পূর্বময় ডেস্কঃ
মেঘালয়ের প্রান্তে গারো পাহাড়ের কোল ঘেষা সীমান্ত জনপদ ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার ছায়া সুনিবিড় গ্রাম আসকিপাড়া,তারার গ্রাম বলে খ্যাত।গারো ভাষায় আসকি অর্থ তারা।হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী গারো জনপদের প্রবাদ পুরুষ হরিপদ রিছিলের নামানুসারে তাঁর নিজ ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত হলো হরিপদ রিছিল দাকবেওয়াল নক আরোবা বেওয়াল সানদিয়ানি বিয়াপ (হরিপদ রিছিল গীতরঙ্গ বিদ্যাপীঠ ও গবেষণা কেন্দ্র)। বিশেষত আদিবাসী জন গোষ্ঠীর ভাষা,সংস্কৃতি,গীত,বাদ্য,নৃত্য,চিত্রকলা
সহ সামগ্রিক গীতরঙ্গ অধ্যয়ন ও গবেষণার চর্চা কেন্দ্র হিসেবে এ প্রতিষ্ঠান নিরলস কাজ করতে বদ্ধপরিকর। হরিপ্রেম ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত স্বাধীন এ গীতরঙ্গ বিদ্যাপীঠ ও গবেষণা কেন্দ্রটির স্বপ্নময় যাত্রায় মুখ্য আলোচক ও উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট গীতরঙ্গ গবেষক ড. কামালউদ্দিন কবির,বিভাগীয় প্রধান,নাট্যকলা বিভাগ,জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ভদ্র ম্রং,চেয়ারম্যান,ট্রাইব্যাল ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশন। এ ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবি মতেন্দ্র মানকিন,গবেষক ও প্রাবন্ধিক জেমস জর্নেশ চিরান,সাহিত্যক ও ইতিহাসবেত্তা তর্পন
ঘাগ্রা,স্হানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এম সুরুজ মিয়া,বিশিষ্ট গবেষক,শিল্পী, ফোর্ডহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহাকারি অধ্যাপক তরু শাহরিয়ার স্বর্গ প্রমূখ।
গারো ও বাঙালী জন গোষ্ঠীর প্রায় তিন শতাধিক মানুষের প্রাণোচ্ছল উপস্থিতি আয়োজনকে পূর্ণতা দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে এখানে নাট্যকলা,চারুকলা, সংগীত, নৃত্যকলা,ভাষা অধ্যয়ন,গবেষণা অধ্যয়ন বিভাগে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হবে।এ বিদ্যায়তনে শিশুদের মাতৃভাষায় প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের নিমিত্তে নির্ভয় ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ভাষা অধ্যয়ন বিভাগের মাধ্যমে একটি বিশেষ কর্মসূচি বাস্তয়িত হবে।এতে করে বছরে একশত শিশু মাতৃভাষায় শিক্ষালাভের সুযোগ পাবে।
হরিপদ রিছিল গীতরঙ্গ বিদ্যাপীঠ ও গবেষণা কেন্দ্র,র পরিচালনায় থাকছে গারো নাট্যদল,প্রেমলতা নাটমন্দির,প্রতিভা চিসিম চিত্রশালা,আইজান গারো যাদুঘর।যেখানে প্রতিনিয়ত আদিবাসী গীতরঙ্গ চর্চা হবে।
হরিপদ রিছিলের পূণ্য স্মৃতির স্মরণে এ বিদ্যাপীঠ ও গবেষণা কেন্দ্রটিতে অবারিত গবেষণা, শিক্ষা,প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আদিবাসী জাতিসত্তার হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার বিশ্ব পরিসরে মেলে ধরাই মুল লক্ষ ও উদ্দেশ্য। দেশ বিদেশের শিল্পী,গবেষক, শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এ প্রতিষ্ঠান,তেমনটিই জানালেন কর্তৃপক্ষ। সৃজনশীল প্রতিটি মানুষ এর অংশীদার।