পূর্বময় ডেস্কঃ
বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘকায় ব্যক্তি জিন্নাত আলী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন আজ (২৮ এপ্রিল) রাত ৩ টায়
২৪ বছর বয়সেই জীবনের কাছে হেরে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন কক্সবাজারের বাসিন্দা বাংলাদেশের সবচেয়ে লম্বা মানুষ এবং তুরস্কের সুলতান কোশেনের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘকায় ব্যক্তি জিন্নাত আলী। জিন্নাত আলীর মৃত্যুর খবর তার ভাই ইলিয়াস আলী ভোর ৪টায় গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
জিন্নাত আলী ১৯৯৬ সালে কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের বড়বিল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শাহাম্পুরা বেগম (মাতা)- আমীর হামজা (পিতা) দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান। পরিবারের সূত্রে জানা যায়, ১১ বছর আগে হঠাৎ করে জিন্নাত আলীর শরীর অস্বাভাবিকভাবে লম্বা হতে শুরু করে, যা চলতে থাকে এবং তার উচ্চতা বৃদ্ধি হতেই থাকে।
২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর মাসে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল মহোদয় চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নিয়ে যান এবং তাকে সংসদ ভবনে নিয়ে গিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করিয়ে দেন। অস্বাভাবিক লম্বা হওয়ায় শারীরক বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে জিন্নাত প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। এছাড়া কেউ কাজ না দেওয়ায় অভাবে আয়-উপার্জন না থাকার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে জিন্নাতের চিকিৎসার জন্য পাঁচ লাখ টাকা অনুদান দেন এবং জিন্নাত আলীকে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করান। পরে সুস্থ হয়ে জিন্নাত বাড়ি ফেরত যান।
ঐসময় বিএসএমএমইউ’র মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. আবদুল্লাহ বলেন, জিন্নাতের মস্তিষ্কে টিউমার রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এছাড়া হরমোন সমস্যার কারণে ওর উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, ওই সময় হাসপাতালে কয়েকদিন চিকিৎসা সেবা গ্রহনের পর চিকিৎসকেরা তার মাথার টিউমার অপারেশনের উদ্যোগ নিলে বেঁকে বসেন জিন্নাত ও তার পরিববারের সদস্যরা। তাদের ধারনা ছিল অপারেশন করলেই জিন্নাত মারা যাবে। তাই অপারেশন না করেই এক পর্যায়ে বাড়ি নিয়ে আসা হয়।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে আর্থিক সহযোগিতায় জিন্নাতকে তার এলাকায় একটি দোকানও করে দেওয়া হয়।
অবশেষে, কয়েকদিন আগে মাথায় টিউমারজনিত সমস্যা বেড়ে গেলে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত রোববার (২৬ এপ্রিল) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রথমে নিউরোলজি বিভাগে, পরে নিউরোসার্জারী বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। এরমধ্যে অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। সেখানেই রাত ৩ টায় তার মৃত্যু হয়। মরহুমের জানাজার নামাজ স্থানীয় গর্জনিয়া বড়বিল এলাকায় অনুষ্ঠিত হবে।