বাবলী আকন্দঃ বিশ্ব এখন করোনা আতঙ্কে তটস্থ। অন্যান্য দেশগুলোর পরে বাংলাদেশও আক্রান্ত হয়েছে। ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। করোনা ভাইরাস এর প্রতি সচেতনতা বাড়াতে এবং এর প্রতিরোধে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জনসমাগম এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দিয়েছেন। গত ১৭ মার্চ ঢাকায় ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ করোনা ভাইরাসে মারা গিয়েছে। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের আক্রমণে এটাই প্রথম মৃত্যু। আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১৪ জন। ময়মনসিংহের সিবিএমসিবিতে একজন রোগীকে করোনা আতঙ্কে আইইডিসিআর, মহাখালীতে পাঠানো হয়েছে। এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই ময়মনসিংহবাসীর মাঝে আতঙ্ক বেড়ে গেছে।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রাস্তাঘাটে আগের মতো আর জ্যাম পরিলক্ষিত হচ্ছে না। তবে অফিস আদালত, পার্কগুলোতে ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পার্কগুলোতেও জনসমাগম বন্ধ করার জন্য জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা রয়েছে। সকল ধরনের নির্দেশনা মেনে চলার আহবান জানিয়েছেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোঃ মিজানুর রহমান।
সাধারণত আমাদের দেশের ফাল্গুন ও চৈত্র মাসের এই সময়টাতে ঋতু পরিবর্তনের কারনে শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত ঠান্ডা, কাশি, সর্দিতে বেশি আক্রান্ত হয়। ফাল্গুণের হাওয়া আর চৈত্রের রোদ কবিদের মনে দোলা দিলেও বাতাসের সাথে ভেসে আসা ফ্লুতে শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়। আর ঠিক এই সময়টাতেই বাংলাদেশসহ বিশ্ব এখন করোনা ভাইরাসে আতঙ্ক। যেই ভাইরাসের লক্ষণই হচ্ছে জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, হাঁচি, গলা ব্যথা।
ময়মনসিংহে করোনাতে আক্রান্ত এ খবর প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথেই যাদের ঠান্ডা, কাশির, জ্বরের সমস্যা হচ্ছে তারা কেউই এখন আর চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন না কিংবা ডাক্তারের পরামর্শও নিচ্ছেন না। বেশিরভাগ মানুষই এখন ঠান্ডা জ্বরে আক্রান্ত কিন্তু করোনা ও চিকিৎসকের ভয়ে হাসপাতালমুখী হচ্ছেন না। কেন তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিচ্ছেন না এমন প্রশ্নের জবাবে কেউ কেউ জানান, হাসপাতালে এখন গেলেই ডাক্তার লক্ষণ শুনে করোনার হয়েছে ভেবে মহাখালীতে পাঠিয়ে দিবেন! কারও কারও মাঝে ভ্রান্ত ধারণাও রয়েছে যে, করোনা সন্দেহে তাদেরকে ইঞ্জেকশন পুশ করে মেরে ফেলা হবে! এধরনের জন্ম নেয়া ভ্রান্ত ধারণার ফলে সাধারণ জ্বর, ঠান্ডা, কাশিতেও চিকিৎসা না নিয়ে কষ্টে ভুগছেন অনেকেই।
এ ব্যাপারে করোনা ভাইরাসের সচেতনতা ও প্রতিরোধ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা সিভিল সার্জন মোঃ মশিউল আলম জানান, যদি কেউ সাধারণ ফ্লুতেও আক্রান্ত হন, তবে তার উচিত হবে ঘরে থাকা। প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে এখন হটনাম্বার চালু করা হয়েছে। সেসব নাম্বারে কল করে ঘরে বসেই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া যাবে। ভয় নেই, সচেতনতা আর পরিচ্ছন্নতাই এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
সবাইকে গরম পানির গড়গড়াসহ কুলি করা, গরম পানির ভাপ নেয়া, কনুই ভাজ করে হাঁচি কাশি দেয়া, সাবান দিয়ে হাত ধোয়া সর্বোপরি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা। এছাড়া সাধারণ ফ্লু হলেও বাইরে বের না হওয়াই উত্তম। সবাইকে এ পরামর্শ মেনে চলার আহবান জানান।
ময়মনসিংহ জেলায় করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত যেকোন তথ্যপ্রদান ও সহায়তা পেতে নিম্নোক্ত মোবাইল নম্বরগুলোতে যোগাযোগ করুন:
০১৭১৪৩৪২৬০৫ (সিভিল সার্জন)
০১৭৩৩৩৭৩৩০৩(এডিএম)
০১৭১৩৩৭৩৪২৩ (এডিশনাল এসপি প্রশাসন)
০১৭৭৭৭১১৪০৩ (র্যাব)
০১৭৩০০৩৮০৬৯ (আনসার)
উপজেলাভিত্তিক যোগাযোগ UNO/acland:
01733373326/7 (সদর)
01733373328/9 (মুক্তাগাছা)
01733373330/1(ফুলবাড়িয়া)
01733373332/3 (ত্রিশাল)
01733373334/5 (ভালুকা)
01733373336/7 (ঈশ্বরগঞ্জ )
01733373338/9 (গফরগাঁও)
01733373340/1 (ফুলপুর)
01733373342/3 (হালুয়াঘাট)
01733373344/5 (ধোবাউড়া)
01733373346/7 (নান্দাইল)
01733373348/9 (গৌরীপুর)
01733373350/1 (তারাকান্দা)।