পূর্বময় ডেস্কঃ
করোনায় আমাদের চোখ খোলা, বন্ধ হৃদয় দুয়ার ।যেন ভয় পাচ্ছি ভীষণ! একা একা মরে যাবার ভয়।কেবল নিজের জন্যে মায়ায় আকুল-ব্যাকুল, শঙ্কায় মরি মরি..স্তম্ভিত হাহাকার..।তবুও যে বুকের ভেতর করুণা নেই, মমতা নেই,করোনার আলোড়ন নেই কোথাও কোন।পৃথিবীর প্রাণিজগতের ঐতিহাসিক মানবকুলের এখনও যে পূর্ণতা আসেনি সেরা হবার।যদিও কেবল দাবিদার শুধু বিজ্ঞাপন চিত্রের পোশাখী অভিনবত্বে ।এই মানুষই মানুষের বিপন্ন মুহূর্তগুলোও দিব্যি পুঁজি করছে সভ্যতায়,বাজারে-বেসাতে।তাতে মানুষই মুলত পণ্য-দ্রব্য, বাজার অর্থনীতির খাঁটি হাতিয়ার।
কেবল বাঁচি বাঁচি আমি; আমার-আমিত্বের প্রদর্শন। এবং আস্ফালন ব্যক্তি আর রাষ্ট্রের অন্ত-আন্ত কূটনীতিতেও বেহাল মরণদশায়। মৃত্যুর পর কেউ আসেনি ফিরে, আসবেওনা কখনও,তবুও তার, তাদের চাই চাই, খাই খাই, লুটপাট,দখল,ডাকাতি, চুরিচামারি, বাটপারি, প্রতারণা অব্যাহত। যেন আসবোই ফিরে, লাগবেই সবটুকু,সব।দুই হাজার বিশে বিশ্বজনীন মহাসঙ্কটের নাম করোনা।ভাল-মন্দ-বিপর্যয়-টিকে থাকার সূচক এখন ‘করোনা’।এই জেরবার উপত্যকায় দাঁড়িয়েও এরা মত্ত পুজিবাজারের বিরূপ খেলায়। করোনার সাথে মানুষের ক্ষুধার এক জমজ সম্পর্ক।ঘরে খাবার নেই,পথে খাবার,পথে আছে তো পথের বাধন।পথে পথে করোনার মায়াজাল..! কোথায় গেলে পাবো তারে- দিশাদার তো পেশাদার। পেশাদারের ধর্ম জটিল! সে রাষ্ট্রের কথায় যেমন চলে,তেমনি কায়দা-কৌশলে রাষ্ট্রকেও নিয়মের নামে অনিয়মে চালাতে পারে! রাষ্ট্র পক্ষতো তাই এক বা একাধিক..। আর ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণের আদিম মারণাস্ত্র।এই নিয়ে বিশ্ব রাজনীতি শিশু-নারিকেই করেছে সীমাহীন যুদ্ধ- দাঙ্গা আর শ্রমবাজারের স্টেটেজিক ল’তে। এ নিয়ে চলে দারুণ কারবার। শুধু মুনাফাই এর শেষ কথা নয়; এর সাথে যুক্ত আরও নানারকম ফ্যাক্টর-ফ্যাকাল্টি। দাসত্ব-নিপীড়ন-বশীকরণ, আসন-বশন আরও কতো কী! মোটা দাগে জীবন-জীবিকা-মানুষের বেঁচে থাকায় উপেক্ষিত মানবিকতা।প্রণোদনা কোন বৈষম্যহীন সমাধান নয়।যা একপেশে অন্ধ করোনার মতো। কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের ভিত তৈরি না হলে তা প্রার্থিত খাতে বাস্তবায়নেরও কোন সুযোগ নেই। যা শুধু আওয়াজেই শোনা যাবে, বাস্তবে নয়।এতে যতটুকু হবে তার বড় অংশ মিসিউজ, অপরিকল্পিত ব্যয় এবং লোপাটে চলে যাওয়াই স্বাভাবিক । জীবন ও জীবিকায় পরাভূত মানুষের সংখা প্রতুল। করোনাকালে অস্থির, অনিশ্চিত সমুহ মানুষের জীবনযাত্রা। বহু প্রান্তজনের ধ্বনিত কণ্ঠ- ‘করোনা বলে কিছু নাই। ক্ষুধারেই বুঝি আসল করোনা ।মরবো তো ক্ষুধয়ায়, করোনায় না।’ তাদের কাছে করোনা যেন রূপকথার সেই মিথ্যাবাদী রাখালের সেই গল্প! কিন্তু না, এ যে জীবন সংগ্রামের ভয়াবহতায় উৎসারিত এক দিশাহীন সঙ্কটে পতিত প্রেক্ষাপটের বাস্তবতা।
তাদের এই কর্ম ও রোজগারহীন জীবনের সাথে জড়িয়ে আছেন পরিবার-পরিজন।করোনা পরিস্থিতি দীর্ঘ হলে বিপর্যয় আরও বাড়বে। তাই প্রতীকী
সাহায্য কিংবা সামান্য খাবার নয়, পরিকল্পিত এবং কাঙ্ক্ষিত সবগুলো পরিবারকে সামাজিক খাদ্যনিরাপত্তা বলয়ের আওতায় আনতে এবং তা নিশ্চিতকল্পে সরকারের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের দলমত নির্বিশেষে মানুষের পক্ষে সরকারের উদ্যোগ বাস্তবায়নে কার্যকরী ভুমিকা রাখা জরুরি ও আবশ্যক ।
এক্ষেত্রে কর্মসূচী বাস্তবায়নে প্রশাসনের তৎপরতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং
আন্তরিক প্রয়াস জনমানুষকে দিতে পারে কাম্য-নির্ভরতা।
স্বাধীন চৌধুরী
গণমাধ্যম, উন্নয়ন ও সংস্কৃতি সংগঠক।