“সবিনয় নিবেদন”
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আসসালামু আলাইকুম।
আমি কোন রকম ভনিতা না করে অত্যন্ত সহজ সরল ভাবে এবং অন্তস্থল থেকে পরম বিনয়ের সাথে স্বীকার করছি যে, আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনার নিজ যোগ্যতায় আপনি বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য সব কিছু করতে পারেন। এবং এই দ্রুব সত্যি বিশ্বাসে আমাদের কারোই কোন সন্দেহ নেই। আপনার নেক ইচ্ছে, সারা বাংলার মানুষের দোয়া এবং আল্লাহ রব্বুল আলামিনের কৃপা সেকারণেই আপনার উপর আজীবন অব্যাহত রয়েছে এবং থাকবে।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, আপনি অন্য সব কিছু পারলেও কোন ভাবেই বাংলাদেশের সরকার দলীয় লেবাসের ত্রাণ চোরদের থামাতে পারবেন না। এবং এটা আমি একশত ভাগ গ্যারান্টি দিয়ে বলছি।
তাই আমরা আর কোন খাদ্য সামগ্রীর ত্রাণ নয়, তার বদলে নগদ টাকা ত্রাণ হিসেবে চাই। খাবার আমরা নিজ দায়িত্বে কিনে নিবো, এবং এই লকডাউন চলাকালীন সময়ে সকল মেনে কেনাকাটা সেরে বাসাতেই অবস্থান করবো। যতো দিন পর্যন্ত দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়।
যে দেশে করোনা রোগীর চেয়ে ত্রাণের চাল চোরের সংখ্যা বেশী এবং তারা সকলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ত্রাণের বিতরক, সেখানে যতোই বলুন না কেন ” ত্রানের ব্যাপারে কোন অন্যায় সহ্য করবেন না ” তাতেও কোন লাভ হবেনা। চোরেরা আজ মরিয়া তারা চুরির বেলায় আপনার কোন নির্দেশনা মানবে না।
তাই সারা বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে আমি আপনাকে বিনীত অনুরোধ করছি, আমাদের জাতীয় নাগরিক আইডি দেখে প্রতিটি মধ্যবিত্ত – নিন্মবিত্ত পরিবারকে অর্থাৎ আমাদের মতো মানুষদের যাদের ব্যাংক একাউন্টে (খুব জরুরী প্রয়োজনীয় কাজের জন্য) জমানো ২ টাকার বেশী নেই,তাদের প্রত্যেকের ব্যাংক একাউন্টে মাত্র ২৪ লক্ষ টাকা হারে দয়াকরে করে নগদ অর্থ ত্রাণ দান করুন।
আমরা মধ্যবিত্ত এবং নিন্মবিত্তেরা আগামী ২ বছর যাতে নিশ্চিন্তে খেয়ে পরে বাঁচার সাথে যার যার প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যাক্তিগত ব্যাবসা সহ নানান কাজে লাগিয়ে সারা জীবনের জন্য নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পাবে। সেই সাথে দেশের বেকার সমস্যা লাঘবের একটা পথ উন্মোচন হবে। প্রিয় বঙ্গবন্ধু কন্যা এই দান আপনার মতো মহানুভব মানুষের জন্য খুবই সামান্য অর্থ।
প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি হাজার হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিয়েছেন অথচ আমরা মধ্যবিত্ত এবং নিন্মবিত্তেরা সেই প্রণোদনার অর্থের ছিটেফোঁটা ও চোখে দেখবো না। যারা সারা বছর সুখ স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন কাটিয়েছে, শ্রমিকের রক্তে ঘামের টাকায় সেই তারাই এখনো যাথারীতি লুটে খাবে। এবং ঐ শ্রেণী দেশের দূর্যোগের মধ্যেও আপনাকে ব্লাকমেইল করতে সংকোচ বোধ করেনা, তার প্রমাণ ও ইতোমধ্যে সারা দেশের মানুষ দেখেছে।
কিন্তু আমাদের চাহিদা ওসব লুটেরা নির্লজ্জ রক্ত খেকোদের মতো হাজার কোটি নয়, তাই বলছি দয়াকরে আমাদের মধ্যবিত্ত এবং নিন্মবিত্ত জনসংখ্যা হিসেব করে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী পরিবার প্রতি উল্লেখিত পরিমাণ অর্থ সাহায্য দান করুন।
তাতে করে কারো কম কারো বেশী ও হবেনা, অথবা জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী পরিবার প্রধান ব্যাতিত অন্য কেউ আপনার সেই দানের অর্থ আত্মসাৎ করার সুযোগ ও পাবেনা।
বাংলাদেশের সকল সরকারি/বেসরকারি ব্যাংক গুলোকে নির্দেশ দিলে প্রতিটি ব্যংকের কর্তাব্যাক্তিরা আপনাকে ঠিক হিসেব দিতে পারবে যে, কাদের ব্যংকে জমানো টাকার পরিমাণ কার কতো আছে অথবা কারা প্রকৃত মধ্যবিত্ত এবং নিন্মবিত্তের তালিকায় আছে।
সেই সাথে একই ব্যক্তি একাধিক ব্যাংকে একাউন্ট করে টাকা গচ্ছিত রাখলে সেই ব্যক্তিদের এই নগদ অর্থ ত্রাণ গ্রহীতার তালিকা থেকে বাদ দেয়ার সুযোগ ও থাকবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা মুখে বলতে পারবোনা আমাদের অর্থাভাবের কথা সেটা যখন আপনি না বলতেও বুঝতে পেরেছেন, তাই এবার আপনার অনুপ্রেরণা পেয়ে আমরা আপনার কাছে সবিনয় অনুরোধ করছি, আমরা কোন দায়িত্বপ্রাপ্ত চোরের সর্দারদের হাত দিয়ে বিতরণ করা খাদ্যসামগ্রী নয়, বরং আপনার হাত থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রের পরিচিতি নাম্বার অনুযায়ী প্রত্যেক পরিবার প্রধান বাবা/ মা’র এবং বিবাহিত সন্তানদের জন্য পৃথক করে যাদের ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে কিন্তু জমানো কোন টাকা নেই সেই মানুষ গুলোর একাউন্টে উল্লেখিত পরিমাণ অর্থ ত্রাণ দান আশা করছি।
প্রিয় শেখ হাসিনা আপনার পিতার এবং পরিবারের জীবনের বিনিময়ে পাওয়া বাংলাদেশের মানুষের জন্য আপনি যা যা করতে পারবেন, আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি সারা বিশ্বের কোন দেশ নায়ক সেটা করতে পারবেনা। নিকট অতীতে তার প্রমাণ বিশ্বের মানুষ দেখেছে এবং তার সাক্ষী আছে।
তাই সবিনয়ে অনুরোধ করছি, ওসব লেবাসধারী চোরের খণির দায়িত্বে আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ বা ত্রাণ বন্টনের ভার না দিয়ে আপনি নিজ দায়িত্বে সেনা বাহিনীর সহায়তায় আমাদের নগদ অর্থ দান করুন। আপনার এই মহান দানের জন্য আমরা প্রতিজ্ঞা করছি যে, দেশের যে কোন প্রয়োজনে আপনার সাথে থাকা সহ আজীবন আপনার কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবো। এবং পৃথিবীর ইতিহাসে দেশের মানুষের জন্য আপনার এই অকল্পনীয় দান স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়ে থাকবে।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আপনি এবং আপনার পরিবারকে সুস্থ সবল এবং নেক হায়াৎ দান করুন। সেই সাথে বাংলাদেশের সকল সংকট কাটিয়ে ওঠার দৃঢ় মনোবল ও অসীম যোগ্যতা অব্যহত রাখুন আমীন।
বিনীত নিবেদক আপনার বিশ্বস্ত –
আমি
মাকসুদা সুলতানা ঐক্য
৮ এপ্রিল ২০২০
ঢাকা, বাংলাদেশ।
(সারা বাংলাদেশের
মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষের পক্ষে)।