গোরাদিঘা কবরস্থান- উন্নয়ন বঞ্চনার আরেক নাম

মোঃ হেলাল উদ্দিন , নিকলী (কিশোরগঞ্জ ) প্রতিনিধি ঃ কিশোরগন্জের হাওর উপজেলা নিকলীর প্রত্যন্ত গ্রাম গোরাদিঘা।বিস্তীর্ন হাওরের বুকে জেগে উঠা দুর্গম একটি দ্বীপ গ্রাম গোরাদিঘা।উপজেলার সিংপুরর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড।দুর্গম এ গ্রামটিতে প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষের বাস।সাধারনত কৃষি ও মৎস জীবি পেশা নির্ভর প্রান্তিক জনগোষ্ঠী।
অতি সাধারন জীবন যাপনেও তাদের পোহাতে হয় নানাবিধ সমস্যা।ভরা বর্ষায় হাওরের প্রতিকূল পরিবেশে অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম চলছে যুগ যুগ ধরেই।শিক্ষা,চিকিৎসার মতো মৌলিক চাহিদাগুলো এখানে অনেকটাই চ্যালেন্জিং।
প্রাসঙ্গিক বিষয় কবরস্থান।গোড়াদিঘা গ্রামের সাড়ে সাত হাজার মানুষের অনন্ত ঠিকানা একটিমাত্র কবরস্থান।গ্রামের বয়োবৃদ্ধদের সাথে কথা বলে জানা গেছে-কবরস্থানটি প্রায় শত বছর আগে গ্রামবাসীর উদ্যোগে প্রতিষ্টা করা হয় ঘোরাউত্রা নদীর তীরে।প্রায় দু’একর জমি নিয়ে শত বছর ধরে এই কবরস্থান।জমির দাতাও ছিলেন গ্রামের অতি সাধারন মানুষগুলো।তাদের যৌত জমিদানেই প্রতিষ্টিত।
কবরস্থান প্রতিষ্টার শত বছর পেড়িয়ে গেলেও তাদের বঞ্চনার ইতি ঘটেনি।আজো বর্ষা মৌসুমে গ্রামের কেউ মারা গেলে মরদেহ কবরস্ত করতে পাড়ি দিতে হয় প্রায় ৫কিঃমিঃ দূরের দামপাড়া কবরস্থানে।আবহাওয়া খারাপ থাকলেতো দুর্গতি অন্তহীন।
সিংপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার আঃ রউফের সাথে কথা বলে জানা গেছে-নিকট অতীতেও মরদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হতো নিরুপায় হয়ে।ছোট শিশুদের মরদেহের ক্ষেত্রে প্রতিকূল আবহাওয়ায় এমনই হয়েছিল।তিনি বলছিলেন,জনপ্রতিনিধি হয়েও শেষ ঠিকানাটা আজো কোন সরকারী বরাদ্দের ব্যাবস্থা হয়নি।যদি মাঠি ভরাট করে কবরস্থানটি উঁচু করা যায় তবে এই সাড়ে সাত হাজার মানুষের অন্তত শেষ ঠিকানাটা নিশ্চিত হতো।
সিংপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হক জানান,তিনি নির্বাচিত হওয়ার প্রায় চার বছরে এই কবস্থানের কোন অনুদান পাননি।তবে ২০১৯ সালে একটি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার অনুদানে কবরস্থানের প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মান করেছে এনজিওটি।
গ্রামবাসী আক্ষেপ করেই বলেন-সারাদেশে উন্নয়নের স্বর্নযুগেও তাদের কবরস্থানটির কোন উন্নয়ন হয়নি।ছয়মাস পানির নিচে থাকায় লাশ নিয়ে দৌড়াতে হয় দুরদুরান্তে।প্রিয়জনের কবর জিয়ারতের সুযোগও থাকেনা তাদের নসিবে।
গ্রামের সাড়ে সাত হাজার মানুষের প্রানের দাবী, গোরাদিঘা কবরস্থানটি সারা বছর ব্যাবহার উপযোগী করার ব্যাবস্থা করুন।