ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দাবি করা দুই ছাত্রলীগ নেতার নাম একই। নাজমুল হোসেন নামের দুই ছাত্রলীগ নেতা এ দাবি করছে। আর এই পদ নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। দুইজনই স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজেদের সভাপতি বলে দাবি করছে। তারা কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের পূর্বের কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি দাবি করছে।
সভাপতি দাবি করা দুই নাজমুল হোসেনের একজনের বাড়ি উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে ও অন্যজনের বাড়ি মল্লিকপুর গ্রামে।
জানা গেছে, গত ৬ জুলাই রাতে ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের প্যাডে সভাপতি রানা হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নাজমুল হাসান নাজিমকে সভাপতি, মনির হোসেন সুমনকে সাধারণ সম্পাদক ও জাবেদ হোসেন জুয়েলকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করেন। এর ৪ দিনের মাথায় গত ১০ জুলাই সভাপতি নাজমুল হাসান নাজিমকে গঠনতন্ত্রের বয়সসীমা অতিক্রম ও সাংগঠনিক সম্পাদক জাবেদ হোসেন জুয়েলের বিবাহের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের দুইজনকে অব্যহতি দেওয়া হয়। একই প্যাডে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি নাজমুল হোসেনকে সভাপতি ও মোঃ রিয়াজউদ্দিনকে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর নাজমুল হোসেন নামের দুই ছাত্রলীগ নেতা নিজেদের সভাপতি ও সাবেক সহ-সভাপতি বলে দাবি করে।
এদিকে ৬ জুলাই ঘোষিত কমিটি থেকে সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদককে অব্যাহতি দেওয়ায় বিক্ষোভ শুরু করেছে ছাত্রলীগের একটি পক্ষ। ১০ জুলাই রাতে কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই বিক্ষোভ শুরু করেছে ছাত্রলীগের একটি পক্ষ। প্রতিদিন সকাল-বিকাল শহরে বিক্ষোভ মিছিল করছে। এছাড়া ১১ জুলাই সকালে আগের কমিটি বহালের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে তারা। বিক্ষোভের কারণে নতুন কমিটির নেতারা শহরে দেখা যাচ্ছে না।
নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ৩০ ডিসেম্বরের আগে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ দুইটি গ্রুপে বিভক্ত ছিল। মনোনয়ন নিয়ে দলের শীর্ষ দুইনেতার কারণে। ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি/সম্পাদক ইসরাইল হোসেনকে সভাপতি ও কাজী রিপনকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেন। সাবেক সভাপতি ইসরাইল হোসেন একটি পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন ও সাধারণ সম্পাদক কাজী রিপন অন্য একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিতেন। কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীও আলাদাভাবে পালন করা হতো। এই কমিটিতে ১০ জনকে সহ-সভাপতি পদ দেওয়া হয়। এর মধ্যে নাজমুল হোসেন নামে সহ-সভাপতি পদে একজনকে রাখা হয়। এক নাজমুল হোসেন ছিল সভাপতি ইসরাইল হোসেনের গ্রুপের, অন্য নাজমুল হোসেন সাধারণ সম্পাদক কাজী রিপন গ্রুপের। পৃথক কর্মসূচীতে দুইজনই কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পরিচয় দিতেন।
সভাপতি দাবি করা মনোহরপুর গ্রামের নাজমুল হোসেন বলেন, তিনিই গত কমিটির সহ-সভাপতি। উপজেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি আগের কমিটির সহ-সভাপতি দাবি করে বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে যথেষ্ঠ তথ্য প্রমাণ আছে এবং আমিই সদ্য ঘোষিত কমিটির সভাপতি।
অন্যজন সভাপতি দাবি করা মল্লিকপুর গ্রামের নাজমুল হোসেনের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইসরাইল হোসেন বলেন, ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই ঘোষিত কমিটিতে তাকে সভাপতি ও কাজী রিপনকে সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে কমিটি দেওয়া হয়। এই কমিটিতে নাজমুল হোসেন নামে একজন সহ-সভাপতি ছিল। গ্রুপিংয়ের কারণে দুই নাজমুলই নিজেদের সহ-সভাপতি পরিচয় দিত। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জেলা কমিটিকে অবহিত করা হলেও তখন কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।