পূর্বধলা প্রতিনিধিঃ
কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে সরকারি কর্মকর্তারা যেন কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি মোকাবেলায় দায়িত্ব পালন করেন। নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় ১১টি ইউনিয়নে খাদ্য সামগী বিতরণসহ জরুরী দায়িত্ব পালনে অনেক সরকারি কর্মকর্তা কর্মস্থলে উপস্থিত থাকছেননা। এমনকি তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনেও চরম গাফিলতি পরিলক্ষিত হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে কুলসুম অল্প কজন কর্মকর্তা নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে। ত্রাণ বিতরণ, বাজারদর নিয়ন্ত্রন রাখা, হাট-বাজারে অহেতুক জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে রাখা, সন্দেহভাজন রোগীদের তথ্য সংগ্রহ, প্রয়োজন ক্ষেত্রে বিশেষ এলাকায় লকডাউন, ব্যাপকভিত্তিক জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ সহ নানাবিধ দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে নির্বাহী কর্মকর্তাকে।
এমন দূর্যোগ পরিস্থিতি সামাল দিতে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরী। এ ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের কার্যকর ভূমিকা নিতে হয়। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ মাঠ প্রশাসন সংস্থাপন অধিশাখার মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত ২২ মার্চ প্রজ্ঞাপনে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধ ও এর প্রার্দুভাবজনিত যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের লক্ষে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বিভাগ/জেলা/ উপজেলা পর্যায়ের সকল সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে উপস্থিতি নিশ্চিতকরণের জন্য নিদের্শনাও রয়েছে।
কিন্তু চরম হতাশার বিষয় হলো পূর্বধলায় কর্মরত অনেক কর্মকর্তাই এমনিতেই কর্মস্থলে অবস্থান করেননা আর বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদেরতো আদো দেখা মিলছেনা। যা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে অসন্তোষ বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে অন্যরাও দায়িত্ব পালনে উৎসাহ হারাবেন।
করোনা মোকাবেলায় পূর্বধলায় মাঠ পর্যায়ে সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাসরিন বেগম সেতু, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল আলম, সমাজসেবা কর্মকর্তা সাইফুল আলম ভূইঁয়া, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা শেখ মো: মহসিন উদ্দিন, খাদ্য কর্মকর্তা মনজুরুল হক ও ভেটেনারি সার্জন ডাঃ নাজমুল হাসানকে সকল সময় কর্মস্থলে সার্বক্ষণিক উপস্থিত থেকে আন্তরিকতা ও পরিশ্রমের সাথে ঝুকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। সর্বসাধারণের অভাব অভিযোগ মেটানোর প্রাণান্তকরণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা। পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার ও আবাসিক কর্মকর্তা ডাঃ হাবিবুর রহমান এর নেতৃত্বে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তারা সাধারণ রোগী, করোনা সন্দেহে রোগীদের নমুনা সংগ্রহ সহ ব্যাপক ভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অফিসার ইনচার্জ তাওহীদুর রহমান এর নেতৃত্বে পূর্বধলা থানার পুলিশ সদস্যরাও আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সার্বিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, পরিসংখ্যান কর্মকর্তা, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, মৎস্য কর্মকর্তা, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, সমবায় কর্মকর্তা, একাডেমিক সুপারভাইজার, সাব রেজিষ্টার কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা সরকার ঘোষিত ছুটির সময় থেকে তাদেরকে কর্মস্থলে উপস্থিত হতে দেখা যায়না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতির বিষয় জানতে চাইলে আজকের আরবান প্রতিনিধিকে জানান তিনি সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন যেসকল কর্মকর্তা উপস্থিত থাকছেন তাদের নিয়ে যথা সম্ভব পরিস্থিতি মোকাবেলার। তবে তিনি মনে করেন পরিস্থিতির অবনতি হলে অধিক জনবলের প্রয়োজন হবে। এ ক্ষেত্রে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম সুজন উপজেলা প্রশাসনকে সকল ক্ষেত্রে সর্বোত সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছেন।
উদ্বোধ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে তড়িৎ প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।