কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন : নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে করোনা নিয়ে তৃতীয় ব্যাক্তির মৃত্যুর পর পাওয়া গেছে করোনা পজেটিভ রিপোর্ট। তিনি গত কিছুদিন ধরে অসুস্থ হয়ে গত ৩১ জুন নিজ বাসায় মারা যান। মৃত্যুর পর পরিবার ও আশপাশের মানুষের সন্দেহ হলে মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মীরা নমুনা সংগ্রহ করে লাশ দেশের বাড়ি কিশোরগঞ্জ দাফনের জন্য পাঠায়।
এদিকে গত ২ জুন মৃত ব্যাক্তি (৬৫) সহ পরিবারের আরো দুইজনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। ওই ব্যাক্তি মোহনগঞ্জ উপজেলায় ব্যাবসা করে এখানেই পরিবার নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বসবাস করতেন। গত ৩১ মে তিনি করোনা উপস্বর্গ নিয়ে মারা যান। এ দিনেই মোহনগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শহীদ ইকবাল বিষয়টি অবগত হয়ে স্বাস্থ্য কর্মীদের খবর দিলে তারা গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেন। পরে ২ জুন রিপোর্ট আসলে সরকারিভাবে তা প্রকাশ করা হয়।
এদিকে জেলার মোহনগঞ্জের টেঙ্গাপাড়ায় আত্মীয়ের বাসায় এসে গত ৮ মে গৌরাঙ্গ (৪৫) নামের এক ব্যাক্তি মারা গেলে নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য বিভাগ। পরবর্তীতে ১২ মে সেই রিপোর্ট পজেটিভ আসলে মৃতের স্বজনদেরকে কোয়ারেনটাইনে রাখা হয়। মৃত গৌরাঙ্গ গাগলাজুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। কিন্তু হবিগঞ্জ সহ বিভিন্ন এলাকায় ফেরি করে জিনিস পত্র বিক্রি করে জীবন চালাতেন। স্বর্দি জর কাশি নিয়ে ৭ মে অসুস্থ হয়ে মোহনগঞ্জ আত্মীয়ের বাড়িতে এসে আশ্রয় নিলে পরদিন রাতে তিনি মারা যান।
অন্যদিকে জেলার মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী গ্রামের বৃদ্ধা ফুলতারা (৬০) অসুস্থ হয়ে নারায়ণগঞ্জ ছেলে মেয়ের কাছ থেকে ৯ মে নিজ গ্রামে আসেন। পরদিন ১০ মে সকালে মারা গেলে স্বাস্থ্য কর্মীরা খবর পেয়ে নমুনা সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে ১৪ মে জানা যায় বৃদ্ধা করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।
এদিকে গত আড়াইমাস ধরে গতকাল ২ জুন পর্যন্ত জেলায় মোট শনাক্ত পাওয়া গেছে ২৫৫ জন। তারমধ্যে মৃতের সংখ্যা ৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন মোট ৮৩ জন। নেত্রকোনা সিভিল সার্জন ডা. মো. তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২ জুন নতুন আক্রান্তরা হচ্ছে, কেন্দুয়ায় স্বাস্থ্যকর্মীসহ ২ জন, বারহাট্টার বৃ-কালিকায় ১ জন, সদরের পুলিশ লাইনে ১ জন এবং খালিয়াজুরী উপজেলায় ১ জন ডাক্তার।
এছাড়া এ পর্যন্ত পরীক্ষাগারে নমুনা প্রেরণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৯শ টি। রিপোর্ট পাওয়া গেছে ৩ হাজার ৬ শ ৭৮টি।
অন্যদিকে মাঝখানে বেশ কিছুদিন নমুনা পরীক্ষা হয়নি। তাছাড়া সদর হাসপাতালে এখন লাইন ধরতে হয় বলে অনেকেই আক্রান্ত হবার ভয়ে যান না নমুনা দিতে।
এছাড়াও লক ডাউনের পর থেকেই পুর্বধলাসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় করোনা উপস্বর্গ নিয়ে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।
মোহনগঞ্জের মল্লিকপুর গ্রামের এক বৃদ্ধ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনেই বিনা চিকিৎসায় মারা যান। সকাল থেকে ফেলে রেখে যায় স্বজনেরা। এ নিয়ে ফেইসবুকে ভাইরাল হয় বিষয়টি। পরবর্তীতে রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
তারমধ্যেই লক ডাউন তুলে দেয়ায় নেত্রকোনাবাসী এখন অজানা আতঙ্কে রয়েছেন সকলেই।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলের নির্দেশ দিলেও সরকার মানছেনা বেশির ভাগই। আর তাদের জন্য আক্রান্ত বেড়ে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।