সাইফুল আরিফ জুয়েল, মোহনগঞ্জ (নেত্রকোনা) : দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছিল বর্ষা-ইশতিয়াক দম্পতির মধ্যে। এর কোন সমাধান হচ্ছিল না। সময় গড়িয়ে বর্ষার কোল জুড়ে আসে ছোট্ট কন্যা শিশু। কিন্তু কলহ আরো বেড়েই যাচ্ছিল দিনকে দিন। সেই সাথে ভেঙে যাচ্ছিল ধৈর্য্যের বাঁধ। একদিন ফেসবুকে থানার ওসির মোবাইল নাম্বার পেলেন বর্ষা। গণমাধ্যম ঘেঁটে আরো জানলেন ওসির মানবিকতার খবর। মনে ভরসা পেলেন তিনি। ওই নাম্বারে কল করে ওসির সাথে কথা বলে থানায় গিয়ে অভিযোগ দিলেন স্বামীর নামে। অভিযোগ পেয়ে স্বামীকে ডাকা হলো থানায়। স্ত্রী সন্তান নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করার পরামর্শ দেন ওসি। নিজের ভুল বুঝতে পেরে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন ইশতিয়াক। ওসির মানবিকতায় সুখের নীড় পেল এক পরিবার।
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে গতকাল বুধবার এ ঘটনা ঘটে। আলোকদিয়া গ্রামের ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরী ও মৌসুমী আক্তার বর্ষা (২০) দম্পতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কলহ চলছিল। করোনা পরিস্থিতিতে অবস্থা বেসামাল হয়ে পড়ছিল, তখন বর্ষা মোহনগঞ্জ থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের পর ওসি মোহাম্মদ আবদুল আহাদ খান বিষয়টি বিকল্প আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধান করে দেন।
এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল আহাদ খান জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর প্রাথমিক তদন্তের জন্য এসআই হাদিউল ইসলাম কে দায়িত্ব দেই। ইশতিয়াক চৌধুরীকে আমার অফিসে ডেকে এনে এ ব্যাপারে আইনগত বিষয় অবহিত করলে তিনি প্রথমবারের মতো ক্ষমা চান এবং স্ত্রী সন্তান নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করবেন মর্মে মুচলেকা প্রদান করেন। বিষয়টি বিকল্প আইনি প্রক্রিয়ায় সমস্যার সমাধান করে থানা পুলিশের মাধ্যমে পারিবারিক শান্তি স্থাপন নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি একটি কোমলমতি শিশু বাবা-মা দু’জনকেই পাশে পেল।
তিনি বলেন, ‘ওসি হিসেবে জনগণের অধিকার সংরক্ষণ, পারিবারিক সামাজিক শান্তি স্থাপন করাটা আমার পেশাদারিত্বের মধ্যে পড়ে। প্রত্যেক নারী এবং শিশুর অধিকার সংরক্ষণ এবং অধিকার নিশ্চিত করা এটা পুলিশের দায়িত্ব, সেই দায়িত্বের জায়গা থেকে আমি খুবই আনন্দ উপভোগ করছি। একটি শিশু তার পিতা-মাতাকে পেয়েছে, পাশাপাশি একজন স্বামী ও তার ভুল বুঝতে পেরে ফিরে পেল তার সুন্দর একটি সংসার। ভেঙে যায় যায় এমন একটি সংসার বাঁচাতে পেরে মনে প্রশান্তি লাগছে।’