‘Sociology of Corona’
-ফিরোজ আল মাহমুদ
সরকারি হিসেবে করোনায় মৃত্যু প্রায় দেড় লাখের কাছাকাছি ৷ ১৯৩০ সালের পর সবচেয়ে ভয়ংকর সংকটের কারণ এই শত্রু ! সে থাবা বসিয়েছে বিশ্বের প্রায় ২৫১ টি দেশ ও অঞ্চলে ৷ সুতরাং এর বিরুদ্ধে sustain করতে হলে we need a sustainable policy. ধরে নিলাম আমাদের করোনা সৈনিকদের প্রত্যেকের সুরক্ষা ব্যবস্থা আছে ৷ কিন্তু একটি যুদ্ধে বিজয় ছিনিয়ে আনার ক্ষেত্রে শক্তি কখনোই গ্যারান্টি দেয় না। কৌশল বা পরিকল্পনাও এককভাবে এখানে কাজ করে না। যুদ্ধক্ষেত্রে অন্যান্য চাতুরি এবং বিপদ এড়ানোর কৌশলও যোগ করতে হয়। সানজু এক চৈনিক মার্সেনারি জেনারেল, স্ট্র্যাটেজিস্ট আর দার্শনিক। লোকে তাকে সান জি নামেও ডাকে। বাঁশের চাটাইয়ের ওপর লিখে যাওয়া তার বই ‘দ্য আর্ট অব ওয়ার’ প্রায় দু’হাজার বছর ধরে যুদ্ধবিদ্যার ছাত্রদের অন্যতম পাঠ্য। মাও সে-তুং, গিয়াপ আর হালের জেনারেল ম্যাক আর্থারের মতো সেনানায়কেরাও তার এই বই থেকে প্রেরণা নিয়েছেন বলে স্বীকার করে গেছেন।
#সান জু’র সবচেয়ে বিখ্যাত নীতিটাই হচ্ছে-
‘শত্রুকে জানো, নিজেকে জানো। শত যুদ্ধেও তুমি অপরাজেয় থাকবে’।
আর যদি শত্রু হয় অদৃশ্য তাহলে এটাতো আরো কঠিন
তাই আমার কেমন জানি সংশয় লাগে যে, করোনার প্রকোপ,এর গভীরতা ও সঠিক কৌশল এবং পরিকল্পনা না নিয়ে শক্তি দিয়ে যুদ্ধে আমরা কতদিন টিকে থাকব ৷ এই পর্যন্ত যে সকল দেশ করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে সফল হয়েছে তারা দুটি পদ্ধতির ফলো করেছে-
১. লকডাউন পদ্ধতি যা চীন করেছে
২.4T কৌশল মানে টেষ্ট, ট্র্যাকিং, ট্র্যাসিং এন্ড ট্রিটমেন্ট যা দক্ষিন কোরিয়া করেছে !
আমাদের এই করোনা যুদ্ধে এসকল পদ্ধতি বাস্তবায়নে যারা অগ্রনী সৈনিক তারা হচ্ছেন-
#ডাক্তার ও নার্স
#পুলিশ
#প্রশাসন
#সংবাদকর্মী
#ব্যাংকার
তারাই আমাদের প্রকৃত বন্ধু ৷কৌটিল্য বলেন,উৎসবে, বিপদে, দুর্ভিক্ষে, শত্রুর সঙ্গে সংগ্রামকালে, রাজদ্বারে এবং শ্মশানে যে সঙ্গে থাকে, সে-ই প্রকৃত বন্ধু।
এরা তো আমাদের প্রকৃত সৈনিক,রোবট নয় ৷ করোনা প্রভাব এভাবে চলতে থাকলে কতদিন তারা সার্ভিস দিতে পারবে ?
তাই আমি বলব Hit and Quarantine নীতির কথা ৷
এর মানে হচ্ছে আমরা লড়াই করব কয়েক দলে ভাগ হয়ে ও প্রস্তুতি নিয়ে নিয়ে ৷ প্রত্যেক সার্ভিসে ৪ টা শিফট করতে হবে !
#এদের ২ টা গ্রুপকে ব্যাকে রাখতে হবে,
#একটি গ্রুপ ফ্রন্টে কাজ করবে,
#অপর গ্রুপকে করোনা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত করা।
১৪ দিন পর ১ম গ্রুপ কোয়ারান্টাইনে যাবে,২য় গ্রুপ ফ্রন্ট সামলাবে। তখন ৩য় গ্রুপ প্রস্তুতি নিবে।
১ম>২য়>৩য়>৪র্থ>১ম…..এভাবে ক্রমান্বয়ে ফ্রন্টে আসবে ৷
এভাবে আমরা দীর্ঘদিন যুদ্ধ করতে পারব ৷ এক্ষেত্রে আমরা সরকারি অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারিকে বসিয়ে না রেখে ও বেসরকারি ডাক্তারদের প্রস্তুত করে ডিউটি দিতে পারি ৷
#আরেকটি হচ্ছে psychological warfares যার মাধ্যমে করোনা সৈনিক ও জনগণের মনোবলকে চাঙ্গা ও শক্তিশালী করতে পারি ৷ বিশ্বের বিভিন্ন যুদ্বে সৈনিকদের ও জনগণের মনোবল ভাঙ্গতে বা শক্তিশালী করতে এই পদ্বতি ব্যবহার করা হতো ৷ গুজব রটনাকারী কন্টেন্ট, উৎস ও খবরগুলো বন্ধ করে এক্ষেত্রে নিম্নোক্ত সামাজিক ও প্রযুক্তিক বাহনগুলোকে রাষ্ট্র কাজে লাগাতে পারে ৷
#ফেসবুক
#পরিবার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ,
#ধর্ম,
#শিক্ষা,
#প্রথা,
#বিশ্বাস,
#আইন-ও বলপ্রয়োগ
‘Victorious warriors win first and then go to war, while defeated warriors go to war first and then seek to win.’
#Sun Tzu,The Art of War.
সঠিক কৌশল না থাকলে আমরা ফ্রন্ট লাইনের সৈনিকদের একে একে হারাতেই থাকব ৷ And Pent-up emotions will rise.
“যেতে যেতে এই বাস থেমে
যাবে বকুলতলায় যাত্রীরা
পড়বে নেমে যে যার মতোন ৷”
—রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ
আর কবির মতো ক্রমে ক্রমে অপেক্ষার প্রহর গুনব,
“পথের শেষ কোথায়,শেষ কোথায়,
কী আছে শেষে ?”
(লেখক, ফিরোজ আল মাহমুদ, প্রভাষক,সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, আনন্দ মোহন কলেজ)