কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন (নেত্রকোনা) :
২৪ ঘণ্টা খোলা হটলাইন নম্বর ০১৬১১৭৮৩৬৭৮। করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে দিন-রাত সেবা দিয়ে যাচ্ছে নেত্রকোনা জেলা ছাত্র ইউনিয়ন। সংগঠনের ১২ জন স্বেচ্ছাসেবী ঘর-বাড়ি ছেড়ে এ কার্যক্রম পরিচালিত করছেন।
গত ৬ এপ্রিল থেকে হটলাইন নম্বর চালু করার পর থেকে এ পর্যন্ত নেত্রকোনার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ যোগাযোগ করেছেন এ হট নাম্বারে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েছেন। অনেকেই ঔষধ সংগ্রহ দেওয়ার জন্য ফোন দিয়েছেন। আবার অনেকে শিশুর খাবার সহ নিত্যদিনের বাজার করে দেওয়ার জন্যেও ফোন দিয়েছেন। সে ফোনের সূত্র ধরে ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীরা দিনে বা রাতে বাই-সাইকেল চালিয়ে তাদের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন কাংখিত সেবা। করোনা প্রতিরোধ কার্যক্রমে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসনের সাথে রয়েছে তাদের নিবিড় যোগাযোগ।
গত ১৬ এপ্রিল নেত্রকোনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের তালিকা অনুযায়ী শহরের সাতপাই, বিলপাড়, পূর্বধলা রোড, গাড়া রোড ও মঈনপুরে ৫০টি পরিবারে খাবার পৌঁছে দিয়েছে। একই দিনে তাদের হটলাইনে ডাক্তারের জন্য যোগাযোগ করা হলে সঙ্গে সঙ্গে সিপিবির বিশেষজ্ঞ ডাক্তার প্যানেলের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিয়ে ৫ জনকে সেবা দিয়েছেন। একই দিনে ফোন পাওয়ার পর বাজার থেকে ঔষধ কিনে পৌঁছে দিয়েছেন ৪ জনকে।
এ প্রসঙ্গে ছাত্র ইউনিয়ন জেলা সংসদের সভাপতি মিটুন শর্মা জানান, করোনা প্রতিরোধে শুরু থেকেই তারা সাধারণ মানুষকে সচেতন করে আসছে। নেত্রকোনায় তারাই প্রথম হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিজেরাই তৈরি করে প্রায় ২৬০০ শ্রমজীবী পরিবারকে বিনামূল্যে সরবরাহ করেছেন। নিজেদের এবং শুভাকাঙ্খীদের অর্থায়নে ২১৬টি পরিবারকে দিয়েছেন খাদ্য সহায়তা সহ মাস্ক বিতরন করেছেন ২৫০টি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে নেত্রকোনা পৌরসভার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে এঁকেছেন বৃত্ত। যাতে সাধারণ মানুষ অন্তত ৩ফুট দূরত্বে অবস্থান নেন।
জেলা সংসদের ১২ জনের একটি দল নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে নেত্রকোনা উচ্চ বিদ্যালয়ের দুটি কক্ষে রাত-দিন অবস্থান করে এই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। জেলা শহরের বাইরে মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুড়ি, দুর্গাপুর, বারহাট্টা, মদন ও কেন্দুয়ায় তাদের স্বেচ্ছাসেবক দল কাজ করছে বলে তিনি জানান।