কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন : করোনাভাইরাস মহামারির জন্য থমকে আছে জীবন ও জীবিকা। গোটা পৃথিবী জুড়েই এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। এ দেশে প্রথম করোনা ভাইরাস সনাক্ত হয় ৮ই মার্চ। এরপর থেকে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আহবানে সাড়া দিয়ে ভয়াবহ এই মানবিক বিপর্যয়ে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী।
করোনা যুদ্ধে তারা কাজ করছে ফ্রন্টলাইনার হিসেবে। বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল কাজী শরীফ কায়কোবাদ এনডিসি, পিএসজি, জি এর নির্দেশে নেত্রকোনা জেলা আনসার ভিডিপি করোনা দুর্যোগের শুরু থেকেই বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে গণমানুষের কল্যাণে।
অসহায়দের সহায়তা করা, দরিদ্র, দুঃস্থ- নিঃস্ব মানুষের পাশে নিঃস্বার্থভাবে দাড়ানো, এসবের পিছনে উজ্জীবিত করার কারিগর যে মানুষটি তিনি হলেন নেত্রকোনা জেলার জেলা কমান্ড্যান্ট (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও ৬ আনসার ব্যাটালিয়নের পরিচালক জনাব মো. জিয়াউল হাসান।
করোনা মোকাবিলায় শুরু থেকেই নেত্রকোনার গণমানুষের কল্যাণে সর্বদাই মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন মানবতার এ ফেরিওয়ালা। তাঁর নিরলস প্রচেষ্টা ও অবিরাম অনুপ্রেরণায় জেলার প্রতিটি আনসার ভিডিপি সদস্য করোনা দুর্যোগকালীন সময়ে নিজের জীবন বাজি রেখে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করা, মানুষকে সরকারি আদেশ মেনে চলতে উদ্ধুদ্ধ করা, অসহায় দুঃস্থ মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরন করাসহ দরিদ্র কৃষক কৃষাণীদের শ্রমিক সংকটে ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কাজ অত্যন্ত মানবিকতার সাথে করে চলেছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় আবারো মানবতার হাত বাড়িয়ে দিলেন তিনি। জেলা কমান্ড্যান্ট (অতিরিক্ত দায়িত্ব) পরিচালক মো. জিয়াউল হাসানের অনুপ্রেরণায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত সকল স্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী, আনসার ভিডিপির সদস্য সদস্যদের স্বেচ্ছায় প্রদত্ত টাকা দিয়ে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে বুধবার জেলা কার্যালয় প্রাঙ্গণে মানবিক এ উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।
জেলা কার্যালয়ের আশেপাশে অবস্থিত দরিদ্র, দুঃস্থ ও অসহায় মানুষ যারা এখনো কোনো ত্রাণ সহায়তা পাননি এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত যারা কারো কাছে ত্রাণ সহায়তা চাইতে ইতস্তত বোধ করেন, তাদেরকে খুঁজে বের করে যাচাই বাছাই করে তালিকা প্রস্তুত করা হয়। যাতে প্রকৃত অসহায় মানুষ মানবিক এ সহায়তা পেতে পারে।
নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ৫ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি মসুর ডাল, ১ লিটার তেল, ১ কেজি পেঁয়াজ, ১ কেজি চিনি, ১ প্যাকেট সেমাই ও ১ টি সাবান।
মানবিক এ সহায়তা সামগ্রী প্রদানকালে পরিচালক মো. জিয়াউল হাসান বলেন, প্রানঘাতি করোনাভাইরাসের সংক্রমনের ফলে দরিদ্র অসহায় মানুষ অনেক কষ্টে তাদের দিনকাল পার করছে। সামনে ঈদুল ফিতরের দিন আমরা কমবেশি ভালোমন্দ খাবো কিন্তু আমাদের প্রতিবেশী দরিদ্র দুঃস্থ মানুষ কিংবা নিম্ন মধ্যবিত্ত যারা কারো কাছে কিছু চাইতে পারে না তারা না খেয়ে থাকবে তা আমরা হতে দিতে পারি না। বাহিনীর সম্মানিত মহাপরিচালক মেজর জেনারেল কাজী শরীফ কায়কোবাদ এনডিসি পিএসজি জি মহোদয়ের সদা মানবিক অনুপ্রেরণায় ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতেই আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। আশাকরি আমাদেরকে দেখে সমাজের বিত্তবান মানুষ অসহায়দের সহযোগিতায় এগিয়ে আসবেন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী জেলা কমান্ড্যান্ট মো. মিজানুর রহমান, সার্কেল এডজুট্যান্ট মো. মনিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা শাহ মোফাচ্ছেল হক সহ বিভিন্ন স্তরের আনসার ভিডিপি সদস্য সদস্যাবৃন্দ।