আজ ১৯ মে ২০২০ খ্রি: মঙ্গলবার সম্মিলিত পর্যটন জোটের সাথে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ৫র্থ জুম মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মিটিংয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সালাউদ্দিন মাহমুদ এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাবেদ আহমেদ। অন্যান্যদের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ব বিভাগের শিক্ষক প্রফেরস ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. এনায়েত হোসেন এবং ভারতের হুগলি জেলার বেঙ্গল স্কুল অব টেকনোলজি এন্ড ম্যানেজমেন্ট-এর অর্থনীতি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক অপালা ঘোষ উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশ নেন। ’পর্যটনকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করার তাৎপর্য ও প্রসঙ্গকথা’ শীর্ষক মিটিং পরিচালনা করেন সম্মিলিত পর্যটন জোটের আহবায়ক ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোখলেছুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালাউদ্দিন মাহমুদ সম্মিলিত পর্যটন জোটের এই আয়োজনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, যুক্তিসহ আবেদন করলে পর্যটনকে অবশ্যই শিল্প হিসেবে ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন পৃথিবীর অনেক দেশেই পর্যটন শিল্পের মর্যাদা লাভ করেছে। ভারত, নেপাল ও মালদ্বীপের পর্যটন খাত যেভাবে বিদেশি পর্যটকদেরকে আকর্ষণ করছে, আমাদেরও সেই সুযোগ আছে। শিল্প হিসেবে ঘোষণা করা হলে আমাদের পর্যটন অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়ে যেতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য যে, ১৯৯৯ সালে শিল্পনীতিতে পর্যটনকে প্রথমবারের মতো অত্যাবশ্যকীয় খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও অদ্যাবধি একে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করা হয় নাই।
জাবেদ আহমেদ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন যে, ১৯৯২ সালের পলিসিতে পর্যটনের কথা উল্লেখ থাকলেও অদ্যাবধি কেন এটি শিল্প নয়, তা অবশ্যই শিল্প মন্ত্রণালয় পরীক্ষা করে দেখবেন এবং সেমতো ব্যবস্থা নিবেন। তিনি করোনাসংকট মোকাবেলার অংশ হিসেবে পর্যটন কর্মীদের জন্য অনলাইন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বলে জানান। তিনি আরো জানান যে, প্রান্তিকশ্রেণির পর্যটন কর্মীরা এখন সবচেয়ে অসহায় অবস্থা দিনযাপন করছে। এ প্রসঙ্গে তিনি নিয়োগকারীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন যে, আপনার দক্ষ কর্মীদেরকে ছাঁটাই করবেন না। বেতনের অংশবিশেষ দিয়ে হলেও ধরে রাখুন। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড আইনের দূর্বলতার কথা উল্লেখ করে এর সংশোধনের জন্য স্কলার্স এবং অন্যান্যদের নিকট থেকে মতামত আহবান করেন।
প্রফেসর ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন যে, গবেষণার পাশাপাশি একটিভিস্ট হয়েছি। প্রত্নতত্বকে পর্যটনের সাথে যুক্ত করতে হবে। পর্যটকদের সুভেনির হিসেবে দেওয়ার জন্য তারা বেশ কিছু রেপ্লিকা তৈরি করেছেন বলে জানান।
প্রফেসর ড. মো. এনায়েত হোসেন বলেন যে, পর্যটনকে আগে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করা হলে এখন করোনাকালীন সংকটে সরকারের প্রণোদনা পাওয়া বা কর্মীদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা সহজ হতো। তিনি আরো বলেন, যে কোন সংকটে পর্যটনখাত সর্বাগ্রে ক্ষতির মুখে পড়ে। তাই এই সেক্টরের কর্মীদের রক্ষার জন্য সর্বনিম্ন মজুরি ধার্য করা প্রয়োজন।
অপালা ঘোষ করোনা সংকটে ভারতের পর্যটন কতটুকু ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তার চিত্র তুলে ধরে বলেন, একে রক্ষার জন্য গ্রাম পর্যটনকে সর্বাগ্রে বেছে নিতে হবে। করোনা মোকাবেলার অংশ হিসেবে স্থানীয় পর্যটনকে নিয়ে কাজ করতে হবে। তাতে করে স্থানীয় জনগোষ্ঠী কাজ ও আয়ের পথ খুঁজে পাবে। তিনি পর্যটনের বহুমুখিতা সৃষ্টি করা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যটনকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের গুরুত্ব দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, শহীদুল ইসলাম সাগর, জয়িতা শেখ, মাসুদুল হাসান জায়েদী, কিশোর রায়হান প্রমুখ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি