মুখ দিয়ে উচ্চারিত হয় তা হলো ‘মা’, এর চাইতেও বিশ্বস্ত শব্দ পৃথিবীর বুকে তৈরি হবে কিনা কারো জানা নেই। শত জনমেও প্রিয় থেকে সবার প্রিয় ‘মা’, আমার মা আমাদের মা।
মাতৃত্বের আমরণ ঋণ শোধবার নয়-
যদি তা ঋণ মনে হয়-
সে তো প্রকৃতির খেলা, ঈশ্বরের ইশারা,
বুঝে তো সেইজন- মা হয় যেজন।
সেই মা’কে যখন ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে চিরচেনা শত্রুগণ তখন জীবনের মানে হয়ে যায় রং ধনুর সাত রং। শত্রুরা হয়ে যায় মৌসুমীর কবি, একেকজন একেক উপাধিতে- বিভিন্ন রং এ রাঙ্গিয়ে দেয় কারো সাদা-কালো জীবন। অনেক সাধনায় যে জীবন সংসার তিলে তিলে সাজানো হয় মমতার আবদ্ধে শক্ত করে আগলে রাখে যে বন্ধন, সেখানে হায়েনাদের রক্ত চোখে হিংস্র ইশারায় কেঁপে উঠে সেই বন্ধন, খসে পড়তে থাকে সেই বিশ্বাস, কেড়ে নিতে থাকে একজনের কাছ থেকে আরেকজনকে, শুরু করে আপনজনদের নিয়ে শত্রু শত্রু খেলা।
মা যখন অটোফ্যাজিয়ায় ভুগছেন- (অটোফ্যাজিয়া একটি মানসিক রোগ। মানব-মস্তিষ্কে সুপ্ত অবস্থায় লুকিয়ে থাকা অন্যতম ভয়ংকর একটি মানসিক সমস্যা এটি। অটোফ্যাজিয়া মূলত এমন একটি সমস্যা, যা মানুষের বোধশক্তির তারতম্যের ওপর নির্ভর করে জন্ম নেয়। একজন অটোফ্যাজিয়া রোগীর স্থায়ী অনুভবশক্তি বলে কিছু অবশিষ্ট থাকে না। যদিও আমেরিকার মানসিক সমস্যাবিষয়ক অধিদপ্তর সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ কেস না থাকায় অটোফ্যাজিয়াকে মানসিক রোগ বলে নথিভুক্ত করেনি। এটিকে তারা অন্যান্য মানসিক রোগের লক্ষণ হিসেবেই দেখিয়ে আসছে। অটোফ্যাজিয়ার কেসগুলো প্রায় সময়ই ভয়ংকর এবং মানুষ ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গির ঊর্ধ্বে থাকে। এটি বেশি দেখা যায় বৃদ্ধদের মধ্যে। সাধারণত এদের লক্ষণসমূহ পর্যাপ্ত কাপড়-চোপড় থাকলেও ছেড়া কাপড় পড়া, অপরিস্কার থাকা, নখ কামড়ানোসহ বিভিন্ন উদ্ভট আচরণ দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রেই পরিবার স্বচ্ছল ও কোটি টাকার মালিক থাকলেও বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে অন্যের বাড়ীতে কাজ করে স্বাচ্ছন্দবোধ করে)। তখন এর প্রভাব গোটা পরিবারেই পড়বে এটাই স্বাভাবিক। সন্তানের প্রতি মায়ের গায়েবি অভিযোগ, চারপাশে চিরচেনা ব্যক্তিদের কাছে অহেতুক গুরুত্বহীন হলেও- অচেনা অনেকের কাছেই অপ্রত্যাশিত ও গুরুত্ব বহন করে , ছুটে যায় মানবতার হাত বাড়িয়ে সাহায্য করতে। যে সন্তান মাকে শতাধিক কাপড় কিনে দেয় , সে মা যখন ছেড়া কাপড় পড়ে মানুষের কাছে ফড়িয়াদ জানায় তখন সন্তানের চোখের জল ফেলা ছাড়া কিছু করার না থাকলেও – স্বার্থান্বেষী কুচক্রী প্রভাবশালী মহল এই সুযোগে স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে পরিবারকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্যে ঘৃণ্য চক্রান্তে লিপ্ত হয়।
এমনি এক অপ্রত্যাশিত প্রতিযোগিতার ক্লান্ত পথ হারা পথিক এক বিকেলে মাটি ও মানুষ সম্পাদক কার্যালয়ে – এ যেন নিজের প্রতি নিজের অভিযোগ , বলতে গিয়েও থেমে যাচ্ছিল বারবার।
২০০৬ সালে ডিবি ভিসা পেয়ে আমেরিকায় পাড়ি জমানো – ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার কদমরসুলপুর গ্রামের মরহুম খন্দকার হাবিবুর রহমানের মেয়ে হাবিবা খাতুন মুন্নী অশ্রুসিক্ত চোখে দীর্ঘ সময় নিয়ে বলে যাচ্ছিল মনের গহীনে জমা থাকা না বলা কথা গুলো।
হাবিবা খাতুন মুন্নী স্বার্থান্বেষী কুচক্রী প্রভাবশালী মহলের চক্রান্তের শিকার হয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে “মেয়ের বিরুদ্ধে দেশে বিদেশে নির্যাতনের অভিযোগ মায়ের” শিরোনামে ছাপানো হয় কিছু অনলাইন মিডিয়ায়। সংবাদে উল্লেখিত যে, তথ্য প্রকাশ করা হয়েছিল তা সম্পূর্ন ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে এর প্রতিবাদ জানায় হাবিবা খাতুন মুন্নী। পরিবারের মাঝে ভাঙ্গনের সৃষ্টি ও মান-সম্মান হানির ভয়ে নিঃস্তবদ্ধতায় জীবনযাপন করছেন তিনি।
হাবিবা খাতুন মুন্নী গত ২ শে জুন ২০২০ তারিখে দৈনিক আমাদের কণ্ঠ পত্রিকা, ক্রাইম সিলেট.কম, সংবাদ গ্যালারী.কম, ময়মনসিংহ টাইম.কম, স্বাধীন নিউজ২৪.কম, আবিদুর রহমান ফেইস বুকসহ বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় “মেয়ের বিরুদ্ধে দেশে বিদেশে নির্যাতনের অভিযোগ মায়ের” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে যেভাবে প্রতিবাদ করেন-
হাবিবা খাতুন মুন্নী বলেন, আমি আমেরিকায় যাওয়ার পর অসহায় মা ও ভাই-বোনদের কথা চিন্তা করে মাকে আমেরিকায় নিয়ে যাই। দীর্ঘ দিন যাবৎ মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগতে থাকা আমার মা আমেরিকার পরিবেশের সাথে খাপখাওয়াতে না পেরে শিশুদের মতো আচরণ করতে শুরু করেন। মা দেশের ভাই-বোনদের ও বাবার ভিটেমাটির টানে নিজেই আসার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েন। তারপর আমি নিজেই মাকে দেশে নিয়ে আসি।
সংবাদটিতে আমার মায়ের ৪টি দাঁত ভেঙ্গে ফেলারও অভিযোগ আনা হয়েছে যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমি আমেরিকা থাকা অবস্থায় ছেলেদের অত্যাচারে মা শিবগঞ্জ দ্বীপপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ফেরদৌসীর বাসায় আশ্রয় থাকা অবস্থায় দাঁতের ইনফেকশন জনিত কারণে ডাক্তারের পরামর্শক্রমে দাঁত উঠানো হয়। যা প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমি আমার মা’কে জিম্মি করে ছোট ভাই খন্দকার আবিদুর রহমান আকিবের কাছ থেকে ৫ কাটা জমি লিখে নেয় যা সম্পূর্ন ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমি আমেরিকায় থাকা অবস্থায় ভাইদের ও মায়ের কাছ থেকে ৭৩ শতাংশ জমি ক্রয় করেছিলাম। যার দলিলপত্রাদি রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমার মা আয়েশা হাবিব বিলকিছ গফরগাঁও থানায় আমার নামে অভিযোগ দায়ের করেন যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। মূলত ২৩.০৬.২০২০ তারিখে ৭৩৭ নং অভিযোগে আমার মা আমার দুই ভাই খন্দকার ফখরুদ্দিন কল্লোল ও খন্দকার মোখলেছুর রহমান এবং ভাই বৌ মোছাঃ খুরশিদা খাতুনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। মূলত মায়ের মানসিক সমস্যার কারণে মা আমার ভাইদের নামে একাধিকবার মামলা ও অভিযোগ দায়ের করেছে। প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধেও মা অনেক সময়ই অনেক অভিযোগ ও মামলা দায়ের করে থাকেন, যার প্রমাণাদি সরেজমিনে গেলেই পাওয়া যাবে। বর্তমানে এক কুচক্রী মহল আমার মানসিক ভারসাম্যহীন মাকে ঢাল বানিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাদের পরিবারকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে।
গফরগাঁও থানার এসআই আবু বক্কর সিদ্দিকের সাথে ১ মাসে ৮০০ বার কথা বলার বিষয়টিকে হাস্যকর ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে তিনি বলেন, অভিযোগের তদন্তের স্বার্থে আমি ও আমার স্বামী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন তথ্যাদি ও সমস্যা নিয়ে কথা বলে থাকি। আমি কথা বলতাম আমার ছোট ভাই খন্দকার আবিদুর রহমান আবিদের নামে নিবন্ধিত সিমটি দিয়ে।
হাবিবা খাতুন মুন্নী বলেন, ত্রিশালের একটি বাসা ভাড়া নিয়ে একা বসবাস করি এবং গফরগাঁও থানার এসআই আবু বক্কর সিদ্দিক প্রতিনিয়ত এই বাসায় যাতায়াত করত এমন তথ্য সংবাদে প্রকাশ করা হয়েছে, যা সম্পূর্ন ভিত্তিহীন বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। একটি থানার কর্তব্যরত এসআই সময় মেইনটেইন করে দায়িত্ব পালন করেন। সংশ্লিষ্ট থানার উপস্থিতির নথিপত্র তদন্ত করলেই সত্য ঘটনা উদঘাটিত হবে।
হাবিবা খাতুন মুন্নী বলেন, আবিদের ৯ মাস বয়সে আমার বাবা মারা যায়। তারপর থেকে আমি আমার ছোট ভাইয়ের দেখাশোনা ও পড়াশোনার খরচ বহন করে থাকি। ঢাকা কমার্স কলেজে এইচএসসি’র সময় (১৪/০২/২০১৬) এককালীন ৬ লক্ষ টাকাসহ এ পর্যন্ত পড়াশোনার জন্য প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা খরচ বহন করি, যা মানি ট্রান্সফার রিসিপ্টসহ বিদ্যমান।
প্রকৃত ঘটনার কথা উল্লেখ করে হাবিবা খাতুন মুন্নী বলেন, ২০০৬ সালে ডিবি ভিসায় আমেরিকায় যাওয়ার পর একটি ভাল চাকরি করি। তখন গ্রামে থাকা আমার অসহায় মা ও ভাই-বোনদের চিন্তা করে তাদের উন্নতির জন্য মাসে মাসে আমি ও আমার স্বামী টাকা পাঠাই। আমার কাছে আমার ভাইয়েরা জমি বিক্রি করতে চাইলেও আমি প্রথমে জমি ক্রয়ে অস্বীকৃতি জানাই। পরবর্তিতে অন্যজনের কাছে জমি বিক্রি করতে চাইলে পৈতৃক সম্পত্তি রক্ষার স্বার্থে আমি ৭৩ শতাংশ জমি ক্রয় করি। তবে আমার ভাই-বোনদের আর্থিক সাহায্য ও স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনাই ছিল আমার মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমি তা আমার নামে দলিল করি। এ পর্যন্ত আমি আমার পরিবারকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা দিয়েছি যার মধ্য থেকে তৎকালীন ১২ কাঠা জমি (কাঠা প্রতি ৪০০০০/- টাকা, এবং ৩ কাঠা ১৫০০০০/- টাকা) ক্রয় করে ছিলাম। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমি আমার সম্পত্তি দখলদারিত্ব ও বিক্রি করতে চাইলে এলাকার কিছু স্বার্থান্বেশী কুচক্রী মহল ভাইদেরকে নিয়ে ষড়যন্ত্রের শিকার আমার ভারসাম্যহীন মাকে দিয়ে ভাই-বোনদের নামে মিথ্যা অপবাদ ও এমনকি আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ আনে। অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মোকদ্দমার বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুন্দরভাবে নিষ্পত্তি করেন। তারপরও থেমে নেই তারা, একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ ও হুমিক দিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২৬ জানুয়ারী ২০১৮ সালে বড় ভাই খন্দকার মোখলেছুর রহমান জুলফিকার মাকে মারধর করে গফরগাঁও থানার তৎকালীন ওসি আহাদের নির্দেশনায় গ্রেফতার হয়েছিলো।
তিনি বলেন, আমার উপর মানহানি ও আপত্তিকর অভিযোগের আইনি বিচারের দাবি করছি।