স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহ শহরে বিজয় দশমীতে নিহত শাওনের প্রধান আসামীসহ অন্যান্য জড়িতদের গ্রেফতার করেছে যৌথভাবে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও কোতোয়ালী থানা পুলিশ। আজ সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তা সাংবাদিকদের জানান জেলা পুলিশসুপার শাহ মো: আবিদ হোসেন।
এসময় তিনি জানান, গত ৮/১০/১৯ তারিখ বিজয়া দশমীতে গোলপুকুরপাড় প্রাত সংঘ পূজা মন্ডপের সামনে কিশোর বয়সের ছেলেদের তিনটি বহিরাগত (মুন্না গ্রুপ,আবির গ্রুপ ও মাহিন গ্রুপ) গ্রুপের মধ্যে ছেলেরা নাচানাচি করছিল। সেখানে ছেলেদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে তিনটি গ্রুপের মধ্যে ত্রিমুখী মারপিট হয়। মারপিটের মধ্যেই মাহিন তার পকেটে থাকা সুইচ গিয়ার দিয়ে ভিকটিম শাওনের বুকে মারাত্বক আঘাত করে। রক্তাক্ত অবস্থায় শাওনকে হাসপাতালে নিলে সে মারা যায়। নিহত শাওন ময়মনসিংহ কমার্স কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র ছিল বলে জানা যায়।
আটককৃত আসামীদের মধ্যে প্রধান আসামী আর কে মিশন রোডের সেম্মত আলীর ছেলে মাহফুজুল ইসলাম মাহিন (১৮) স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে এবং মাহিনকে নিয়ে ডিবি পুলিশ যে দোকান থেকে সুইজ গিয়ার কেনা হয়েছে সে দোকানে অভিযান চালিয়েছে। চকবাজারের মা স্টোরের দোকানদার মো: ইসলাম উদ্দিনও চাকু বিক্রির কথা স্বীকার করেছে।
অন্যান্য আটককৃতরা হচ্ছে নওমহল পানির ট্যাংকির আশিষ চন্দ্র দে এর ছেলে আকাশ চন্দ্র দে(১৫), আর কে মিশন রোডের মো: ফরিদ উদ্দিনের ছেলে সারোয়ার উদ্দিন হৃদয়(১৮), বাঘমারার আছলামের ছেলে ফারদিন (১৯), হারুন অর রশীদের ছেলে সাজ্জাদ(১৯), চরপাড়া কপিক্ষেতের মৃত হোসেনের ছেলে মুন্না(১৯), বাউন্ডারি রোডের সিদ্দিকুল এর ছেলে রাকিব(১৯)।
এ ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ ৭/১০/১৯ তারিখ নবমীতে এই গ্রুপগুলোই পন্ডিতপাড়া পূজামন্ডপে গিয়ে নাচানাচি করার সময় মেয়েদের গায়ের উপর পড়ে যায়। এ নিয়ে ওই এলাকার ছেলেগুলো ওদেরকে ভালোভাবে বুঝিয়ে পাঠিয়ে দেয়। এর পরের দিন তারা গোলপুকুরপাড় পূজামন্ডপে এ ধরনের নৃসংস হত্যাকান্ড চালায়।
কিশোর বয়সের এই ছেলেগুলো কি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য কি না সাংবাদিকের এ প্রশ্নের জবাবে জেলা পুলিশসুপার এটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা উল্লেখ করেন। পুজোতে মদের দোকানগুলোতে পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু তাদের নজর এড়িয়েও মদ বিক্রি হয়েছে এবং তা কিশোরদের হাতে গিয়ে পৌছেছে। ফলে মদ্যপ অবস্থায় উগ্র নাচানাচিতে এ ধরনের হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে।
প্রতিমা বিকেল ৪.০০ টার মধ্যে বিসর্জনের কথা বললেও পরে তা ৮.০০ টা পর্যন্ত করা হয়। দেরিতে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতিকালে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশসুপার বলেন, শহরের কোথাও যদি সুইজগিয়ারসহ অন্যান্য ধারালো চাকু বিক্রি করা হয় তবে তা সাথে সাথে পুলিশকে তথ্য দিতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে দুপুরে শাওন হত্যার বিচার চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে তার সহপাঠীরা।