স্টাফ রিপোর্টারঃ
নাম তার জয়গুন,তবে এ নামে কেউ তাকে চেনে না। তবে লেংরি বললে গলগন্ডা এলাকার অনেকই তাকে চেনে।প্রায় ২০ বছর অাগে তার স্বামী মারা যান।একমাত্র ছেলে শ্বেতী রোগে অাক্রান্ত মাকে ছেড়ে চলে গেছেন।বেশ ক’বছর অাগে মাকে ছেড়ে ব্রহ্মপুত্র নদের অপরপাড়ে চলে যান। খোঁজ খবর নেয় না। এলাকার এক ব্যাক্তির বাসার বারান্দায় থাকেন। ভিক্ষা করে যা পান তাই দিয়ে নিজেই রান্না করে খান। করোনা অাতংক দেখা দেয়ার পর ভিক্ষা দেয়া বন্ধ। এমতাবস্থায় কারো বাড়ীতে কিছু খাবার পেলে খান,না হলে না খেয়েই থাকতে হয়। বিষয়টি ডিবি পুলিশ জানতে পারে। গত সোমবার খবর নিয়ে রাতে তাকে চাল,ডাল,তেল,লবন, অালু,পেঁয়াজ পৌঁছে দেন ডিবির ওসি শাহ কামাল হোসেন অাকন্দ। ত্রান পেয়ে চোখ দিয়ে জল নেমে অাছে জয়গুনের। ৫৫বছর বয়সী জয়গুন ওরফে লেংরি ত্রান পেয়ে শুকরিয়া জানালেন।
অারেকজনের নাম পারভীন। বয়স ৫০ এর কোঠায়। বেকার স্বামী ভূট্টোকে নিয়ে একটি এনজিও থেকে ১৫ হাজার টাকা ঋন নিয়ে কাঠগোলা বাজারের পাশে পতিত জমিতে স্বামী সহ পারভীন ভাতের হোটেল খুলে রিক্সা, অটোরিকশা চালকদের কাছে খাবার বিক্রি করে কোনমতে সংসার চালাতো।করোনা অাতংক দেখা দেয়ার পর ভাতের হোটেলটি নিরাপত্তার স্বার্থে বন্ধ করে দেয় পুলিশ। দীর্ঘ ১ মাসের বন্ধ থাকায় হাতের জমানো টাকা শেষ। অভাবের তাড়নায় স্বামী সন্তান সহ যখন অনাহরে অর্ধাহারে জীবন কাটছে তখন গোপনে এক ব্যাগ খাবার পৌঁছে দেন ডিবি পুলিশ। ত্রান পেয়ে সালাম দিলেন পুলিশকে। বিনিময়ে পুলিশ বললো, করোনা অাতংক শেষ না হওয়া পর্যন্ত যেন দোকান না খুলে ও বাড়ী থেকে বের হন।
হাবিবা।বয়স ৩০/৩৫।স্বামী শফিকুল রাজমিস্ত্রীর হেলপার। করোনা ভাইরাস দেখা দেয়ার পর শফিকুলের কাজ বন্ধ। দুই সন্তান নিয়ে সংসারে শুরু হয় অভাব -অনটন। কাজের মানুষ বেকার থাকায় শিশু সন্তান নিয়ে হাবিবার সংসারে দেখা দেয়,খাদ্যাভাব। এমতাবস্থায় গোপনে ১০ দিনের খাবার পৌঁছে দেন ডিবি পুলিশ।
করোনা অাতংক দেখা দেয়ার পর পুলিশ সুপার অাহমারউজ্জামানের নির্দেশে ডিবি পুলিশ গোপনে কর্মহীন,দিনমজুর , অসহায় বিধবা, করোনা কারনে যারা সাময়িক বেকার,সমাজের অবহেলিত মানুষদের ত্রান বিতরন করে যাচ্ছেন। মাঠ পর্যায়ে ত্রান বিতরন সমন্ময় করছেন ডিবি’র ওসি শাহ কামাল অাকন্দ। নগরের অাইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখার পাশাপাশি ডিবি পুলিশের ত্রান বিতরন কার্যক্রম জেলাব্যাপী দারুন প্রশংসিত হয়েছে।