আসাদ তালুকদারঃ জেলা সদরের নাগড়া মহল্লার দিদারুল ইসলামের স্ত্রী রাবিয়া আক্তার পিংকী (২১)গত শনিবার (১২ অক্টোবর) রাতে বসতবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তার কোন সন্ধান না পেয়ে রবিবার (১৩ অক্টোবর) নেত্রকোণা মডেল থানায় দিদারুল ইসলাম একটি সাধারণ ডায়রী করেন।
পরদিন দিদারুলের মোবাইল ফোনে একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে পিংকী তাকে উদ্ধারের কথা বলে এসএমএস পাঠায়। পরে ওই নাম্বারে ফোন দিয়ে পিংকীর সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে একজন মহিলা সেখানে পিংকী নামে কেউ বলে জানান এবং ওই নাম্বারে আর ফোন না দেওয়ার কথা বলেন। দিদারুল নাম্বারটি নিয়ে নেত্রকোণা মডেল থানার পরিদর্শক(ওসি) তাজুল ইসলামের কাছে গেলে তিনি ওই নাম্বারে ফোন দিতে বলেন। আবারো ওসির সামনেই অপরিচিত নাম্বারটিতে ফোন দেয় দিদার। একপর্যায়ে নিজের পরিচয় না দিয়ে ওসি পিংকীর সম্পর্কে জানতে চান, উত্তরে ওই মহিলা জানান এখানে পিংকী নামে কেউ নেই, পুনরায় ফোন দিলে বড় ধরনের সমস্যা হবে বলে জানান মহিলা। একপর্যায়ে মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন,” দেখুন দিদারুলের স্ত্রী নিখোঁজ এবং সে এব্যাপারে নেত্রকোণা মডেল থানায় জিডিও করেছে। আপনার এই নাম্বার থেকে পিংকীর কথা বলে একটি এসএমএস এসেছে।” পরক্ষণেই ওপাশ থেকে মহিলা জানান, আপনি ওসি হন, এসপি হন আর ডিসি হন আমার কিছু যায় আসেনা। সাবধান! এ নাম্বারে ফোন দিবেন না, সমস্যা হবে।
এরপরদিন ওই নাম্বার থেকে পুনরায় পিংকী নিজে ফোন দিয়ে দিদারুলকে জানায় সে ময়মনসিংহ সদরের শিববাড়ী এলাকার একটি বাসায় আটক আছে। রাত এগারোটা নাগাদ শিবমন্দির এর সামনে সে পালিয়ে আসার চেষ্টা করবে, দিদারুল যেন সেখানে থাকে।
ফোনে কথোপকথনের বিষয়টি দিদারুল নেত্রকোণা মডেল থানাকে জানায়। পরে ময়মনসিংহ কোতয়ালী থানা পুলিশের সহযোগিতায় ময়মনসিংহ সদরের শিববাড়ী এলাকায় অবস্থান নেয় দিদারুল। রাত এগারোটা নাগাদ পিংকী সেখানে না পৌছলে অনেকটা আশাহত হয়ে নেত্রকোণায় ফিরে আসে দিদারুল।
পরদিন বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকালে আরেকটি অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন দেয় পিংকী। সে পালিয়ে নেত্রকোণার বাসে উঠেছে বলে জানায়। ফোন পেয়ে দিদারুল ও তার স্বজনরা নেত্রকোণা বাস স্ট্যান্ড থেকে পিংকীকে উদ্ধার করে।
পিংকী জানায়, তার স্বামীর বাসা থেকে তাকে অজ্ঞান করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন ময়মনসিংহের একটি বাসায় সে নিজেকে আবিষ্কার করে। সেখান থেকেই সে পালিয়ে এসেছে।
উল্লেখ্য, পিংকী ও দিদারুল একে অন্যকে ভালোবেসে গত ১৮ ই জুন ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক বিয়ে করে। কিন্তু পিংকীর পিতা হরে কৃষ্ণ সরকার তাদের বিয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নেত্রকোণা মডেল থানায় একটি অপহরণ মামলা করে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি রাবেয়া আক্তার পিংকীর।