পুর্বময় ডেস্কঃ ত্রিশালের আরাফাতের মৃতদেহ ৪২ দিন পর্যন্ত হিমঘরে পড়ে ছিল। করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ায় দাফন করতে নিতে রাজি হয়নি তার পিতা। অবশেষে ময়মনসিংহের এপেক্স ক্লাব অব ব্রহ্মপুত্র ও হেল্প প্লাস এর আর্থিক এবং সার্বিক সহযোগিতায় ও গতকাল ৪ জুন বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে মৃত্যুর ৪২ দিন পর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিম ঘরে থেকে আরাফাতের লাশ তার দরিদ্র পিতা মজনু মিয়া ( রাজমিস্ত্রি) গ্রামের বাড়ি ত্রিশাল নিয়ে গেছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন এপেক্স ক্লাব অব ব্রহ্মপুত্র এর সভাপতি ও সুজন মহানগরের সাধারণ সম্পাদক কবি আলী ইউসুফ ও সাফরান আহমেদ । হেল্প প্লাস ময়মনসিংহ সংগঠনটি আনুমানিক দেড় বছর যাবত বেওয়ারিশ মৃতদেহ এর দাফন কাফনের ব্যবস্থা করে আসছে। এ পর্যন্ত তারা প্রায় ১৪ টি বেওয়ারিশ নামবিহীন মৃতদেহ এর দাফন কাফনের ব্যবস্থা করেছে।
গতকাল ৪ জুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে এপেক্স ক্লাব অব ব্রহ্মপুত্রের সভাপতি ও হেল্প প্লাস ময়মনসিংহের সাফরান আহমেদ কে ট্যাগ করে পোষ্ট দেয় একজন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে ৪২ দিন আরাফাতের লাশ রাখার পর ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার চড়ুইতলা গ্রামের মৃতের বাবা মজনু মিয়া বুধবার ৩ জুন পুলিশকে লিখিতভাবে জানান, ছেলের লাশ গ্রহন করবেন না।
আবেদনে মৃতের বাবা উল্লেখ করেন পরিবার এবং এলাকাবাসীর নিরাপত্তার কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ফিরোজ তালুকদার জানান ধর্মীয় নিয়মানুযায়ী বৃহস্পতিবার নগরীর ভাটিকাশর গোরস্থানে লাশ দাফন করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়।
এ খবরে পেয়ে ময়মনসিংহ সামাজিক সংগঠন এপেক্স ক্লাব অব ব্রহ্মপুত্র ও হেল্প প্লাস নেতৃবৃন্দ এগিয়ে আসে । এ সংবাদ জানার সাথে সাথেই ছুটে যান সংগঠনের দুজনসহ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক। মৃত আরাফাতের বাবার সাথে ফোনে কথা বললে সে জানান, আর্থিক ও সামাজিক কারণে সন্তানের লাশ নিতে রাজি হয়নি।
আলী ইউসুফ এব্যাপারে ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র আনিসুর রহমানের সাথে কথা বলে সামাজিক আতংক দুর করতে তার সহযোগিতা কামনা করেন। এক পর্যায়ে মেয়র এবং বৈশাখি টেলিভিশন এর ময়মনসিংহ প্রতিনিধি দাফন কাফনের সহয়োগিতা করতে রাজি হন এবং এপেক্স ক্লাব অব ব্রহ্মপুত্র ও হেল্প প্লাস ময়মনসিংহ এ সংগঠন ২টি আর্থিকভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দিলে আরাফাতের দরিদ্র বাবা লাশ নিতে রাজি হয়।
কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার ও দাফন কাফনের দায়িত্বপ্রাপ্ত এস আই আনোয়ার হোসেন সার্বিক সহযোগিতায় লাশ বাবা হাতে
হস্তান্তর করা হয়। লাশ বহনকারী গাড়ির ভাড়া ও দাফন কাফনের খরচ বহন করে উল্লেখিত ২টি সংগঠন । এসময় উপস্থিত ছিলেন এপেক্সিয়ান আশরাফ উদ্দিন এবং
Help plus Mymensingh এর সদস্য ইলিয়াস হোসাইন
উল্লেখ্য গত ২০ এপ্রিল ময়মনসিংহ নগরীর এস কে (সূর্য্য কান্ত) হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়ে দুই দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আরাফাত হোসেন (১৭) নামের ঐ কিশোর।
মৃত্যুর পর নমুনা পরীক্ষায় আরাফাতের শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। কিন্ত তার পরিবারের লোকজন লাশ নিতে আসেনি।