সংবাদ বিজ্ঞপ্তিঃ বিশ্বব্যাপী যখন করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে লকআউট পরিস্থিতি বিরাজ করছে বাংলাদেশে তখন গার্মেন্টস কারখানা চালু করে লাখ লাখ শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলে দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। ৫ এপ্রিল থেকে বন্ধ গার্মেন্টস কারখানাগুলো চালুর বিষয়ে এরকম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ওএসকে গার্মেন্টস এন্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশন।
ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ ইয়াছিন এবং সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত এক যুক্ত বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সহ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন ও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ যখন হুঁশিয়ারি দিচ্ছে অন্তত আগামী দুই সপ্তাহ বাংলাদেশে করোনা সংক্রমনের বিপদজনক সময়, তখন গার্মেন্টস সেক্টরে কর্মরত লক্ষ লক্ষ শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলে দেয়া সরকারের অবিবেচনা প্রসূত সিদ্ধান্ত। নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিয়ে গার্মেন্টস কারখানা চালুর বিষয়ে সরকার আশ্বস্থ করতে চাইলেও বাস্তবে কোন কারখানাতেই তা নিশ্চিত করা হচ্ছে না।
সাধারণত কারখানাগুলোতে পাশাপাশি মেশিনে শ্রমিকদের অবস্থান, ঠাসাঠাসি করে গণপরিবহনে যাতায়াত এবং কারখানায় প্রবেশ ও বের হওয়া, শ্রমিকদের পর্যাপ্ত পিপিই না থাকা, নিয়মিত স্বাস্থ্য তদারকি করার ব্যবস্থা কারখানায় না থাকা- এ সমস্ত কারণে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা কোনোভাবেই কারখানা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করতে পারে না।
বিবৃতিতে বিজিএমইএ-র সভাপতি রুবানা হক’র মন্তব্য উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন- একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে রুবানা হক নিজেই বলেছেন ইউরোপ-আমেরিকার বায়ারদের ক্রয় আদেশ বাতিল হওয়ায় কারখানাসমূহ ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু কারখানা জাপান-অস্ট্রেলিয়ার জরুরী শিপমেন্ট এবং পিপিই রেডি করার জন্য বিশেষ নিরাপত্তায় চালু রয়েছে। অথচ সরকার সকল গার্মেন্টস কারখানা চালু করার সম্মতি প্রদান করায় শ্রমিকদেরসহ কমিউনিটি পর্যায়ে করোনা ভাইরাসের বিস্তৃতি ঘটতে পারে বলে নেতৃবৃন্দ আশঙ্কা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য যে, জনগণের করের টাকা থেকে সরকার রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা বিশেষ প্রণোদনা দেয়ার পরও রপ্তানিমুখী শিল্প হিসেবে গার্মেন্টস মালিকরা কোনোভাবেই শ্রমিকদের দায়ীত্ব নিতে অস্বীকার করতে পারে না। এ বিষয়ে নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে দাবি করেন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের এই মুহূর্তে প্রয়োজন থাকা খাওয়ার সমুদয় দায়িত্ব মালিকদের বহন করা এবং করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে শ্রমিকদের নিরাপদ রাখার জন্য সার্বিকভাবে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
দেশে যখন সামরিক বাহিনীসহ সমস্ত প্রশাসন সকল ধরনের জমায়েত ও ঘরের বাইরে না আসার জন্য দেশবাসীকে সতর্ক ও সচেতন করছে, তখন হাজার হাজার শ্রমিক একসাথে কারখানায় প্রবেশ করবে এবং বের হবে – এরকম পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই দেশকে নিরাপদ রাখা যাবে না বলে নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে সতর্কতা প্রদান করেন। এই মুহুর্তে শ্রমিকরা যে যেখানে আছে সেখানেই সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও সর্তকতা রাখার জন্য সরকার ও গার্মেন্টস মালিকদের প্রতি নেতৃবৃন্দ আহ্বান জানান।