কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন :
আকস্মিক শিলাবৃষ্টিতে নেত্রকোণার কলমাকান্দায় ব্যাপক রবি শস্যের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে । গত বুধবার (ফ্রেব্রুয়ারি) রাতে শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন উপজেলার রবিশস্য প্রায় শতাধিক কৃষক পরিবারা। এবছর উপজেলায় চাল কুমড়া, মিষ্টি লাউ, করলাসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ করেছিলেন কৃষকরা। কিন্তু অসময়ের এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা ।
গতকাল রাতে প্রায় ১০ মিনিটের ভারী বৃষ্টিপাত ও শিলাবৃষ্টিতে ইতিমধ্যেই নষ্ট হয়েছে লাউ, টমেটো, করলাসহ বিভিন্ন ফসলের চাষের ক্ষেত । আর তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে চাল কুমড়া, মিষ্টি লাউ, টমেটো সহ বিভিন্ন সবজিতে পচন ধরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষক শাহ আলম জানান বাজারে ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় হতাশ হয়ে এবছর লাভের আশায় আমি প্রায় পাঁচ একর জমিতে প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা খরচ করে রবিশস্য চাল কুমড়া, মিষ্টি লাউ, করলাসহ আবাদ করেছি। শিলাবৃষ্টির কারণে আমি এখন পথে বসে গেলাম।
অপর কৃষক ইদ্রিস আলী আক্ষেপ করে বলেন বলেন আমার আশা স্বপ্ন সব শেষ হয়ে গেল রে ভাই আমি এখন কেমনে চলবো।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন আমার ওয়ার্ডের নলছাপ্রা, কুয়ারপুর, বেলুয়াতলি এলাকায় স্থানীয় এমপি মানু মজুমদার এর আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে প্রায় ২৫টি কৃষি পরিবার শতাধিক একরে এ রবিশস্য চাষাবাদ শুরু করেন। আকস্মিক শিলাবৃষ্টিতে অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন এলাকাবাসী।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ফারুক আহমেদ জানিয়েছেন উপজেলায় শিলাবৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নাজিরপুর ইউনিয়নের নলছাপ্রা,কুয়ারপুর, বেলুয়াতলি, রহিমপুর, রামপুরসহ প্রায় ৭০ জন কৃষক । এতে প্রায় একশত ৫৩ একর রবিশস্য ফলন বেশী ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষক পরিবার। ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে মাঠে জরিপের কাজ চলছে পরে আরো বিস্তারিত জানানো হবে।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে পরিদর্শন করতে গিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল খালেক তালুকদার বলেন আমার বয়সে এ সময়ে শিলাবৃষ্টি আর দেখিনি। বুধবার রাতে শিলাবৃষ্টির শিলাগুলোে পরিদর্শনকালে আমি দেখতে পেলাম বিভিন্ন জমিতে ও পুকুরে জমাট বেঁধে থাকা অবস্থায়। প্রায় শতাধিক ক্ষতিগ্রস্ত রবিশস্য কৃষক পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।