স্টাফ রিপোর্টারঃ আদালত প্রাঙ্গনে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী জয় এর তিন বছরের ছেলে জনম চন্দ্র দেকে তার মা মন্টি রানী দে’র কাছে ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিলে জনমের বাবা একদল সন্ত্রাসী নিয়ে আদালতে বিজ্ঞ এডভোকেটের চেম্বারে হামলা চালায়। সুত্র জানায়,প্রায় ৫ বছর আগে মন্টির সাথে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী থানা এলাকার ছত্রিশবাড়ী কলোনীর রানা চন্দ্র দে’র ছেলে জয় এর সাথে বিয়ে হয়।বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য নানা ভাবে মন্টিকে নির্যাতন করতো জয়। সংসার সুন্দর রাখার জন্য মন্টি সব নির্যাতন সহ্য করে আসছিল। বিয়ের দুই বছর পর মন্টির ঘরে পুত্র সন্তান এলে সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে হয়তো তার স্বামী সুপথে ফিরে আসবে এ আশায় সব সহ্য করলেও জয় নেশাপান আরো বাড়িয়ে দেয়। আর নেশাপানের টাকা যোগারের জন্য স্ত্রী মন্টিকে বাপের বাড়ী থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দিতে থাকে এবং নির্যাতন অব্যাহত রাখে। মন্টি জানায়, জয়ের বিরুদ্ধে মামলা আছে। প্রায়ই নেশা বিক্রির জন্য পুলিশ তাদের বাড়ীতে রাত বিরাতে হানা দেয় জয়কে ধরার জন্য। নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে তার টিকে থাকা দায় হয়ে পড়ে। এমনকি বাপের বাড়ী থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য সিগারেটের আগুনে শরীরের বিভিন্ন অংশ ছ্যাকা দিয়ে দগদগে ঘা করে দেয়।বাধ্য হয়ে মন্টি তার স্বামী জয়কে ডিভোর্স দিয়ে একমাস আগে জামালপুরের ইসলামপুর চলে যায়।এ ঘটনায় মন্টির ডিভোর্স দেয়া স্বামী জয় সদরের নির্বাহী হাকিমের অাদালতে ১০০ ধারায় একটি মামলা করে। গতকাল সেই মামলায় মন্টি, তার তিন বছরের শিশু পুত্র জনম ও তার বর্তমান স্বামী শান্তকে আসামী করা হয়। বিজ্ঞ আদালতের সমন পেয়ে এরা আদালতে হাজির হলে বিজ্ঞ নির্বাহী হাকিম দুপক্ষের বক্তব্য শুনে এবং শিশু জনমের ইচ্ছা মত তাকে মা মন্টির জিম্মায় দেয়ার নির্দেশ দেন। এরপর এরা জামিননামা দিতে আদালতে বাইরে এড,রফিকুল ইসলাম এর চেম্বারে এলে জয় ছত্রিশবাড়ী এলাকার চিহ্নিত নেশাখোর সন্ত্রাসী শাকিল,রানা,রাজু,অজয়,পারভেজ নূরনবী সহ অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী নিয়ে এডভোকেটের চেম্বারে হানা দেয় এবং জোরপূর্বক আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালায়।এসময় এডভোকেট রফিকুল ইসলাম খান সহ তার চেম্বারে থাকা লোকজনের তীব্র বাধার মুখে তিন বছরের শিশু জনমকে তার মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নিতে পারেনি সন্ত্রাসীরা।এরপর ও জনমের পিতা জয় চন্দ্রের সাথে থাকা ২০/২৫ জনের সন্ত্রাসী দল আদালত প্রাঙ্গন থেকে শিশুকে উঠিয়ে নেবার মহড়া দিতে থাকলে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি তদন্ত মুশফিকুর রহমানকে ফোনে বিস্তারিত জানানো হলে তিনি দ্রুত মোবাইল টিম দুইকে জানান। এ সময় মোবাইল দুই এর এএসআই নজরুল একদল পুলিশ নিয়ে আদালতের চার ওপাঁচ নম্বর ভবনে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আদালত প্রাঙ্গনে থাকা সাধারন মানুষের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। আদালত এলাকা থেকে নিজ শিশু পুত্রকে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে জোর পূর্বক উঠিয়ে নেবার ঘটনা বিরল। অথচ আদালতে শিশু জনম বিজ্ঞ নির্বাহী হাকিমের জিজ্ঞাসাবাদে সে তার বাবার নির্যাতনের বর্ননা দিয়ে তার মা মন্টি রানীর কাছে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করে। আদালত শিশু পুত্রের বক্তব্য শুনে তার মায়ের কাছে দুগ্ধ পুষ্য শিশুকে রাখার নির্দেশ দিয়ে মামলাটি ডিসমিস করে দেন। শিশুটিকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে বিজ্ঞ আদালত,এডভোকেট রফিকুল ইসলাম খান ও কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি তদন্ত মুশফিক, এসঅাই নজরুলের মানবিক ভূমিকার প্রশংসা করেছেন শিশুটির মা মন্টি রানী। আদালতে শিশুটির পিতা জয় চন্দ্র দে ফৌজদারী কার্যবিধির ১০০ধারায় (মামলা নং১৪০/২০)যে মামলাটি করেন তা বিজ্ঞ আদালত ডিসমিস করে দেয়ায় শিশু জনম তার মায়ের কোলে এখন নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারবে।