কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন : ধর্ষণের ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালাতে নিহত কিশোরীর মাকে জোর করে স্বাক্ষর করানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে অভিযোগ অস্বীকার করেন মোহনগঞ্জ থানার ওসি।
গত ৯ মে গৃহকর্মী মারুফা আক্তার (১৪) মারা যাওয়ার দুদিন পর ১১ মে হত্যা মামলা নেয় মোহনগঞ্জ থানার পুলিশ। মামলার প্রেক্ষিতে রাতেই অভিযুক্ত নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার ৬ নং সিংধা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মাহবুব মোর্শেদ কাঞ্চনকে আটক করে ১২ মে কোর্টে সোপর্দ করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যান কাঞ্চনের মোহনগঞ্জ বাসায় কিশোরী গৃহকর্মী মারুফা আক্তার (১৪) আত্মহত্যা করার প্রচার চালিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান চেয়ারম্যান নিজেই। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা অধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এসময় তার শরীরের বিভন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন দেখে স্থানীয় ও স্বজনদের মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনার পর ধর্ষণ ও হত্যা মামলা না নিয়ে উল্টো মেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে সই নেয়ার চেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ করেন মারুফার মা আকলিমা আক্তার। তিনি আরো বলেন তাকে উল্টো পুলিশ পাহাড়ায় সারারাত রেখেছে। তার মেয়ে শিশুটিকে পাশবিক নির্যাতন করে মারার উপযুক্ত বিচার চেয়েছেন তিনি। চেয়ারম্যান একাধিক মানুষ নিয়ে এই নির্যাতন চালিয়ে শিশুটিকে হত্যা করেছে বলেও অভিযোগ মায়ের।
কিশোরী মারুফা আক্তার (১৪) চেয়ারম্যানের বাড়ির পাশের আলী আকবরের মেয়ে। গত দুই বছর পূর্বে এ বাসায় কাজ করতে আসে। কিশোরির মা আকলিমা আক্তার চেয়ারম্যানের ছেলের ঢাকাস্থ বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করেন।
মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. আব্দুল আহাদ খান বলেন, এমন কথা সত্য নয়। আমি অনেক আন্তরিক। মেয়ের মাকে আমরা আরো ডেকে এনেছি। লাশ নিয়ে ময়নাতদন্ত করতে দিয়েছি। লাশ দাফন করেই মামলা করতে বলা হয়েছিল। তবে হত্যা মামলায় চেয়ারম্যান একজনই। আসামী অন্যরা অজ্ঞাত বলে জানান ওসি। তিনি আরো বলেন আমরা আসামীকে গ্রেফতারও করেছি। সেইসাথে মঙ্গলবার কোর্টে পাঠানো হয়েছিলো। পরবর্তীতে আমাদের কাছে কোন অর্ডার আসেনি।
নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মো. একরামুল হাসান জানান, সকল আলামত রাখা হয়েছে। এছাড়া ডিএনএ টেষ্ট করতে পুলিশকে বলা হয়েছে। সবগুলো রিপোর্ট আসলে বলা যাবে।