স্টাফ রিপোটার: আজ (শুক্রবার)বিকালে গৃহায়ন ও গনপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ টাউনহল ভাষা সৈনিক শামসুল হক মঞ্চে দুই হাজার নারী ও পুরুষের মাঝে ত্রান বিতরন করেন।
কাল থেকে পবিত্র মাহে রমজান শুরু হচ্ছে। রমজানের প্রাক্কালে দুই হাজার নারী ও পুরুষের মাঝে ত্রান দেয়ায় গরীব দিনমজুরদের মাঝে স্বস্তির নি:শ্বাস বয়ে যায় ।
প্রতিমন্ত্রী শরীফ ত্রান বিতরন করবেন এই খবরে শহরের দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষ,দরিদ্র,বিধাব, কর্মহীন শত শত মানুষ টাউন হলে ভীড় জমায়। একপর্যায়ে অধিক সংখ্যক মানুষের ভীড়ে টাউন হলে মহিলাদের
ত্রানের ব্যবস্থা করে,পুরুষদের গঙ্গাদাস গুহ রোডে রাস্তার উপর চার সারিতে বসিয়ে ত্রান বিতরন করতে হয়। এ সময় নির্বাহী হাকিম আব্দুল কাদির , অতিরিক্ত পুলিশ এসে ত্রান নিতে আসা সাধারন মানুষকে সড়কে সারিবদ্ধ ভাবে বসিয়ে ত্রান কার্যক্রম সুষ্ঠভাবে চালাতে সহায়তা করতে দেখা যায়।
গৃহায়ন ও গনপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের পিতা মরহুম শামসুল হক
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর বিশেষ আস্থাভাজন ব্যক্তি ছিলেন। ১৯৫২ সনে ভাষা আন্দোলনের সময় ময়মনসিংহে তিনি আন্দোলন গড়ে তুলেন। যার জন্য তৎকালীন পাকিস্তান সরকার ফেব্রুয়ারী মাসে তাকে জেলে পাঠান। দীর্ঘ ৬ মাস তিনি জেল খাটেন। ১৯৭০ সনে নির্বাচনে ফুলপুর তারাকান্দা আসন থেকে বিপুল ভোটে গনপরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সনে জাতির জনকের ডাকে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও যোদ্ধা হিসেবে তার বিশাল ভূমিকা ময়মনসিংহবাসী আজো শ্রদ্ধার সাথে স্মরন করে থাকেন। মেঘালয়ের ধুবড়ি,তোড়া,শিববাড়ী,ঢালু ও বারেঙ্গাপাড়া ক্যাম্পে তরুন মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস যোগাতেন। একজন সফল মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে শামসুল হক জীবনবাজী রেখে মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখেন। বিপুল জনপ্রিয় শামসুল হক ৭৩ সনে আবারো ফুলপুর আসন থেকে নির্বাচিত হন। জাতির জনককে হত্যার পর তিনি তার প্রতিবাদে সভা সমাবেশ করেন। এর জন্য তাকে প্রচুর খেসারত দিতে হয়। সেনাশাসিত জিয়াউর রহমান সরকারের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু হত্যার অভিযোগ এনে মাঠে ময়দানে সরভ ছিলেন। ১৯৮৬ সনে তিনি আবারো ফুলপুর আসন থেকে নির্বাচিত হন। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সনে আবারো একই আসন থেকে নির্বাচিত হন।
১৯৮৮ সনে তিনি ফুলপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। জনপ্রিয় এই নেতা শামসুল হককে জিয়া ও এরশাদ মন্ত্রীর লোভ দেখিয়েও তার প্রানের সংগঠন আওয়ামীলীগ থেকে সরাতে পারেনি। তিনি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসেবে দুই সেনাশাসকের আমলে সামনের সারী থেকে দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
পাঁচ বারের এই সাংসদ সংসদে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার দাবীতে সোচ্চার ছিলেন। পাশাপাশি তারাকান্দাকে উপজেলা ঘোষনার দাবী জানান। তার দাবীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তারাকান্দাকে উপজেলা ঘোষনা করেন। এখন ফুলপুর ও তারাকান্দা মিলে যে সংসদীয় আসন,সেই আসনের পরপর দুইবার তার পুত্র শরীফ আহমেদ এমপি নির্বাচিত হন। শরীফ আহমেদ নির্বাচিত হবার পর তার পিতার আদর্শ ধরে ফুলপুর ও তারাকান্দাবাসীর সেবায় নিয়োজিত থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমান সরকার গঠনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে প্রথম সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত করেন। পরবর্তীতে তার কাজের প্রতি তুষ্ট হয়ে শরীফ আহমেদকে অতীব গুরুত্বপূর্ন গৃহায়ন ও গনপূর্ত প্রতিমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত করেন। শরীফ আহমেদ এখন শুধু ফুলপুরের মন্ত্রী নন। তিনি এখন ময়মনসিংহের আপামর জনতার প্রতিনিধিত্বকারী মন্ত্রী।